প্রশান্তিকা ডেস্ক: ‘সুন্দরের বন্ধন নিষ্ঠুরের হাতে, ঘুচাবে কে?’ স্বপ্ন ও আকাঙ্খার বন্ধনমুক্তির প্রত্যাশায়, স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীর বছরে, ১৯৯৬ সালের ১৬ জানুয়ারি, আত্মপ্রকাশ করে ‘অন্যদিন’। সময় কী বিস্ময়কর! কালের সওয়ারি ‘অন্যদিন’ পৌঁছে গেছে প্রকাশনার রজতজয়ন্তীতে, পঁচিশ বছর পূর্ণ হলো পথচলার।

বিগত পঁচিশ বছরে অন্যদিন-এর অর্জন হলো- ঈদসংখ্যা, বৈশাখী সংখ্যা, বিশ্বকাপ অ্যালবাম, ঈদ ফ্যাশন অ্যালবাম, বৈশাখী ফ্যাশন অ্যালবাম, বই সংখ্যা, ভ্রমণ সংখ্যা, স্মরণ সংখ্যাসহ বিশেষ প্রকাশনা ও নানা কার্যক্রম। যেমন: ফ্যাশন ইভেন্ট, ইমপ্রেস-অন্যদিন পারফরমেন্স অ্যাওয়ার্ড, বাংলা সাহিত্যের প্রয়াত লেখকদের শিকড় সন্ধান, এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ইত্যাদি। এ থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে কালস্রোতে সবই হারিয়ে যায় নি। দিনের আলোর গভীরে লুকায়িত তারার মতোই কিছু বিষয় রয়ে গেছে, যা অমলিন ও অক্ষয়।
অন্যদিন-এর রজতজয়ন্তী উপলক্ষে গত ১২ মার্চ, শুক্রবার, সন্ধ্যায় ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে একটি প্রীতিসম্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।

এই আয়োজনে সম্মানিত অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এদিন অন্যদিন-এর উপদেষ্টা সম্পাদক হিসেবে স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে বরণ করে নেন অন্যদিন সম্পাদক। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন অন্যদিন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন অনুষ্ঠানের সহযোগী এডিসন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া শাহিদ এবং অন্যদিন-এর অনলাইন ভার্সনের কারিগরি সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইবিএস-এর পরিচালক এনামুল হক।
অনুষ্ঠানটির সূচনা হয় পূজা সেনগুপ্ত এবং তার দলের নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে। অতঃপর প্রদর্শিত হয় একটি তথ্যচিত্র, যেখানে তুলে ধরা হয় অন্যদিন-এর পঁচিশ বছরের পথচলা। এটির চিত্রনাট্যকার মোমিন রহমান এবং নির্মাতা তুষার তুহিন। সম্মাননা প্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা-স্মারক তুলে দেন দেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং রাজনীতির জগতের স্বনামধন্য মানুষেরা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মাননীয় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রথিতযশা কথাসাহিত্যিক হাসনাত আবদুল হাই, সেলিনা হোসেন, স্বনামধন্য গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের নায়িকা সুজাতা, সুরকার শেখ সাদী খান, খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, স্বনামধন্য অভিনেত্রী এবং বাচসাস-এর সভাপতি ফাল্গুনী হামিদ, কবি ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।

প্রীতিসম্মিলনীতে ‘সমৃদ্ধির বাংলাদেশ’ এবং ‘সম্ভাবনার বাংলাদেশ’ শিরোনামে নানা ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠিত এবং প্রতিশ্রুতিশীল ১৩ জন ব্যক্তিকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। একই আয়োজনে নতুন আঙ্গিকে আত্মপ্রকাশ করে পাক্ষিক অন্যদিন’ এর অনলাইন ভার্সন। ‘সমৃদ্ধির বাংলাদেশ’ শিরোনামে সম্মাননা লাভ করেন- আহমদ রফিক (ভাষা ও সাহিত্য); আসাদুজ্জামান নূর (অভিনয়); মৌসুমী (অভিনয়, চলচ্চিত্র); সৈয়দ আবদুল হাদী (সংগীত); রকিবুল হাসান (ক্রিকেট); শাহাবুদ্দিন আহমেদ (চিত্রকলা); শাইখ সিরাজ (কৃষি উন্নয়ন ও কৃষি সাংবাদিকতা)। অন্যদিকে ‘সম্ভাবনার বাংলাদেশ’ শিরোনামে এই সম্মাননা লাভ করেন- মুশফিকুর রহিম (ক্রিকেট); সাদাত হোসাইন (কথাসাহিত্য); আয়মান সাদিক (অনলাইন এডুকেশন); সোমনুর মনির কোনাল (সংগীত); সিয়াম আহমেদ (অভিনয়, চলচ্চিত্র); প্রার্থনা ফারদিন দীঘি (নবাগত, চলচ্চিত্র)।
উল্লেখ্য, এই প্রীতিসম্মিলনীতে উপস্থিত ছিলেন দেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের গুণীজনেরা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন- আশরাফ আহমদ, ফরিদ কবির, অরুণ চৌধুরী, চয়নিকা চৌধুরী, মইনুদ্দীন খালেদ, আমীরুল ইসলাম, আসলাম সানি, আনজীর লিটন, মুজতবা আহমেদ মুরশেদ, সুমন্ত আসলাম, তারিক সুজাত, অদিতি ফাল্গুনী, স্বকৃত নোমান, মোজাফ্ফর হোসেনসহ আরও অনেকে।