প্রশান্তিকা ডেস্ক: একটানা বাহাত্তর ঘন্টা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে চির বিদায় নিলেন অভিনেতা ও নির্মাতা হুমায়ূন সাধু। নির্মাতা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী নিশ্চিত করেছেন, গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন( ইন্না…রাজেউন)। আজ বাদ জু’মা সাধুর নামাজে জানাযা হবে। এরপর তাঁকে সমাহিত করা হবে।
তিনি মস্তিস্কে স্ট্রোক ও রক্তক্ষরণ নিয়ে স্কয়ারে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসকেরা ৭২ ঘন্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। হাসপাতালে সাধুর পরিবারের অনুমতি সাপেক্ষে তাঁর কৃত্তিম লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হয়।
বিডিনিউজ২৪ জানায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর হুমায়ূন সাধুর প্রথম ব্রেন স্ট্রোক হয়। এরপর হুমায়ূন সাধুকে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশের পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে ১৩ অক্টোবর রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে স্থানান্তর করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) তাকে বিদেশে নিয়ে অস্ত্রোপচারেরও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রোববার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে হঠাৎ সাধুর দ্বিতীয় ব্রেন স্ট্রোক হয়। এরপরই তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন বৃহস্পতিবার তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

হুমায়ূন সাধুকে যারা চেনেন তারা এক নিমিষেই তাঁর অভিনীত ও নির্দেশিত ‘ঊন মানুষ’ ও ‘চিকন পিনের চার্জার’ নাটকের কথা স্মরণ করবেন। ফারুকীর হাত ধরে শোবিজে হুমায়ূন সাধুর পথ চলা শুরু। অভিনয় দিয়ে দর্শকদের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন, নাটক নির্মাণ করেও প্রশংসিত তিনি। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ সিনেমা দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু হয় তার। অভিনয়ের সাথে সাথে তিনি চমৎকার লিখতেনও। গত বইমেলায় তাঁর প্রথম বই ‘ননাই’ প্রকাশিত হয়েছে।

এক শোকবার্তায় ফারুকী বলেন, “তুই সময় দিছিলি আমাদের তৈরি হওয়ার। আমরা হয়তো তৈরিও হইছিলাম। কিন্তু মানুষ বোধ হয় কখনোই প্রিয়জনের বিদায়ের জন্য তৈরি হইতে পারে না রে, সাধু!”
কবি, গীতিকার, গায়ক ও সাংবাদিক লুৎফর হাসান বলেন, “বইমেলায় ২৮ দিনের ১৫ দিন আমরা একসাথে ছিলাম। Whomayun Sadhu ছাড়া বইমেলা আমাদের অশান্তির লাগবে। সাধু আর ফিরবেন না। প্রতি রাতের মেসেঞ্জারে হাসতে হাসতে উড়ে যাওয়া, আমাদের আর ফিরবে না। সাধু কই চলে গেলেন?” সাধুর কাজের সাথে জড়িত অসংখ্য বন্ধু বান্ধব এবং ভক্তরা সাধুর এই চলে যাওয়ায় শোক জানিয়েছেন।