প্রশান্তিকা রিপোর্ট: সিডনিবাসী জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও মডেল এবার অভিনয় করলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার একটি শর্টফিল্মে। ছবিটির নাম ‘রোপন’। সিডনি’র জনপ্রিয় রেডিও ও অনলাইন গানের প্রতিষ্ঠান ‘গান বাকশো’র প্রযোজনায় শর্টফিল্মটি বানিয়েছেন সুমন চক্রবর্তী। ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারিতে প্রবাস প্রজন্মকে একুশের চেতনায় উদ্দীপ্ত করতেই এই শর্টফিল্মটি বানানো হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন নাটক এবং অস্ট্রেলিয়ার মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় কাজ করে তুমুল জনপ্রিয় রুপন্তী আকিদ মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। মায়ের ভূমিকায় গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি রোল করেছেন সুতপা বড়ুয়া। ৬ মিনিট দৈর্ঘের শর্টফিল্মটি ইউটিউবে মাত্র ক’দিনেই এক হাজারের বেশি দর্শক দেখেছেন।ছবিটির কিছু অংশ শুটিং করা হয়েছে আ্যশফিল্ডের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতি সৌধে।

এরকম একটি স্থির এবং মননশীল চরিত্রে রূপদান কেনো ? প্রশ্নটি করা হলে রুপন্তী বলেন, রোপনে কাজটি করে আমি অনেক খুশি। বাংলা বা বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করতে আমি সবসময় আগ্রহী। রোপনের মেসেজটি আমাদের প্রবাস জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছোটবেলা থেকেই আমাদের নিয়ে মজা করে বলা হয়, আমরা ইংরেজী সুরে বা হাফ ইংলিশ হাফ বাংলা বা এককথায় ‘বাংলিশে’ কথা বলি। খুব সহজেই আমরা এটা পরিহার করতে পারি। তার জন্য প্রথমেই এগিয়ে আসতে হবে পরিবারকে। আমাদের পরিবার বা মা বাবা ছোটবেলা থেকে যদি আরেকটু সচেতন হয় তাহলে আমরাও বাংলাকে সঠিক ভাবে বলতে পারি। রুপন্তী আরও বলেন, সেক্ষেত্রে বাবা মা’দের কখনই জোর করে বাংলা শেখানো উচিৎ নয়। বাংলার বিভিন্ন রূপকথা যেমন ঠাকুরমার ঝুলি বা এজাতীয় মজার গল্পগুলো শিশু বয়স থেকেই শোনানো উচিৎ। সঙ্গে সঙ্গে নাচ, গান, আবৃত্তি বা বাংলা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সাথে শিশুদের যোগসূত্র তৈরি করতে হবে।
বাংলাদেশের বেশ ক’টি নাটকে অভিনয় করে রূপন্তী ইতোমধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। মাস দুয়েক আগে ছুটির সময়েও বাংলাদেশ সফরে গিয়েও অনেক কাজ করে এসেছেন। সিডনির একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করে চাকুরী করছেন রুপন্তী। পাশাপাশি নাটক ও মডেলিংয়েও নিয়মিত।
রোপন ছবিটি শুরু হয় পাকিস্তানের শাসক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র সেই কুখ্যাত ঘোষণা , স্টেট ল্যাংগুয়েজ উইল বি গোয়িং টুবি উর্দু এন্ড নো আদার ল্যাংগুয়েজস..’ দিয়ে। রোপনে দেখানো হয় প্রবাসের বাঙালী প্রজন্ম কিভাবে মহান একুশ এবং তাকে ঘিরে শহীদদের প্রাণ বিসর্জনের ইতিহাসও জানেনা। ছবির আবহ সঙ্গীতে বাঁশিতে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি’ গান এবং শুভজিৎ ভৌমিকের চমৎকার আবৃত্তি ছিলো হৃদয়গ্রাহী।
রোপন শর্টফিল্মটিতে রুপন্তী ও সুতপা বড়ুয়া ছাড়া আরও কাজ করেছেন শুভজিৎ ভৌমিক, কস্তুরিকা ভট্টাচার্য, প্রিতম দাশগুপ্ত, প্রজ্ঞা ভট্টাচার্য, সৌর পাণ্ডে, আবিদা রুচি প্রমুখ।