প্রশান্তিকা ডেস্ক: করোনা ভাইরাস থেকে সংক্রমণ রোধে আজ থেকে অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক বিমান এবং নৌবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কোন বিদেশী বা নন অস্ট্রেলীয় নাগরিক আজ রাত ৯টার পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ঢুকতে পারবেনা। অন্যদিকে কোন অস্ট্রেলীয় নাগরিককে বিদেশ ভ্রমণেও নিষেধ করা হয়েছে। গতকাল জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আজ দিনের কোন এক সময়ে অস্ট্রেলিয়া এই জরুরী অবস্থার বাইরে আরেক ধাপ এগিয়ে লকড্ ডাউন করার ঘোষণাও দিতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
গতকাল রাতে ৮১ বছর বয়সী আরও একজন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি একজন বৃদ্ধা নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের বাসিন্দা। এ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা ৭ জন হলো। সিডনি মর্নিং হেরাল্ড সূত্রে জানা গেছে, গত কাল আরও ৪৬ জন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৫৩ জনে।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী মরিসন বলেন, বিদেশ থেকে আসা সকল অস্ট্রেলিয়ান, স্থায়ী বাসিন্দা (permanent resident) এবং তাদের সরাসরি পরিবারের সদস্যরা এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। তবে তাদেরকে ১৪ দিনের সেল্ফ আইসোলেশনে যেতে হবে।

গতকাল সিডনির পোর্ট ম্যাকুয়ারী স্কুলের এক ছাত্রের কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের খবরে স্কুলটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
স্মল বিজনেস ওনারদের ব্যবসায় ক্ষতির কারনে ব্যাংকগুলো মর্টগেজ পেমেন্ট স্থগিত ঘোষণা করছে। ইতোমধ্যে ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ব্যাংক(NAB) ছয়মাসের পেমেন্ট বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যান্য সকল ব্যাংকও ন্যাবকে অনুসরণ করবে বলে অর্থনীতিবীদরা ধারণা করছে। কেননা লকডাউন বা জরুরী অবস্থার কারনে তারা কাজে যেতে পারছেনা বা ব্যবসা খোলা রাখতে পারছেনা।
গতকাল চীন এক অস্ট্রেলীয় নাগরিককে সেদেশে ঢোকার মুহূর্তে ফেরত পাঠিয়েছে। বেইজিং পাবলিক সিকিউরিটি ব্যুরো এক বার্তায় জানিয়েছে, চীন সফর ইচ্ছুক ওই নারী দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইন পালন করেনি, তাই তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ এর উৎপত্তি চীনে হলেও তাদের কঠোর পদক্ষেপের কারনে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এমনকি উহানে নতুন করে আর কেউ আক্রান্ত হচ্ছেনা। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা চীনকে ছাড়িয়ে ইতালীতে বেশি হচ্ছে।

ইতালী সর্বশেষ:
ইতালিতে নতুন করে ২৪ ঘন্টায় ৪২৭ জনের মৃত্যুতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪০৫ জনে। চীনে মোট মৃত ৩ হাজার ২৪৫ জন। একদিনে সর্বোচ্চ মৃতের সংখ্যাও এখন ইতালিতে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।
ইতালিতে গত ১২ মার্চ দেশজুড়ে ‘লকডাউন’ করা হয়েছে। ২৫ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন কার্যকর থাকলেও এ সময় আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ইতালি সরকার। ইতালির বাসিন্দাদের ঘরে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপের পরেও দেশটিতে এই মহামারি ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রতিদিন চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, একইভাবে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। চীনে এ পর্যন্ত প্রায় ৮১ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আর ইতালিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪১ হাজার ৩৫ জন।
বাংলাদেশ:
বাংলাদেশে নতুন করে তিন জন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে। এপর্যন্ত ৭০ বছর বয়সী একজনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সভা, সমাবেশ, ধর্মীয় সভা এমনকি মসজিদের নামাজে বিশেষ ব্যবস্থায় করার নির্দেশ দিয়েছে, যাতে বেশি মানুষের সমাগম না হয়।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এই ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজারের বেশি মানুষের।