আজাদ মাহবুবুল-এর দু’টি কবিতা 

  
    

এক চিলতে বিয়োগ-সন্ন্যাসী বনে এক নব্য জন্মের লয়

কিছু কিচু পৃষ্ঠা শব্দের কণ্ঠে এখনো পাহারা দেয়,
বেতাল ঢেউয়ের পতন শেষে তীরে বসে থাকা ঝিনুকের বাসর আবার শুরু হয়।
অপরূপ মধুলয়ে মুগ্ধ জীবন ডুবসাঁতারে স্বপ্নের পাল ধরে বয়ে চলে,
কখনো কি ভেবেছো তুমি আমি জলের কতটা অতল ছুঁয়েছি,
জানিনা, শুধু জল ভেবেই শুরু থেকে শেষ আকাশে
ঘুড়ির পাখায় মেঘ টেনেছি।
কোনদিন ভেবে দেখিনি বোবা দেয়ালে ঘিরে থাকা হৃদয় ঘুড়ির ছেঁড়া সুতো কোথায়, হাহাকারের নাটাই পরে আছে অবাক এক শূন্যতায়।
আমরা কেউ পারিনি এই শুন্যতার কাঁচটাকে ধুসর থেকে উসর উচ্ছ্বাসের রাজসিক শরীরের আবরণ দিতে।
অন্তহীন বারান্দায় শেষ রাতের মশাল সোনালী শিখায় ইতিহাসের ঋতুমতী পৃষ্ঠাগুলো সযত্নে পোড়ায়, তুমিও পোড় আর আমি ও। আমরা পুড়ছি, চোখের জলে আগুন, শীতলতা খোঁজে প্রেম।
মনবিহারে আবার হয়তো এক মহা প্রেম আসবে। আমি কাঁদছি সন্ন্যাসী চাঁদের আলোয়, অঝোরে কান্না, শব্দ বিলীন করে আবারো এক নতুন ভোর আঁকছি নিশ্বাসের প্রহরে।
যেন এক চিলতে বিয়োগ-সন্ন্যাসী বনে এক নব্য জন্ম লয়ের অপেক্ষা।

বাতাসে বিভোর বাঁধে প্রাণ

এখানে পড়ে আছে ঝিল পদ্ম, আগের মতই সিঁথিতে,
শ্যাওলা কাঁথার গান, জুড়ে আছে শান বাঁধা আঙিনার বসতে।
ঝরা পাতা জলের গান, মিলেমিশে, ছোঁয় আসমান,
অতল পাখির করুন ঠোঁটে, এখনো তরুলতা ঘর বুনে, সুনসান।
ধুপ সন্ধ্যার রাখি বাতাসে বিভোর বাধে প্রাণ,
আজ শনিবার হালের খাতায়, হলুদিয়া পালকের ধ্যান।
ভোরের বর্ণ দূর্বার পরিচয়ে ক্ষেতের আল ধরে
দুই শালিকের মান, পুরনো চালতা গাছে, গুন গুন তান করে।
বার বদলে যাচ্ছে রাতের শেষে, রবি সোম মঙ্গল,
নদীর তীরে আশ্বিনের গল্প, মায়া কাঁখে খড়ের জঙ্গল।
এখানে এখনো শ্যাওলা বৈঠার পাটাতনে,
মাঝ রাতে কুপি বাতি – নয়ন জুড়ানো আলাপনে।
আধা শোয়া খোলা ডিঙ্গি, মেঘ ফোঁকরে ভাসে চাঁদ,
জড়িয়েছে আঁচলের খাঁদে, ভালোবাসা অঙ্গেতে নিখাদ।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments