আজো তিনি বেঁচে আছেন, হাজারো পাঠকের হৃদয়ে

  
    

বাংলাদেশের সাহিত্যে প্রবাদপুরুষ হুমায়ুন আহমেদ। যার সাহিত্য রচনায় পাঠক মুগ্ধ থেকেছে যুগের পর যুগ। বেঁচে থাকতে হুমায়ুন আহমেদের জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গস্পশীর্ এবং তার মৃত্যুর পরেও তার জনপ্রিয়তা এতটুকুও কমেনি। বরং তাকে জানার আগ্রহ আরও বেড়েছে। ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশিত হয় তখনই বোঝা গিয়েছিল কথাসাহিত্যের বিশাল জগতে তিনি অল্প সময়ের জন্য আসেননি, তিনি এসেছেন রাজত্ব করতে। তিনি সাহিত্যের ভুবনে ছিলেন সম্রাট। তার পাঠকশ্রেণি ছিল আলাদা। যারা গোগ্রাসে তার লেখা পড়তো। অবশ্য তার সমালোচক শ্রেণিরও অভাব ছিল না। সে সমালোচনা তাকে আরও উঁচুতে পৌছে দিয়েছে। হুমায়ুন আহমেদের লজিক ও অ্যান্টিলজিক চরিত্র হিমু ও মিসির আলী চরিত্র দুটি আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয়। এ চরিত্র নিয়েই দেশে বহু আলোচনা হয়েছে। বাস্তবতার সঙ্গে মেলানোর প্রচেষ্টাও করা হয়েছে। অনেক সময় চরিত্র দুটির স্রষ্টাকেই এই চরিত্রের সত্যিকারের মানুষ বলে মনে হয়েছে। কোনো কোনো লেখকের বই পাঠক গোগ্রাসে গেলে আবার কোনো কোনো বই পাঠক গোগ্রাসে না গিললেও তার গভীরতা পাঠককুলকে আকৃষ্ট করে। হুমায়ুন আহমেদ বাংলাদেশে যে এক তুমুল জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ছিলেন সে কথা দ্বিধাহীনভাবেই বলা যায়। তার মৃত্যুর পরেও বইমেলায় তার বইয়ের বিক্রি ছিল প্রচুর। তিনি কতটা জনপ্রিয় ছিলেন তা জানতে হলে তার কমর্ এবং সৃষ্টির দিকে তাকাতে হবে। রবীন্দ্রনাথের পর যেমন বাংলা সাহিত্য বহু বছর তার ধারার স্রোতে প্রবাহিত হয়েছে তেমনি হুমায়ুন আহমেদের লেখনীর ধারায় আজকের লেখনী চলে। কত বছর চলবে তা ভবিষ্যৎই বলবে। তার উপন্যাসের স্বকীয়তা, সহজ স্বাভাবিকভাবে জটিল তত্ত¡গুলোর বণর্না দিয়ে যাওয়া, চরিত্রের তুমুল জনপ্রিয়তা কেবল তার লেখনীতেই সাজে।

হুমায়ুন আহমেদের স্পর্শ  যেন সফলতার অন্য নাম। সহজ, সরল সাবলীল ভাষায় পাঠককে গল্পের ভেতর টেনে নেয়ার যে ক্ষমতা তা তার ছিল। তিনি যেখানেই হাত দিয়েছেন সেখানেই সফল হয়েছেন। বাদশা নামদার পরে মনে হয়েছে ইতিহাসের এমন চমৎকার একটি বিষয় গল্পের মাধ্যমে জানা যায় না পড়লে বিশ্বাস করাই কষ্ট। আবার দেয়াল পরে নিজ দেশের ইতিহাসের অনেকখানি আমরা জানতে পেরেছি। ছোটবেলায় হুমায়ুন আহমেদ ভালোবাসতে সবুজ অরণ্য, বৃষ্টি আর টিনের চালে সেই ছন্দ, বৃষ্টির পানিতে ভেজা। তার তৈরি নুহাশ পল্লীতে তিনি সেভাইে সাজিয়েছিলেন প্রকৃতিকে। তার লেখার বহু বণর্নায় সে সব পাওয়া যায়। বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি ঔপন্যাসিকদের তিনি অন্যতম।
১৩ নভেম্বর তার জন্মবার্ষিকী। আজো হাজরো পাঠকের হৃদয়ে তিনি স্থান নিয়ে বসে আছেন, থাকবেন চিরকাল।
প্রশান্তিকা পরিবারের পক্ষ থেকে লেখকের জন্মদিনে হৃদয়ের অন্তস্তল থেকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। 

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments