আদার ব্যাপারী যখন জাহাজের খোঁজে – এস এম আলী আকবর

  
    

দ্বিতীয় পর্ব

দ্বিতীয় পর্বের পর

‘আদার ব্যাপারী’ যখন জাহাজের খোঁজে-২

(A grave attempt to portray ‘the largest canvas’ from rock-bottom-2)

‘আদার ব্যাপারী’-১ এ বিশ্বে বিরাজমান সকল মানবিক বিপর্যয়সহ খাদের কিনারে দন্ডায়মান বিশাল এক ‘মানব গুটি’র (বাংলাদেশ!) বিষয়ে আলোকপাত এবং দুর্বিসহ বিশ্ব সমস্যাবলী সমাধানের সম্ভাব্য পটভুমির উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে বিরান পড়ে থাকা অফুরন্ত পতিত ভুমির সহিত নগন্য সংখ্যক (২%!) ভিটে-মাটি বঞ্চিতদের ব্যাপক বৈসাদৃশ্যগত বিষয়াদির আনুপাতিক তুলনা সহ, ভারসাম্যহীন বিশ্বের অগাধ সম্পদরাজীর অতি ক্ষুদ্রাংশ বিশেষ ব্যাবস্থাপনায় ব্যবহার করেই, সেই দুর্ভাগাদেরকে দুর্বিসহ জুলুম, নির্যাতন ও ক্ষুধার কবল হতে মুক্ত করা সম্ভব মর্মে, ইঙ্গিত তথা আকাঙ্খা ব্যক্ত করা হয়েছে।

সার্বিক আঙ্গিকে মানব ব্যবস্থাপনা একটি জটিল বিষয় সত্য। তবে জাগতিক কাড়াকাড়ি থেকে দুরে থাকতে পারা বিপুল সংখ্যক নির্মোহ ও সচেতন বুদ্ধিজীবীগণ প্রস্তাবিত মানব ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় এগিয়ে এলে, অনেক ফলপ্রসু ফয়সালা বেড় করতে সক্ষম হবেন নিশ্চয়! সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সুপরিচিত ও দরিদ্র-জনবান্ধব বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী ডঃ মোঃ ইউনুস, স্যার ফজলে হোসেন আবেদ ও সাইখ সিরাজ বর্গের মত সমাজ সংস্কারক গণসহ দেশপ্রেমিক বোদ্ধাগণ এবং বিশ্ব-কর্মক্ষেত্রে আলোরণ সৃষ্টিকারী, বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী মেধাবী তরুণরা বিষয়টির প্রতি আগ্রহী হলে আরো সহজতর সমাধান, হয়তো বেড়িয়ে আসতোই!
তবে সরল পথ প্রত্যাশী পুরকৌশলী (আদার ব্যাপারী!) তার নিজস্ব বস্তুগত ধারণায় প্রকল্পিত (Hypothetic) সহজ সমাধান নিবেদনে, দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে জানাতে চায়-

পৃথিবীর বিরান ভুমি অংশের মাত্র ৩% চাষযোগ্য পাওয়া গেলে, সেখানেই ঐ ১০/১৫ কোটি উদ্বৃত্ত হতভাগাদের সকলকে শস্যদানা উৎপাদনমূলক পরিবেশ বান্ধব কৃষি প্রকল্পে খাটিয়ে কেবল সেই দুুর্ভাগাদের সংস্থান নয়, চরম খাদ্য ঘাটতির দুনিয়াকে বছরে বিলিয়ন টন অতিরিক্ত শষ্যদানা উপহার প্রদান, আসলেই হাতের নাগালে!

পূর্বল্লেখিত প্রায় অর্ধ-দুনিয়াব্যাপী পরিত্যক্ত ভুমির মাত্র ৫% অংশ চাষ-বাস উপযোগী পাওয়া গেলে, সেই ‘চাষ ল্যান্ড’ অংশেরই পরিমাণ দাঁড়াতো প্রায় ২০ টি বাংলাদেশের সমান (১০/১১ লক্ষ বর্গমাইল)! যা চাষের জন্য ন্যুনতম ২০/২২ কোটি কৃষক এবং তাদের নিরাপত্তা, যোগাযোগ, বাজার ও প্রশাসন সংশ্লিষ্ট আরো ৫/৬ কোটিসহ মোট ২৫/৩০ কোটি কর্মজীবীর প্রয়োজন হত। অথচ, এ মুহুর্তে বিশ্বে উদ্বৃত্ত মানুষের সংখ্যাই মাত্র ১০/১৫ কোটি! আর মাত্র ৫% বিরান ভুমিই কেবল চাষযোগ্য, তাই বা হয় কি করে?

সেই স্বপ্ন প্রকল্প (The dream project!)

ধরা যাক, আলোচিত ৬টি দেশের কোন একটির মৌসুমী বায়ুু-পানি সমৃদ্ধ পতিত অঞ্চল, প্রস্তাবিত ‘মানব ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে’র জন্য সর্বসম্মতভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হল। যেখানে বাংলাদেশী ৪৫-৫৫ বছর বয়সী ১ কাপল, ২০-৩০ বছরের ১ কাপল এবং ০-১০ বছরের ১/২ জন শিশু-কিশোরসহ কমবেশী ৫ জনের কৃষি কর্মক্ষম কয়েক শত পরিবারের, প্রতিটিকে ১ একরের বড়সর আঙ্গিনা (কৃষকের সেকেন্ড হোম!) ও ১৫ একর করে আবাদি জমি দেয়া হল। হিসাব কষে দেখা গেছে, পরিবেশ বান্ধব মূলত গ্রীন এনার্জি নির্ভর যৌথ যান্ত্রিক চাষবাস পদ্ধতি অবলম্বনে, ঐরূপ একটি পরিবারের পক্ষেই একরে ন্যুনতম ৩৫ মন হারে, ১৫ একর জমিতে প্রতি মৌসুমে ৫০০ মন এবং বছরে কম-বেশী ১০০০ মন বা ৪০ টন শস্য দানা উৎপাদন করা সম্ভব!

অর্থাৎ কয়েক কোটি উদ্বৃত্ত অভাগাকে প্রকল্পিত ধারনায় আন্তর্জাতিক খাদ্য উৎপাদন কেন্দ্রে (International Food Production Centre) বা পছন্দসই যে কোনো নামের প্রকল্পে নিয়োজিত করে, হতভাগ্য সেই কৃষককুলের সহিত ২-৩ কোটি অতিরিক্ত বেকার মানুষের কর্মসংস্থানসহ ক্ষুধা-মন্দার বিশ্ব, দ্রুত বিলিয়ন টন বাড়তি শষ্যদানা অর্জনের যুগে প্রবেশ করতে পারে!

উল্লেখ্য আবহাওয়ার সম্ভাব্য প্রতিকুলতা ও বৈপরীত্যকে বিবেচনায় এনে, বাংলাদেশের স্বাভাবিক ফলনের অর্ধেক এবং রেকর্ড ফলনের এক-তৃতীয়াংশ কৃষিফলন কল্পনা করেই, একরে মাত্র ৩৫ মন ফলনের ধারণা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তৃতীয় ফসলকে অতিরিক্ত উৎপাদন এবং এক একরের বড় আঙ্গিনায় উৎপাদিত সবজি-ফলাদি, পোল্ট্রি, পশুপালনসহ যাবতীয় সুবিধাদি সংশ্লিষ্ট পরিবারের নিজস্ব বাড়তি আয় বিবেচনায়, ‘উৎপাদন-বন্টন-চুক্তি-কৃষি’ নামের অভিনব স্বপ্নকে ঘিরেই এ নিবন্ধটির মূল উপজিব্য রচিত হয়েছে!

 

উৎপাদন-বন্টন-চুক্তি (Production Sharing Contract)

উৎপাদন-বন্টন-চুক্তি, বর্তমান বিশ্বের বহুল প্রচলিত এক ‘অংশিদারিত্বমূলক কর্ম-চুক্তি’। যার আওতায় ইউএসএ, ইউকে, চীন, রাশিয়া, ইউরোপসহ উন্নত দেশসমূহের আধুনিক ও ভারী যন্ত্রপাতি সমেত কারিগরী বহর মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, এশিয়াসহ বিশ্বের অপরাপর দেশ-মহাদেশ সমূহের মাটির নীচের তেল-গ্যাস, সোনা-রূপা, ইত্যাদি খনিজ সম্পদ আহরণ করে থাকে। খনিজ অথবা খোঁয়ানো সম্পদ উত্তলন বা উদ্ধারকারী পক্ষ এবং মালিকানা পক্ষের মধ্যে নানা ‘বন্টন-চুক্তি’র বিষয়ে প্রায় সকলেই অবগত। বাংলাদেশের গ্যাস ক্ষেত্র সমূহের অধিকাংশই এখন ‘উৎপাদন-বন্টন-চুক্তি’ (PSC) এর আওতায় নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।

একই আদলে, সংকীর্ণ ও প্রতিকুল পরিসরে অপরিসীম ফলনে পারঙ্গম বাঙ্গালী কৃষককুলকে, পড়ে থাকা অগাধ পতিত ভুমির চাষযোগ্য অংশে উৎপাদন-বন্টন-চুক্তি-কৃষি (APSC: Agricultural Production Sharing Contract) প্রকল্প এর আওতায় উপযুক্ত সরঞ্জামাদিসহ ছেড়ে দেয়া গেলে, হিংসা-বিদ্বেষ আর ক্ষুধা-মন্দায় জরাগ্রস্থ বর্তমান দুনিয়া নিশ্চিতভাবেই অকল্পনীয় এক কৃষি বিপ্লব এ, নব উদ্যমে উজ্জীবিত হয়ে উঠতো!

উৎপাদন-বন্টন-চুক্তি, খনিজ বনাম কৃষিঃ

  • খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান ও উত্তলন ‘জটিল প্রযুক্তি’ নির্ভর এবং ঝুকিপূর্ণ!
  • খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান, উত্তলন ও উৎপাদনে ব্যাপক বিনিয়োগের প্রয়োজন!
  • খনিতে বিদ্যমান তেল-গ্যাসসহ সকল মজুদই সীমিত!
  • চুক্তির মেয়াদ ততদিন, যতদিন মজুদ নিঃশেষিত না হয়!
  • খনির মজুদ ফুরিয়ে গেলে, রিগসহ ভারী যন্ত্রপাতির অধিকাংশই পরিত্যক্ত হয়ে যায়!
  • মাটি বা পানির নীচের অদৃশ্য খনিজ বা হারানো সম্পদ আহরণে অনিশ্চয়তা সুস্পষ্ট!
  • উভয় পক্ষের বিবেচনায়ই লাভ-ক্ষতির হিসাবটি, যথেষ্ট জটিল ও সুদুরপ্রসারি!
  • এতদসত্বেও, বিশ্বে ইহা একটি চলমান এবং সিদ্ধ প্রক্রিয়া!
  • দু-চারটি দুর্ঘটনা ব্যতিত, এ নিয়ে কোথাও বড় কোন জটিলতার উদ্ভব হয়েছে মর্মে জানা যায়নি।

পক্ষান্তরে,

  • কল্পিত বন্টন চুক্তি কৃষি’র জন্য ‘চাষের জমি’ অনুসন্ধান, সহজতর ংড়রষ ঃবংঃ আর ভূ-পৃষ্ঠ জরিপ নির্ভর!
  • ভুমি কর্ষে শস্য উৎপাদনের সম্ভাবনা অফুরন্ত। এক্ষেত্রে আয়ু ব্যতিত ফুরিয়ে যাবার কিছুই নেই!
  • অভিজ্ঞতা আর নতুন নতুন পদ্ধতি অনুসরণে, উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনা অসীম!
  • প্রকল্পটি এতটাই আশাব্যঞ্জক যে, বাস্তবায়িত বিশ্বে কৃষকের জন্য কাড়াকাড়ি পড়াটাই স্বাভাবিক!
  • কৃষি কাজের জন্যে, ভারী ও ব্যয়বহুল যন্ত্রপাতি তথা বৃহৎ বিনিয়োগের কোনো বিষয়ই নেই!
  • যথাযথ নিরাপত্তা, নিয়ন্ত্রণ ও ট্রেনিং-ট্রায়াল-সংস্থান পদ্ধতিতে অপার সম্ভাবনা ব্যতিরেকে কোনো প্রকার অস্পষ্টতা, অনিশ্চয়তা বা বড় ধরণের ঝুকির বালাই নেই!
  • কৃষক বনাম হোষ্ট, উভয় দিক থেকেই সহজ অর্জন এর হিসাবটি অত্যন্ত পরিস্কার!
  • তবে মানব বিষয়ক ‘মাইগ্রেশন ও ইনসারজেন্সি!’ একটি ফ্যাক্টর বটে! সেক্ষেত্রে স্থানকাল ভিত্তিক কঠোর সিদ্ধান্ত, আইন ও স্মার্ট আইডির ডিজিটাল নিয়ন্ত্রন, আজকাল অসম্ভব বা অবাস্তব কোনো বিষয় নয়!
  • ব্যাপক ঘাটতি ও দারিদ্রক্লিষ্ট বর্তমান বিশ্বে ‘উৎপাদন-বন্টন-চুক্তি-কৃষি’র অনুপস্থিতি বিস্ময়করই বটে!
  • বিশ্ব সংস্থা, হোষ্ট ও কৃষক মিলে, ত্রিপক্ষীয় ‘উইন-উইন’ কর্মযজ্ঞটি প্রকৃত অর্থেই তুলনাহীন!

কল্পিত প্রকল্পের সম্ভাব্য বন্টন বিন্যাসঃ

সুদুর প্রবাসে টিকে থাকা এবং কর্মস্পৃহা ধরে রাখার জন্য, কমবেশী ৫ জনের পরিবার প্রতি বরাদ্ধকৃত ১৬ একর জমি হতে ১ একরের আঙ্গিনা বাদে, ১৫ একরে উৎপাদিত যাবতীয় পন্যের ৭০% কৃষকের হিস্যা, ১৫% হোষ্ট-রাষ্ট্রের প্রাধিকার, ৭% আবাসন ও কৃষি যন্ত্রের দায় শোধ, ৫% বাজার, যোগাযোগ ইত্যাদি অবকাঠামোসহ প্রশাসনিক দায় এবং অবশিষ্ট ১% হোষ্ট-রাষ্ট্রের খাজনা, ১% কৃষক রাষ্ট্রের খাজনা ও ১% ইউএন সংস্থার সম্মানী নির্ধারণ করা গেলে, ত্রিপক্ষীয় যৌথ নজরদারীতে পরিচালিত এ হতো এমন এক ‘আর্থিক স্বনির্ভর’ প্রকল্প, যা একবার চালু হবার পর স্বয়ংক্রিয় ভাবেই চলতে থাকতো!

সেই গরিবের সেকেন্ড হোম এ বাস করে, কৃষক পরিবারটি তার সম্ভাব্য ৪০ টন শস্য হতে, নিজ হিস্যার ৭০% এ প্রাপ্য কম-বেশী ২৮ টন পণ্যের ৪/৫ টনে বার্ষিক খাদ্য চাহিদা এবং অবশিষ্ট ২৪ টনের অর্ধেক প্রবাস জীবন যাপন ব্যয় আর বাকী অর্ধেক বা ১২ টন পন্য বার্ষিক উদ্বৃত্ত অর্জন হিসেবে পেত। বাংলাদেশে প্রতি কেজি কাঁচা ধান ২০ টাকা হিসেবে যার মূল্য, মোটামুটি ২.৪০ লক্ষ টাকা বা ৩,০০০ ডলারে দাড়াতো!

সম্ভাব্য বিপত্তি (Drawbacks)ঃ ধারণা, কল্পনা ও আকাঙ্খার সাথে বাস্তবতার ফারাক থাকবেই! তবে খনিজ সংক্রান্ত চলমান জটিলতর উৎপাদন-বন্টন-চুক্তির তুলনায়, প্রস্তাবিত উৎপাদন-বন্টন-চুক্তি-কৃষির কার্যকারিতা পরিবেশ, অপারেশন ও নিয়ন্ত্রন সকল বিচারেই সহজতর, স্বত্বেও অভিনব প্রকল্পটির সম্ভাব্য প্রতিকুলতা ও বিপত্তি অন্বেষণ ও তার বিস্তারিত বিশ্লেষণ অত্যাবশ্যক! যেমন-

  • কেবল পরিবেশ বিপর্যয়ের ধূয়ো তুলে, মহৎ এ প্রকল্পটি শুরুতেই ফ্রিজ হয়ে যেতে পারে!
  • ‘স্বদেশে পরদেশী!’ আতঙ্কে হোষ্ট বাসিন্দাপক্ষ হতে প্রচন্ড বিরোধিতার সম্ভাবনা!
  • শত সহস্র মাইল দুরত্বে দেশান্তরিত অসহায় কৃষককুলকে খাপ খাওয়ানো জনিত অকল্পনীয় যত বিড়ম্বনা!
  • পরিচালন, নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক ও স্বার্থগত নানা বিষয়ে ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা ও সমন্বয় বিষয়ক জটিলতা!

১. পরিবেশঃ ভিনদেশের বন-বাদার, গ্রাসল্যান্ড পরিস্কার করে বসতি স্থাপনে পরিবেশগত বাধা হিসেবে সংরক্ষণ বাদীদের ‘ছেঃ ছেঃ’ রব এড়িয়ে, ট্রায়াল-কর্ষণসহ বাস্তবতার নিরিখে এগোতে হবে সাবধানে!
ধরা যাক, বিরান ভুমি সমৃদ্ধ যে কোন একটি দেশের পড়ে থাকা দশ লক্ষ বর্গমাইল আয়তনের বিশাল ভু-খন্ডের ৯৫% বা সারে নয় লক্ষ বর্গমাইল এলাকাই পূর্ববৎ রেখে, মাত্র ৫% বা অর্ধ লক্ষ বর্গমাইল (এক বাংলাদেশের সমান!) কৃষি উপযোগী ‘মৌসুমী বায়ু’ প্রবণ এলাকা চিহ্নিত করা হল। অথবা কোনো একটি দেশের মাত্র ৫ হাজার বর্গমাইল পতিত ভুমির, কৃষি উপযোগী ৫% (২৫০ বর্গমাইল) এলাকায় ভিনদেশী চাষী এনে বসানোর সাব্যস্ত হল। হিসাব কষে দেখা গেছে, সেই ৫% অংশদ্বয়েই প্রস্তাবিত গ্রীন-এনার্জি নির্ভর কৃষি প্রকল্পে যথাক্রমে, ৮৮ লক্ষ ও ৪৪ হাজার কৃষকের সংস্থান করা সম্ভব! যেখানে-

  • সুবিশাল বিরান ভুমির ক্ষুদ্রতম (৫%) অংশে কৃষিজ সবুজায়ন প্রকল্প হলে পরিবেশ বিপর্যয়তো নয়ই, বরং একঘেয়ে বুনো পরিবেশের স্থলে কৃষি নির্ভর শ্যামল-সচ্ছ বৈচিত্রময় পরিবেশের উদ্ভব হতো!
  • প্রতিটি পরিবারের জন্য প্রস্তাবিত এক একরের বিস্তৃত আঙ্গিনার পুকুর, ফলজ বৃক্ষ, সবজী চাষ, পোল্ট্রি ও পশুপালন, প্রতিটি অনুসঙ্গই কাঙ্খিত পরিবেশের অপরিহার্য্য অঙ্গ।
  • গ্রীন এনার্জি প্রভাবিত কৃষি-যন্ত্রপাতির সাহায্যে চাষ-বাস, সংরক্ষন ও প্রক্রিয়াকরণসহ সকল কর্মকান্ডই পরিবেশ সহায়ক।
  • প্রস্তাবিত পদ্ধতির এক বা বহু খন্ডের প্রকল্প এলাকার জনঘনত্ব প্রতি বর্গমাইলে ২০০ জনের উর্ধে ওঠার সম্ভাবনা না থাকার কারণে, সেটিও বিশ্বমানের সহনীয় পরিবেশকেই উজ্জীবিত রাখতো!

২. হোষ্ট নাগরিকদের সম্ভাব্য বিরোধিতাঃ ভিন দেশের বাসিন্দা আগমনে, স্বদেশীদের মনের সঙ্গত বিস্ময় আর ভীতি দুর করার প্রচেষ্টা হিসেবে-

  • প্রকল্পটির নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত বাস্তবিক বিষয়াদি,
  • বাড়তি কর্মসংস্থানসহ অভাবিত আর্থিক যোগ এবং
  • খাদ্যশষ্য উৎপাদনমূলক ‘স্বনির্ভর পরিকল্পনা’য় দেশের স্বার্থসহ বিশ্ব স্বার্থের বিষয়গুলো,

স্বয়ং হোষ্ট রাষ্ট্রের পক্ষ হতে, প্রস্ততিকালীনই স্বদেশবাসীকে জ্ঞাত করাতে হবে। তবে ‘উৎপাদন-বন্টন-চুক্তি-কৃষি’র অভাবিত প্রাপ্তিই, সন্দেহ ও ভীতি বিতাড়নে মূল ভুমিকা পালন করবে ইনশাল্লাহ!

চলবে

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments