পানি বিশুদ্ধিকরন প্রক্রিয়ায় পাতন পদ্ধতি সর্বাধিক সহজবোধ্য ও জনপ্রিয় । অন্যান্য পদ্ধতির মধ্যে রাসায়নিক প্রক্রিয়া বা বিক্রিয়ার মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় বা ক্ষতিকর উপাদান সমূহের বিনষ্ট অথবা অপসারণ পানির বিশুদ্ধ রূপটি পেতে সহায়তা করে। উভয় পদ্ধতিতেই সুনিশ্চিত করা হয় যে, পানির প্রতিটি অনুই একশতভাগ বিশুদ্ধ । একটি অপ্রয়োজনীয় বা অস্বাস্থ্যকর অনুকনিকা বিদ্যমান থাকলে পানিটি বিষাক্ত হয় এবং পান করার অনুপোযোগী হয়। পরিবার, সমাজ , রাষ্ট্র এবং সমগ্র বিশ্ব গঠনের ক্ষুদ্রতম একক যেহেতু একক ব্যক্তিত্ব তাই একক ব্যক্তিত্বের গুনগত মানের উপর উল্লেখিত ব্যবস্থাগুলির মান সরাসরি নির্ভরশীল । এক কথায় ব্যক্তি নির্মল হলেই বিশ্ব নির্মল হবে। এসব কথাতো আমরা সবাই জানি, তবে কেন
আবার অবতারনা এই সহজবোধ্য ব্যপারটির, এটা ভাবা স্বাভাবিক।
ক্ষেত্রবিশেষ ব্যাখ্য আদান-প্রদান একটি বিশেষ বিষয়কে উপলব্ধি ও অনুধাবন করতে সাহায্য করে। ক্ষেত্রটি এ ক্ষেত্রে একটি বিশেষ শ্রেনী,
যাদের বোধ আছে,যারা পড়তে জানে এবং যাদের ভাষাজ্ঞান আছে।
ব্যক্তিত্ব বা ব্যক্তি ভাবমূর্তি একটি সতস্ফুর্ত প্রকাশ। অনুভূতি তথা
উপলব্ধির ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় এবং নিজেকে উত্তমরূপে উপস্থাপনের তাগিদে প্রকাশটিই একক ব্যক্তির ব্যক্তিত্বটির প্রতিনিধিত্ব করে।
অনুভূতির অভাব যেখানে তা-ই জড় কিংবা অস্তিত্বহীন । মানুষের অস্তিত্ব তাই তার অনুভবে । অনুভবে সে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু একটা মনে করে ; এটা তার অস্তিত্বের সাথে জড়িত। পাশাপাশি সে আবার অফুরন্ত বিশুদ্ধ ভালবাসা পেতে চায় প্রিয়জনদের কাছ থেকে। ক্ষুধানিবারনের অতি প্রয়োজনীয় আবশ্যক গুলির প্রাপ্তি নিশ্চিত হবার পর উপরোক্ত দুটি উপাদান বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। কাছের কিংবা দুরের মানুষের কাছ থেকে প্রশংসা প্রাপ্তির আকাংখা তাই তার বেঁচে থাকার চালিকা শক্তি হিসাবে কাজ করে । নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপন এ বাসনারই বহিঃপ্রকাশ ।সারাটি জীবন ব্যাপী মানুষ তাই স্বীয় ব্যক্তিত্বের একটি কাংখিত রূপের ভাস্কর্য নির্মানে ব্যস্ত থাকে। ব্যক্তি একটি উপলব্ধির প্রকাশ, ব্যক্তি একটি ধারনা, ব্যক্তি একটি প্রভাব, ব্যক্তি একটি শক্তি, ব্যক্তি একটি প্রেরনা এবং ব্যক্তি একটি আনন্দের প্রতিশব্দ।
স্থান-কাল-পাত্র ভেদে ব্যক্তিত্বের বৈচিত্র লক্ষ্যনীয় অর্থাৎ ব্যক্তিটির জন্মস্থান , সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল, সময়কাল ও পারিবারিক মূল্যবোধ ব্যক্তি বৈচিত্রের জন্য দায়ী। ব্যক্তি বৈচিত্রময় হলেও ব্যক্তিত্বের সুন্দর ও আকর্ষনীয় রূপটি স্থান-কাল-পাত্র নির্বিচারে একই জ্যোতি ছড়ায় অর্থাৎ একই অর্থ বহন করে। যেমন- প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভৌগলিক অবস্থান ও ঋতু ভেদে বৈসাদৃশ্য থাকলেও এটা সর্বদাই সৌন্দর্যের মুগ্ধতা ছড়ায়। ফুলগুলি বাহারী রংয়ের ও রূপের হলেও পবিত্রতার বিচারে সবই সমগোত্রীয়। ব্যক্তি যে যে কারনে বৈচিত্রময় হয় তার মধ্যে উপরোল্লিখিত কারন ছাড়াও একক ব্যক্তির জৈব রাসায়নিক বৈচিত্রও অনেকাংশে দায়ী। কারন যাই থাকুক না কেন, ব্যক্তিত্বের গুনগত মানটি সর্বদাই একক ব্যক্তির বোধ ও অনুভূতির উপরই নির্ভরশীল ।
তাহলে ব্যক্তিত্বের গুনগত মানটি অর্থাৎ আদর্শ ও অনুকরণীয় রূপটি কি? উত্তরটি সবারই বোধের মধ্যে রয়েছে তবে এর বাস্তব রূপ দানে প্রায়ই ব্যর্থতার পঙ্কিল ডোবায় নিমজ্জিত হয়।যে সব প্রভাবক সমূহ ব্যক্তিত্বটিকে এর অাদর্শ রূপটি হতে বিচ্যুত করে সে সমস্ত প্রভাবকগুলির নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাপনাই কাংখিত অবস্থান লাভে সহায়তা করতে পারে। এই প্রভাবকগুলিকে আমরা অশুভ প্রভাবক বলতে পারি। এই অশুভ প্রভাবকগুলি আসলে কি কি এবং কিভাবে এগুলিকে নিয়ন্ত্রন বা বর্জন করা যায়, তা ব্যাখ্য করলে একক ব্যক্তিসত্ত্বাটির আদর্শ রূপটি পেতে সহজ হবে। মানবশিশুটি ভূমিষ্ঠ
হওয়ার পর পরই সাদা মস্তিস্ক ও সাদা হৃদয়টি পারিপার্শ্বিক পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হতে থাকে। প্রভাবকগুলির মধ্যে হাজার বছর ধরে প্রচলিত সংস্কৃতি, সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধ এবং ধর্মিয় ধারনা উল্লেখ করার মত। প্রচলিত এসব প্রভাবকের গ্রহনযোগ্যতা ঐ সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছে বেদ বাক্যের মত মনে হলেও সার্বজনীন হিসাবে মেনে নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত নয়। একটি বিশেষ সমাজের বিশেষ কতগুলি অাদর্শ বা মূল্যবোধ ঐ বিশেষ সমাজের জন্য উপযুক্ত হলেও, ভিন্ন আর একটি সমাজে সেগুলি গ্রহনযোগ্য নাও হতে পারে। সুতরাং ঐ বিশেষ মূল্যবোধে লালিত ও বিকশিত ব্যক্তিটির ব্যক্তি ভাবধারা সর্বজন গৃহীত নয়। ব্যক্তিটি তাই বিশ্বমানব তথা মহামানব তুল্য ব্যক্তি ভাবধারার বাইরে অবস্থান করে। ব্যাক্তিত্ব বিকাশের ধারাবাহিকতায় ব্যক্তির সহজাত অনুভূতি ও প্রবনতা এবং একক ব্যক্তির নিরপেক্ষ বিচার বোধ প্রভাবকগুলির সর্বজনীন উপযোগিতা নির্ণয়ে অন্যতম ভূমিকা রাখে। অনুপযোগী প্রভাবক গুলি বর্জনের মাধ্যমে ব্যক্তিটি তাকে বিশ্বমানব পর্যায়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে উন্নীত করতে পারে। তাই বলে এখানে ব্যক্তিটিকে তার কমিউনিটি কালচার বা অন্যান্য আঞ্চলিক ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃিতিকে বর্জনের পরামর্শ দিচ্ছে না। হাজার বছরের প্রানবন্ত সংস্কৃতি বরং মানুষের মনকে তৃপ্ত ও প্রফুল্ল রাখে সর্বদা, জীবনকে করে রঙিন ও অর্থবহ। তবে, সংস্কৃতির যে ধারনা বা চর্চাগুলি অন্য গোষ্ঠি বা মানুষকে অবমাননা করে, তা লালন ও পালনে ব্যক্তিস্বত্তা কলুষিত হয়ে এর আদর্শ রূপ থেকে বিচ্যুত হয়। ব্যক্তি চরিত্রে এ রূপের উপস্থিতি কখনোই কাম্য নয়। সহজ কথায়, অনাকাংখিত এবং ক্ষতিকর প্রভাবক গুলি বর্জনের ক্ষমতা একক ব্যক্তির ব্যক্তিগত নিরপেক্ষ বোধের উপর নির্ভরশীল । এই নিরপেক্ষ রাজ্যের সিংহাসনে বসার জন্য ব্যক্তিটিকে তাই তার গতানুগতিক বলয় থেকে প্রায়ই বের হয়ে সামগ্রিক অবলোকন করতে হয়। নিজ বলয়ের দরজা ও জানালা খুলে দিলে বলয়ের বাইরের রূপটি গৃহবন্দী মানসিকতাটিকে সামগ্রিক সাধারন বোধে উন্নীত করতে পারে। গৃহবন্দী ব্যক্তিটির গৃহে দরজা-জানালা থাকবে কি থাকবে না অথবা থাকলে খুলবে কি খুলবে না, তা ব্যক্তিটির নিজের ব্যক্তিত্বটিকে বিশ্বায়ন করার প্রয়াসে বাইরের জগতের সাথে সংযোগ রাখার মানসিকতার উপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে দরজা ও জানালাকে রূপক অর্থে সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ ভাগাভাগির মাধ্যম, বিভিন্ন গনমাধ্যম ও মানসিকতাকেই বুঝানো হয়েছে।
ব্যক্তিত্বের পরিশীলিত রূপটি যে ভাবেই অর্জিত হোক, তার বাস্তব রূপ দান কিংবা প্রকাশটিই নিষ্কলঙ্ক মানব বিচরন ক্ষেত্র গঠন করে। জীবন চক্রের যে কোন পর্যায়ে ব্যক্তিত্বটির ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে, তার সংশোধন সবসময়ই সম্ভব। এটি করার জন্য প্রয়োজন শুধু ভাল-মন্দ যাচাই করার ক্ষমতা ও নিজস্ব আন্তরিক প্রচেষ্টা। একটি মানুষের মনের অন্তর্নিহিত অবস্থা আর একটি মানুষ খুব সহজেই বুঝতে পারে। এটা ভাল-মন্দ নির্বিচারে সব মানুষেরই প্রকৃতি প্রদত্ত একটা গুন। মনোজগতের একশতভাগ বিশুদ্ধিকরন ব্যতীত মর্যাদা লাভ ও প্রশংসা কুড়ানোর অপচেষ্টাগুলির সন্মিলিত রূপটি নিজেকে নিজের অজান্তেই একজন দক্ষ অভিনেতার আসনে অধিষ্ঠিত করে। এটিকে ছদ্মবেশী ব্যক্তিত্ব বলে আখ্যায়িত করা যায়। ব্যক্তিত্বের ছদ্মবেশী রূপটি এক্ষেত্রে খুবই ভয়ংকর। এ রূপটিতে কাংখিত উদ্দেশ্য সাময়িক কালের জন্য সফল হলেও পরিনামে ঘৃনামিশ্রিত ব্যক্তির রূপটিকেই জন্ম দেয়। জেনে ও বুঝে এহেন রূপ ধারন করার পেছনে আর যে চালিকা শক্তিই থাকুক না কেন, তা সম্পূর্ণভাবেই অপ্রয়োজনীয় । প্রশংসা, শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে নিজেকে মিথ্যা দিয়ে উপস্থাপন এরূপ চর্চার আর একটি উদাহরণ। মিথ্যার গ্যালভানাইজড আস্তরনটি নষ্ট হলে মূল উপাদানটিতো প্রকাশিত হবেই। ইতিমধ্যেই মূল উপাদানটিও এর উপযোগিতা হারাবে। সুবিধা আদায়ের জন্য,যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধা তার জন্য স্বীয় ব্যক্তিত্বটি চাটুকারিতায় লিপ্ত হলে চরিত্রটির মধ্যে যে বৈশিষ্ট্য স্থায়ীভাবে প্রোথিত হয়, তা সুবিধার প্রয়োজন শেষ হলেও অভ্যাসের কারনে বৈশিষ্ট্যের কলংকিত রূপটি সর্বদাই লক্ষ্যনীয় হয়। প্রশংসা, শ্রদ্ধা, ভালবাসা অনেক ক্ষেত্র খারাপ মানুষের কাছ থেকেও লাভ করা যায়। তবে, তার পেছনে দাতাদের খারাপ উদ্দেশ্য থাকে; তা নিশ্চিত করে বলা যায়। সুবিধা দাতাদের সুবিধা প্রদানের পেছনেও বিনিময়ে সুবিধা আদায়ের একটা প্রচ্ছন্ন উদ্দেশ্য থাকে। অতএব, যে সুবিধাটি গ্রহিতা তার চরিত্রের স্খলন ঘটিয়ে অর্জন করলো, সেই সুবিধাটিকে চরিত্র স্খলন এর সাথে সমীকরনে বসালে আপন আদর্শরূপ ভাস্কর্যটির ক্ষতি স্বাধিত হয়। ব্যক্তি চরিত্রে অভিনয়টি কিছু কিছু ক্ষেত্রে দরকার তবে তার উদ্দেশ্য ভিন্ন। এ উদ্দেশ্যটিতে বরাবরই স্বীয় জীবনের সাথে ওপপ্রোতভাবে জরিত মানুষগুলি উপকৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ , কারো হাসিমুখ ফিরিয়ে আনার জন্য নিজেকে উপযোগী করে উপস্থাপনের অভিনয়, পরিবেশটিকে প্রানবন্ত করার প্রয়াসে স্বীয় দুঃখবোধের উপর ভালবাসা আর শ্রদ্ধার আভা ছড়িয়ে উৎসর্গ করার অভিনয়, সুবিধাবঞ্চিতদের সুবিধা দানের জন্য নিজ সুবিধার কিয়দংশ বিসর্জন দিতে প্রয়োজনীয় অভিনয় ইত্যাদি ।অতএব, সমীকরনে এটাই প্রতিয়মান হয় যে, অভিনয়ের যে রূপটিতে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট রয়েছে তা ছদ্মবেশী এবং গ্রহনযোগ্য নয়; শুধু নিঃস্বার্থ অভিনয়টিই ব্যক্তিত্বটিকে প্রানবন্ত করে।
একক ব্যক্তিস্বত্তাটিতে সতস্ফুর্ত , প্রানবন্ত , নিস্কলংক, নিঃস্বার্থ, মুক্তমনা ও বিশ্বমানব বৈশিষ্ট্যগুলি লালন ও অর্জনের পাশাপাশি এটাও নিশ্চিত হওয়া দরকার যে অপরাপর ব্যক্তিত্বে উল্লেখিত বৈশিষ্ট্য বিরাজ করছে। কারন, পরিবেশ দূষন রোধের মাধ্যমে নিজ স্বাস্থ্যটিকেও রক্ষা করা সম্ভব। সম্ভাব্য পদক্ষেপ গুলির মধ্যে সরাসরি সংশোধনের চেষ্টা, পরিত্যাগ বা বর্জনের পন্থা অবলম্বন , স্বীকৃতি বা গুরুত্ব না দেয়া, প্রজন্মকে জীবনের জৌলুস না দেখিয়ে বরং গুনগত দিকটি দেখানো অন্যতম। একক ব্যক্তির অন্যান্য উপযোগী বৈশিষ্ট্যে গুলি হলো পরিস্থিতি সম্পর্কে যথাযথ বোধগম্যতা, হিংসা-লোভ-রাগ দমন করার ক্ষমতা এবং ন্যায়বিচার বোধ। ন্যায়বিচার বোধটি এরকম যে, ব্যক্তিটি অন্যদের উপর তা-ই আরোপ করবে যা নিজের নিজের উপর আরোপিত হলে খুশি মনে বরন করতে পারে।একক ব্যক্তির সংস্পর্শে, তার উপস্হিতিতে এবং তার কর্মকান্ডে অন্য ব্যক্তি, ব্যক্তিবর্গ, পরিবার, সমাজ, দেশ তথা সমগ্র মানব জাতি কি প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছে সেটাই ঐ ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের গ্রহনযোগ্যতার মাপকাঠি।
আমি যদি জাতির কর্ণধার হতাম, বিশুদ্ধ জাতি গঠনে একক ব্যক্তিত্বের বিশুদ্ধিকরনে সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করতাম। প্রজন্মের প্রতিটি শিশুর আদর্শ ব্যক্তিত্ব গঠনে সহায়ক পরিবেশ, প্রয়োজনীয় পাঠ্যপুস্তক, একই রকম উপযোগী শিক্ষাপদ্ধতি, মূল্যবোধ ও জীবনবোধ ইত্যাদি সাবলিল ভাবে সুনিশ্চিত করার মাধ্যমে শিশুটির বিশুদ্ধ বিকাশের ধারা অব্যহত রাখা যায়। এভাবেই বিশ্বব্যবস্থার নির্মল রূপটি অর্জন সম্ভব।
আজকাল সরল, সহজ ও খোলা মনের মানুষ গুলি খুব কম দেখা যায়। মানুষগুলি শুধুই নিজেকে জাহির করতে ব্যস্ত। বুঝাতে চায় সে অন্য দশজন মানুষের চেয়ে উন্নততর । চলনে-বলনে, কাজে-কর্মে, প্রকাশে-ইঙ্গিতে, অর্থ-সম্পত্তি-প্রশংসা-খ্যাতি অর্জনে শুধুই নির্লজ্জের মত নিজেকে উপস্থাপন করছে। কোন একটি বিশেষ দিকে কোন ব্যক্তির গুন প্রশংসনীয় । তবে, গুনকীর্তনটি যেন অন্য ব্যক্তিকে কখনোই খাটো না করে, এ সংবেদনশীল ব্যাপারটিতে প্রশংসা লাভকারী ও প্রশংসাকারী উভয় পক্ষকেই সতর্ক থাকতে হবে।
কে চায় নিজ ব্যক্তি ভাবধারাটি ঘৃনামিশ্রিত হোক? এতে মানবজনম শুধুই কষ্টকর হয়। শুধু গভীরভাবে অনুধাবন করা প্রয়োজন, যা অর্জনের তাগিদে নিজ স্বত্তাটিকে কলংকিত করা হয়, তা সত্যিকার অর্থে সুন্দর, স্বচ্ছ, স্বাভাবিক, প্রানবন্ত জীবনের জন্য প্রয়োজন আছে কি না।