‘কথা ও সুর’ সিডনি’র একেবারেই একটা নাম না জানা প্রতিষ্ঠান। এর শুরুটা হয়েছিল একেবারেই ঘরোয়া একটা আড্ডা থেকে। আমাদেরই অনুজপ্রতিম অনুপম গোস্বামী আর শর্মিষ্ঠা ফানি’র সিডনি সেভেন হিলস এর বাসাতে এক দুপুরে ভর পেট খাওয়া দাওয়া করে আড্ডা মারতে মারতে। গান পাগল আমাদের ছেলে মেয়েরা। ওদের বাবা মায়েরা যখন আড্ডায় মেতে দেশের রাজনীতি নিয়ে মেতে উঠেছে, মেতে উঠেছে রাজা উজির মারতে, তখন হটাৎ করেই কানে ভেসে এলো টুংটাং গিটারের সুর সাথে হারমোনিয়াম আর ডুগি-তবলা’র আওয়াজ। বাচ্চাদের ঘরে যেয়ে দেখা গেলো ওরা রাজা উজির না মেরে মেতে উঠেছে গানে আর কবিতায়। আমাদের অবাক করা দৃষ্টিকে পরোয়া করে ওদের মিষ্টি কথার বোলে ভেসে উঠলো সুর “একি লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ, প্রাণেশ হে,
আনন্দ বসন্ত সমাগমে”।
আমাদের ভাবনাতে তখনি খেলে গেলো, ওদের নিয়ে কি কিছু করা যায়? সেই ভাবনারই ফসল কথা ও সুরের আজ প্রায় পাঁচ বছরের পথচলা। তখন আমাদের বাচ্চাদের সবার বড়টার বয়স ছিল বারো আর সবার ছোটটার বয়স ছিল চার। সেই থেকে শুরু প্রতি বছর ওদের নিয়ে বসার, ওদের অনুপ্রাণিত করার আর ওদের উৎসাহ দেবার। কারো গ্যারাজের বছরের সমস্ত আবর্জনা ঝেঁটিয়ে বিদায় করে, কিংবা কারো ড্রয়িং রুমের সমস্ত আসবাব পত্র এক কোনাতে ডাই করে।দুই একজন খুব কাছের মানুষকে নিমন্ত্রণ করে আর তাঁদের প্রাণ ঢালা আশীর্বাদ আমাদের বাচ্চাদের চলার পথ সুগম করেছে।
প্রথম প্রথম বাচ্চাদের অনুপ্রাণিত করতে আমরা ওদের বাবার এবং মায়েরা ও বসতাম নিজস্ব ঢং এ দু একটা গান অথবা কবিতা নিয়ে। কিন্তু এবারই প্রথম আমাদের বাচ্চারা ওদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা দিয়ে সাজিয়েছে ওদের নিজেদের অনুষ্ঠান আর গানের ‘কথা ও সুর’। হারমোনিয়ামে গান তোলা, কীবোর্ড সাথে তবলা, মন্দিরা, গিটার আর খোলের সঙ্গতও ওদের একেবারেই নিজস্ব পরিকল্পনা। কিন্তু এবারের অনুষ্ঠানে ওদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আমাদের দায়িত্ব ছিল শুধু ওদের একটা হল ভাড়া করে দেয়া আর ওদের মহড়ার সময় ওদের খাবার দাবার সরবরাহ করা। ওদের চোখে মুখে কি ঐকান্তিকতা, কি উৎসাহ আর বুক ভরা কি সাহস। তাই তো ওদের অনুষ্ঠানের নাম “আমরা নুতন যৌবনেরও দূত”।
আগামী ১৯শে জানুয়ারি ঠিক সন্ধ্যে সাতটায় ডান্ডাস ইউনাইটিং চার্চ হল, ১৪৩ কিসিং পয়েন্ট রোড, ডান্ডাস ২১১৭ এ আপনারা ওদের উৎসাহ আর সাহস দিতে আসতে ভুলবেন না যেনো।