দেবীর অধিষ্ঠান ও মহামারী রোধক সংরক্ষিত সীমানার প্রাচীর খোলা মুক্ত দিন আজ। অথচ..
বাতাসে কোনো আনন্দ আওয়াজ নেই।
ক্রান্তি পরিক্রমায় প্রকৃতিও কেমন গোমরামুখো,
বড্ড অচেনা বিবর্ণ সাজে অবগুণ্ঠিতা।
ধূপ গন্ধ, উৎসব কোলাহল মুখরতা নেই কোথাও।
বৃষ্টির ছিঁচকে কান্নার মৃদু টিপ টিপ শব্দ আর পাখি কলরব ছাড়া, এই ক্ষণে আর কোন সুখ স্পন্দন নেই ভূতলে।
একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে আশায়..
পথ চেয়ে ছিলাম আমরা অবরুদ্ধ জানালার গ্রীল ধরে। কতো অনন্ত বিকেলের গলা চেপে আটকে রেখেছিলাম শ্বাস। ছুঁয়ে দেখতে পারিনি, সখা সখি দলে মধ্য দুপুরে উঠোনে ঝরা আহলাদি বৃষ্টি ফোটা।
নানান আবর্জনার সাথে কাদায় গড়াগড়ি..
গলে গেছে আরাধ্য শখের, আমার চন্দন তিলক।
হিজল ডালে একটানা দোল খেয়ে গেছে..
একাকী বিকেল, ক্লান্ত দোলনা।
তৃষ্ণার্ত চোখ আর আবেগী শ্বাস চেপে, চেয়ে দেখেছি শুধু। অবোধ শিশু মনকে প্রবোধ দিয়েছি,
আবার আসবে সু’দিন। আমরা নাচবো মাতাল..
প্রকৃতি কোলে, হাসবো উচ্চস্বরে। গলা ছেড়ে গাইবো এই আঙ্গিনায়, চিরচেনা জীবনের জয়গান।
মহামারী, এখন মুমূর্ষু প্রায়।
শত বছরের পরিক্রমা ঘুরে তাঁর অন্তিম যাত্রায় আমাদের আনন্দ আরতি আর শংখ বেজে ওঠার পালা এখন। কিন্তু,
আমি যে শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে পারছি না! শংখে ফুঁ দেবার শেষ শ্বাস ছাড়বার শক্তিটুকুও যে নেই আমার!
বুক উচানো খোলা আঙ্গিনা, তির্যক বৃষ্টির ছাঁট..
গন্ধ কুসুম শিউলি বোটা, সফেদ ঘন কাশবন মাথা নেড়ে ডাকছে আমায়। আমি যে অনড় গেঁথে আছি বিছানার মায়ায়। কী.. করে যাই?
মহামারী তাঁর প্রলয় ছোঁবলে যাদেরকে নিয়ে গেলো সাথে করে। তাঁরা মুক্তি পেলো চির প্রশান্তির দ্বারে।
মুমূর্ষু, পঙ্গু করে ফেলে গেলো যাদের। আমরা যবুথবু বসে আছি, আরেকটি ক্রান্তির অন্ধ মন্দিরে,
অভিশাপের নিষিদ্ধ জপমালা হাতে।
এইচ এ ববি
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া।
১১/১০/২০২১
