[ আজ বিজয়া দশমী। আমরা প্রশান্তিকায় এবছর পূজা সংখ্যার জন্য কোন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেইনি। তবুও সম্মানীয় লেখকেরা তাদের মুল্যবান লেখাগুলি পাঠিয়ে আমাদের ঋদ্ধ করেছেন। অতিমারি, ধর্ষণ বা অসংখ্য অনাচারের দেশে এবারের গৃহবন্দী বিজয়া দশমিতে আমাদের নিবেদন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কবি, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক বদরুজ্জামান আলমগীরের এই লেখাদুটি। সকলকে শারদীয় শুভেচ্ছা।]
আশায় আশায় থাকি
-বদরুজ্জামান আলমগীর
আমাদের সাংস্কৃতিক গড়নের সবচেয়ে ঘনীভূত, নিজস্ব রূপটি অভিব্যক্ত হয় শারদীয় দুর্গোৎসবের ভিতর। সারা ভারতের কোথাও এমন মাতৃকল্যাণ ধারায় পূজার মহিমা আর নেই। অন্য কোন সম্প্রদায়, জাতিগোষ্ঠী মা-কে এভাবে ভগবানের মর্যাদায় শিরে মুরাশার উজ্জ্বলতায় পরিধান করেনি, এটি বাঙলা ও বাঙালি চরিতের অমূল্য নিধি।
ঋগ্বেদের আদি দেবী দূর্গা কেবল এক শত্রু মহিষাসুর বধের নিশানা করেছিলেন, কিন্তু আমাদের দুর্গতির সংখ্যাধিক্যের কারণে মা দুর্গা এখন শঙখ, চক্র, গদা, পদ্ম, খড়গ, তীর-ধনুক, ত্রিশূল, বজ্র, সাপ ও অগ্নিলগ্ন দশভুজা।
আমরা মারী ও মড়কে ছত্রখান সন্তানেরা মায়ের আগমনে দুধভাতের আশায় আশায় থাকি!
ক্ষমাসিঞ্চন
আমায় বধ করো- তীক্ষ্ণ নিশানায় অনড় ফলক
বুক পেতে দাঁড়িয়েছি শঙখচিল ভুলের কোরক।
স্থির করো অবিচল চতুর বক্র রাজাদেশ নীতি
অঙ্গে মেখেছি নিমফল ফলবান চাষীর রীতি।
পদতলে দ্বিধা কেন জলপাই রঙ ত্রস্ত নাবিক,
মেঘ ঘষেছে পাথরে মুখ পরিসংখ্যান গ্রাফিক।
নতজানু দেখো মৃত্তিকাদিক তৃণকল্যাণ রোখ
তুমি থাকো অহংকার রূপিনী মৌল অভিমুখ।
বর্শা এবার ছিন্ন করুক চোখে যে আশা আছে
ক্ষমা না করো দেবী আমায় রক্ত ফলার নিচে।
অলংকরণ: মিতা চৌধুরী
বদরুজ্জামান আলমগীর: কবি, অনুবাদক, প্রাবন্ধিক। ফিলাডেলফিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।