প্রশান্তিকা ডেস্ক: দূর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হয়েছে। আশংকাজনক অবস্থায় তাঁকে এয়ার এম্বুলেন্সে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঢাকার শেরেবাংলা নগরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে সরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, তাঁর মাথায় আঘাত এতো গুরুতর যে অপারেশন করা যাচ্ছেনা। এমনকি তার এই অবস্থায় এখন দেশের বাইরে নেয়ার কোনো সুযোগও নেই।
একাত্তর টেলিভিশন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের নিউরো সার্জারির অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন পুরো পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় তিনি বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এ মুহূর্তে অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ইউএনও ওয়াহিদার অবস্থা আশংকাজনক।” সবকিছু বিবেচনা করে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। অধ্যাপক জাহেদ হোসেন আরও বলেন, ‘ইউএনওর মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। মাথার খুলির হাড় ভেঙে ভেতরে ঢুকে গেছে। এটি মস্তিষ্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে প্রচণ্ডভাবে। ভেতরে রক্ত রক্ষণ হয়েছে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল না। ব্লাড প্রেশার কমে গেছে। জ্ঞানের মাত্রা সাধারণ মানুষের মতো নেই। তিনি প্রেশার ধরে রাখতে পারছেন না। তাঁর পালস বেড়ে গেছে।যেকোনো সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটেও যেতে পারে।”
বুধবার রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা ঘোড়াঘাটে বাসভবনে ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তাঁর বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউএনওর সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর কেটে দুর্বৃত্তরা তাঁর শয়নকক্ষে ঢুকে পড়ে। এর আগে দুর্বৃত্তরা ওই বাসভবনের নিরাপত্তা প্রহরীকে বেঁধে প্রহরী কক্ষে তালা দিয়ে আটকে রাখে। ইউএনওর বাবা প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে তিনি হাঁটতে বের না হওয়ায় সঙ্গীরা তাঁর খোঁজ নেওয়ার জন্য বাসভবনে যান। অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে ইউএনও, তাঁর বাবা ও প্রহরীকে উদ্ধার করে।
ইউএনও’র বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি গ্রামের বাড়ি বাস করেন। মাঝে মাঝে ঘোড়াঘাটে এসে মেয়ের বাসায় থাকেন। ওয়াহিদার স্বামীও একজন ইউএনও। তিনি পীরগঞ্জ উপজেলায় কার্যরত রয়েছেন।