
আজ বেলাশেষে ফেসবুক নিউজফিড দেখে থমকে গেল কিছু সময়। গত ১/২ দিন আগেই জেনেছিলাম উনি হসপিটালে, এরমাঝে নিউজে দেখলাম উনি মাকেও হারিয়েছেন…
ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করছিলেন, কাল আবার অসুস্থ শুনেই মনটা ভেঙ্গে গিয়েছিলো। আজ সব থমকে গেল… চলেই গেলেন, তাঁকে ঘিরে ছিল যাদের একান্ত পৃথিবী তাঁদের পৃথিবীতেও নেমে এলো শূন্যতা। কিছু শূন্যতা কারো জীবনে কোনদিন পূরণ হয়না। তাঁর শূন্যতাও আজ থেকে অনেকেই পুষবেন আমৃত্যু।
বাকি আমরা যারা শোক প্রকাশ করছি তারা গাইবো তাঁর অসাধারণ কাজগুলোর জয়গান… যা দিয়ে গেছেন উজাড় করে।
বলতে এতটুকু দ্বিধা নেই আমি মুভি লাভার নই। আমার লাইফ স্টাইলের জন্যেই এই পার্ট চুকে বুকে গেছে অনেক কাল আগে।
খুবই কালে ভদ্রে আমার সব সময়ের প্রিয় অভিনেতা আমীর খান। মিডিয়াতে আলোচনায় বিশেষভাবে উঠে এলে তেমন দুই একটা মুভিই শুধু দেখি। সে বাংলা, বলিউড বা হলিউড যাই হোক।

অস্ট্রেলিয়ায় SBS ওয়ার্ল্ড নামে একটি মুভি চ্যানেল আছে। আমার খুব প্রিয়। ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া সহ পুরো বিশ্বের এমন সব দেশের মুভি দেখায় মাঝে মাঝে সময় পেলে তেমন কিছু দেখি এবং এমন অনেকবার হয়েছে কিছু মুভি দেখে মনে এমনই রেশ থেকে গেছে মনে হয়েছে এমন কিছু মুভি না দেখলে জীবনে কতকিছুই অজানা থেকে যেতো।
বলিউডে প্রচণ্ড শক্তিশালী কিছু চরিত্রাভিনেতা আছেন, এর মাঝে বেশ কজন অভিনয় শিল্পীর ভক্ত না হয়ে পারাই যায়না। আমাদের যেমন ছিলেন হুমায়ূন ফরিদি। যারা সিনেমার গল্প ছাপিয়ে নিজেরাই একজন জীবন্ত গল্প হয়ে উঠেন তাঁদের অভিনয় দক্ষতা এবং ব্যক্তিত্বে। ইরফান খান তাঁদেরই একজন। তাঁর ৩/৪টা মুভির বেশী দেখা হয়নি আমার। আর সেইসব ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয় দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। তিনি যে সবার থেকে আলাদা সে প্রায় সব ছবিতেই রেখেছেন স্বাক্ষর।
প্রায় সবাই তাঁকে নিয়ে লিখেছেন কম আর বেশী। বেশ কিছু লেখায় উঠে এসেছে, প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারের একটি কথা। আমি আজ আরো বেশ কয়বার সেটা পড়ছিলাম। উনি বলেছিলেন, “আমি যেন এক দ্রুতগামী ট্রেনের যাত্রী। আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছুটে চলেছি। হঠাৎ করে কেউ, যেন এক টিকেট চেকার, কাঁধে হাত দিয়ে আমায় বলল নেমে যেতে।”
অবশেষে আজ নেমেই গেলেন তিনি, সময়ের ডাকে, না ফেরার সেই দেশে। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।
প্রিয় অভিনয় শিল্পী ইরফান খান, ঘুমান শান্তির ঘুম। আপনার ঘুম ঘুম চোখ দু’টি আমরা কখনও ভুলবোনা।
নাদেরা সুলতানা নদী
সহযোগী সম্পাদক, প্রশান্তিকা।
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
২৯ এপ্রিল ২০।