প্রশান্তিকা ডেস্ক: গত শুক্রবার মুক্তিপ্রাপ্ত নেটফ্লিক্সের ব্লকবাস্টার সিনেমা এক্সট্রাকশান চলছে সারা বিশ্বব্যাপী। ছবির কাহিনীতে ৮০ ভাগই বাংলাদেশের কাহিনী। সঙ্গত কারণে বাংলাদেশ ও দেশের বাইরে বিশ্বব্যাপী বাঙালী মহলে চলছে ছবিটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা।
ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন ক্রিস হেমসওয়ার্থ। তার জন্ম ও বসবাস অস্ট্রেলিয়ায়। যদিও ছবির প্রয়োজনে আমেরিকা গিয়ে করোনার কারণে নিউ ইয়র্কে লকডাউন রয়েছেন। মুক্তির পর বিশ্বব্যাপী সমালোচনার জবাবে ক্রিস ফরচুন পত্রিকাকে বলেন, “ছবিটি কমেডি ও একশান ঘরানায় ছিলো। কিন্তু আমি একশান নিয়ে কমেডি করতে চাইনি। তাই ছবিটিকে একশান হিসেবেই নির্মান করা হয়েছে। তবে ছবির অভিজ্ঞতা আমার কাছে সম্পূর্ণ নতুন”।

বাংলাদেশীরা এক কথায় বলছে, ছবিটিতে ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশের দৃশ্যপট থাকলেও শুধু বাংলাদেশকেই শিশু অপহরণ, ড্রাগ, দারিদ্র, দূর্নীতি, অপরিপক্ক পুলিশি তৎপরতার দেশ দেখিয়ে বাংলাদেশকেই ভিলেন হিসেবে দেখানো হয়েছে। ছবির কাহিনীতে দেখানো হয়, ভারতের মুম্বাই হতে অপহরণকৃত বন্দীকে আটকে রাখা হয়। তাদের এক ছেলেকে অপহরণ দেখিয়ে ঢাকায় আনা হয়। সংযুক্ত হয় ঢাকার এবং ভারতের গ্যাং। উদ্ধার তৎপরতায় ডাকা হয় অস্ট্রেলিয়ার দুর্ধর্ষ টেলর রেককে। যার নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অস্ট্রেলীয় নায়ক ‘থোর’ খ্যাত ক্রিস হেমসওয়ার্থ। তারপর ঢাকাতেই ঘটে চলে একের পর এক সহিংসতা। একমাত্র কারণ ছিলো অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার। টেলরের একশানে বাংলাদেশের পুলিশ, সেনাবাহিনী হার মানতে বাধ্য হয়। অবশ্য পরিচালক স্যাম হারগ্রেভ বোধ হয় জানতেন না, বাংলাদেশে র্যাব নামেও একটি বাহিনী রয়েছে, জানলে হয়তো তাদেরকেও নামানো হতো এবং হারিয়ে দেয়া হতো।
ছবিটিতে বাংলাদেশের চরিত্রগুলো এক অন্যরকম বাংলায় সংলাপ বলেছে। আমরা সাধারনত ডাবিং করা ছবিগুলোতে সেরকম বাংলা শুনে থাকি। তাদের মুখে খিস্তি বা গালাগালি ছিলো প্রচুর। ছবির অধিকাংশ অংশজুড়ে ঢাকা থাকলেও ছবিটি সেখানে চিত্রায়ন করা হয়নি বলে জানা গেছে।আশেপাশে প্রচুর বেবিট্যাক্সি, রিকশা এবং দেয়ালে বাংলা লেখাগুলো সবই ছিলো স্টুডিও সেট আপ।
অস্ট্রেলিয়ায় অসংখ্য প্রবাসী ছবিটি দেখেছেন এবং এখনো দেখছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের অধিকাংশই নেগেটিভ মন্তব্য করছেন। একটা কথা মনে রাখতে হবে, হলিউডের অধিকাংশ ছবিগুলোই এমন। বিশেষ করে একশন ফিল্মগুলো। ড্রামা বা সায়েন্স ফিকশান বা অল্প কয়েকটা ঘরানা বাদ দিলে হলিউডের একশান ছবিগুলো এমনই হয়। এখানে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ না থাকলে হয়তো ছবিটির কপালে এতো সমালোচনা নাও জুটতে পারতো।