আরিফুর রহমান: প্রায় তিন সপ্তাহ আগে সিডনিতে উদ্বোধন হয়েছে দেশী স্বাদের আরও একটি রেস্টুরেন্ট। পুরাণ ঢাকার ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারা নামটাও দিয়েছেন, ‘ওল্ড টাউন স্টার কাবাব’। বাংলাদেশ থেকে জনপ্রিয় তরুণ কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইন এসেছিলেন। তাঁর চলে যাবার একদিন আগে সাদাত ও শিল্পী তানিম হায়াত খান রাজিতসহ পুরো প্রশান্তিকা ও মুক্তমঞ্চের বিরাট দল নিয়ে রকডেলের ওল্ড সিটি স্টার কাবাবে যাওয়া।

ঢুকতেই দেয়ালজুড়ে বিশাল ক্যানভাসে বাংলাদেশের সব ছবির ছোঁয়া পেলাম। যে কেউ যেকোন বয়সী মানুষ ছবিগুলো দেখলে তাদের ছেলেবেলা খুঁজে পাবেন। রেস্টুরেন্টের কর্নধার সৈয়দ রহমান মিঠু একজন চারুশিল্পী। তাঁর প্রতিষ্ঠানে শিল্পের ছোঁয়া থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখানে আমরা এসেছি পেটের শিল্প মেটাতে আর সেটা হলো স্বাদযুক্ত খাবার।
সেদিন ছিলো মঙ্গলবার সন্ধ্যা, কোন উইকেন্ড নয়। খুব একটা প্রয়োজন না হলে বাঙ্গালী বাইরে খায়না। অথচ বিশালাকার রেস্টুরেন্টে চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে মানুষ খাচ্ছে। মিঠু ভাইকে জিজ্ঞাস করলাম, ব্যবসা কেমন? প্রশান্তির হাসি দিয়ে বললেন, আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো, উদ্বোধনের দু’সপ্তাহ পার হয়েছে কিন্তু আপনাদের দোয়ায় এখনো সমান তালে মানুষ আসছেন।
আমাদের এন্ট্রি পরিবেশন করলেন মিঠু ভাই। সবাই কাবাবে কামড় দিয়েই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুললেন। মেইন আসার পরেও একই অবস্থা। বুঝা গেলো কেবল শিল্পের নান্দকিতায় সমৃদ্ধ নয় স্বাদের বিষয়টাও মাথায় রেখেছেন তারা।
মিঠু ভাই জানালেন, আসছে পহেলা বৈশাখে তারা দুপুরের খাবার থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত আয়োজন রেখেছেন। সেদিন পান্তা ইলিশ, নানা রকমের ভর্তা, হরেক রকমের পিঠা পায়েস ছাড়াও বাঙ্গালীর ঐতিহ্যবাহী খাবারের সমাবেশ থাকবে।

ডিনার শেষে চলে আসার সময় দেয়াল জুড়ে আবারও ছবিগুলো মনে করিয়ে দিলো একদিন আমাদেরও ছেলেবেলা ছিলো। ভালো খাবারের মানটা ধরে রাখলে এই রেস্টুরেন্টের সাফল্য ঠেকায় এমন সাধ্য কারও নেই। শুভ কামনা ওল্ড টাউন স্টার কাবাব।