প্রথাগত সাংসারিক জীবন চক্রে এবং বৈশ্বিক গোলকে যাপিত সময়ের গতি পথে প্যারালাল চলা একই বয়সের দু’টি মেয়ে। ভাবনায়, স্বপ্নে, আহলাদে আমোদি প্রত্যাশা কিংবা কৌতূহলী নানান জিজ্ঞাসায় দুটি মেয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একজনই। অভিন্ন সত্তা। চিরাচরিত নিষ্কলুষ কোমল শিশু রুপ। যার ঘনিষ্ঠ সহচর ‘প্রকৃতি’ নিজেই।
সময়ের গতিপথে প্রকৃতি যেমন আপন খেয়ালে রুপ বদলায়। ‘শিশু’ যদি কন্যা হয়,তাহলে ব্যকরণিক উভলিঙ্গ নিয়ম ভেঙে সময়ের চক্রে সে কন্যাও আর শিশু থাকেনা। পুরুষতান্ত্রিক বিশ্বে সে হয়ে ওঠে ভোগের একতাল লোভনীয় মাংসপিন্ড। অবোধ শিশুতেও নারী মাংসের গন্ধ খোঁজে মানসিক বিকারগ্রস্ত কিছু পৈশাচিক পুরুষ। সামাজিক অবস্থানে এইসব পুরুষদের আলাদা করবার কোন উপায় নেই। এরা মহল্লার উঠতি যুবক, আইসক্রিম বিক্রেতা, দোকানদার থেকে শুরু করে বাস কন্ডাকটর, ড্রাইভার, মোল্লা পুরোহিত, এমনকি সমাজের বিভিন্ন স্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সীমা পর্যন্ত এদের বিস্তার। অংকুরিত বীজতলার কর্তা অর্থাৎ জন্মদাতা পিতার শ্যোনদৃষ্টির নিচে তারই হাতে আঁকা চার দেয়ালের ফ্রেমে পরিকল্পিত ছকের বাইরে একটু উঁকি দিয়ে ব্যতিক্রম কিছু করবার, নিজের স্বপ্নের মতো কিছু গড়বার স্বাধীনতা নারী জীবনে যেন এক অনাকাংখিত বিলাস।
‘সোহাগী’ কর্তা শাসিত এ পংকিল সমাজেরই এক কন্যা শিশু। নতুন সাইকেল আবিষ্কারের নেশা তার শিশু সুলভ চপলতাকে জাগিয়ে রাখে অহর্নিশি। সাইকেল “ও সোহাগী” ছবিতে এক প্রতিকী রুপ। আমার কাছে মনে হয়েছে এ ছবির নির্মাতাদ্বয় সাইকেলের চাকাকে এখানে ঘূর্নয়মাণ জীবন চক্র এবং হাতের নাগালের সম্ভাবনাকে এক অসাধ্য স্বপ্নের আবিষ্কার হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। “কন্যা” বলে যেন তার নিজস্ব কোন স্বাধীন আকাশ থাকবেনা। পায়ের তলায় মাটির উঠোন কিংবা সড়কে সাইকেল চড়ে বেড়ানো তো দুরের কথা, কর্তারা পারলে মাথার উপর খোলা আকাশেও যেন সীমানা এঁকে দেয় নারীর বিচরণ ক্ষেত্রে।
সোহাগী বাংলাদেশের আটপৌরে এক সাধারণ শিক্ষিত পরিবারে মা বাবা’র সান্বিধ্যে কাকুর আদর প্রশ্রয়ে বেড়ে ওঠা স্বাপ্নিক সদ্য কিশোরী। মায়াবী মুখের চপলা, চঞ্চলা, অনুসন্ধিৎসু সোহাগীর চারপাশ ঘেরা নির্মল প্রকৃতির মতোই সে স্বভাবসুলভ নাচে, গায়। নিজের শরীরে নারীময়তার উপস্থিতি বা আলাদা গন্ধ টের পাবার আগেই সে প্রাত্যহিক জীবনের চলার পথে অনেক পুরুষের লোলুপ কামনার লোভনীয় বস্তু হয়ে ওঠে, নিজের অজান্তেই। কাকুর সঙ্গে স্কুলযাত্রি সোহাগী বাসে ওঠার সময়ে শরীরের বিশেষ প্রত্যঙ্গে কন্ডাকটরের চাপ খেয়েও যন্ত্রণা ভুলে যায়, কাকুর সাথে খুনসুটি আর চলন্ত বাসের জানালার পাশে বসে বাইরের দ্রুতগামী বাতাস ও বৃষ্টি ছোঁবার আনন্দে। এখানে প্রকৃতি, শিশু ও নারী মিলে মিশে একাকার। তাই বলে বাস ড্রাইভারের কামার্ত দৃষ্টিই বা সে এড়াবে কি করে?
একই ভাবে মোল্লা পুরোহিতদের চোখের সামনেও মেয়ের নির্বিকার হেটে চলা অবিরাম যৌনলিপ্সার লালা ঝরিয়ে যায়।
ঘরে ঘরে, দেশে দেশে, বিশ্বের প্রতি কোণে..মাংসাশী, স্তন্যপায়ী, নখ খোলা জন্তুর গুপ্ত বিচরণ। জানা কি অজানা গন্তব্য বা নিরুদ্দেশের অভিযাত্রী এ মেয়ের চলাচল প্রতি মুহূর্তেই বিপদ সংকুল, অনিরাপদ!

ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহলে নারীর প্রতি যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা মুলক ছবি হিসেবে ডঃ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও সিডনি প্রবাসী চলচ্চিত্র বিষয়ক শিক্ষক গোলাম মোস্তফা পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি “ও সোহাগী” বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার অর্জন করে এখন আলোচনার কেন্দ্রে।এ ছবির অর্জনের চেয়ে গ্রহণযোগ্যতা অনেক। বর্তমানে বাংলাদেশে পর পর কয়েকটি নৃশংস ধর্ষণ মামলা জন সমক্ষে উন্মোচিত হবার পর প্রতিবাদী ঝড়ে উন্মাতাল গোটা দেশ। বলা যায় একেবারে উপযুক্ত বা বোধন কালেই “ও সোহাগী”র আত্মপ্রকাশ। যদিও পরিচালকদ্বয়ের নির্মাণ কালে এমন প্রত্যাশা ছিলনা যে বৈশ্বিক মহামারীর এ ক্রান্তিকালেই দেশে ধর্ষণের প্রকোপ এমন বর্বরতম হিংস্রতায় রুপ নেবে।
সমালোচনাঃ
স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি “ও সোহাগী”র পরিচালক দু’জনেই স্বতন্ত্রভাবে গুরুতুল্য গুণীজন। এদের নির্মাণের সমালোচনা লেখা খুব সহজ কাজ নয়। ব্যক্তিগত ভাবে আমি দু’জনকেই জানি। খুব কাছে থেকে চেনা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রশংসিত এ ছবিটির সমালোচনা তাই লিখতে হবে একজন সাধারণ দর্শকের দৃষ্টিতে।
“ও সোহাগী”র গল্প আদিকাল থেকে অনাদিকাল চলে আসা নারীর প্রতি যৌন সহিংসতার চিরায়ত এক খন্ড চিত্র। এ গল্প চমক লাগা নতুন কোন গল্প নয় বরং আমাদের চারপাশ ঘিরে নিত্যকার জীবন চক্রের এক ফালি অভিশাপের পর্দা রূপায়ণ মাত্র।
গল্প পরিচিত হলেও এর নির্মাতাদের সৃষ্টি একজন দর্শকের চোখ গলে অন্তরে কতটা আঁচড় কাটতে পেরেছে, তা নিয়েই যদি বলি। তাহলে প্রথমেই বলতে হয়, কুকুরের ঘেউ ঘেউ দিয়ে শুরু থেকে ঈগল চোখে একটি ব-দ্বীপ পর্যন্ত ক্যামেরার কাজ ছিল দৃষ্টিকাড়া নান্দনিক টাইট ফ্রেমে টানটান বাঁধা। আবার,ধর্ষণের জন্যে কামার্ত ছায়া পুরুষটির সোহাগীর পিছু ছোটা দৌড়ের দৃশ্যটিতে যতটা সুনিপুণ মুন্সিয়ানায় বিশ্ব পরিক্রমায় কামোত্তেজিত পুরুষের সমান তালে হানা দেবার তীব্রতা ফোটানো হয়েছে, ঠিক ততটাই কাচা মনে হয়েছে কাশবনে ধর্ষিতা সোহাগীর পড়ে থাকার দৃশ্যটি।
অপেক্ষাকৃত দুর্বলের উপর শক্তিমানের যৌন প্রবৃত্তি বলপূর্বক চরিতার্থ করাই “ধর্ষণ”। স্বাভাবিকভাবেই ধর্ষিতার নিস্তেজ দেহ কামের লিপ্সা পুরণের শেষে খুবই উস্কোখুস্কো অবিন্যস্ত পড়ে থাকে। কিন্তু এ ছবিতে সোহাগীকে খুব সুবিন্যস্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার মাথার চুল ও পরিধেয় ছেঁড়া, অগোছালো ছিলনা। ফ্রকের নিন্মাংসে সামান্য রক্তের দাগ আর কাত হয়ে পড়ে থাকাই কিন্তু বাস্তবিক ধর্ষণ চিত্র হিসেবে দর্শক মনে দাগ কাটে না। ধর্ষকের প্রতিও জাগায়না তীব্র ঘৃণাবোধ!

ধর্ষককে হিংস্র হায়েনার সাথে তুলনা করা হয়,কারণ ধর্ষক মানুষ হলেও ধর্ষণের সময় তার থাকে পশু রুপ। নিজের অজান্তেই উন্মত্ত হিংস্রতার কিছু চিহ্ন রেখে যায় সে ধর্ষিতার শরীরে। সোহাগীর শরীরে শুধুমাত্র সামান্য লাল রঙ ছিটিয়ে না দিয়ে দক্ষ মেক আপ আর্টিস্ট দিয়ে কিছু ক্ষতচিহ্ন ও মায়াবী মুখটিতে কামড় ও নখের রক্তাক্ত আঁচড় দেখালে.. সভ্যতার মুখোশের আড়ালে ঢাকা ভদ্রবেশী ধর্ষকগুলোর অন্তর একটু হলেও কেঁপে উঠতো। দর্শকের সহমর্মিতাও মিলতো বেশি।
সোহাগীর গান গাইবার দৃশ্যটিতে হারমোনিয়ামের রিডে সুরের মাত্রা মতো আঙুল বসেনি সোহাগী’র। চোখে স্পষ্ট ধরা পড়েছে যে, গীত..গানে অন্যের কন্ঠ ও যন্ত্রানুসঙ্গ যোগ করা হয়েছে। পরিচালকদের চৌকস নির্মাণ শৈলীর প্রয়োগ ছাড়াও কিন্তু একটি শক্তিশালী টিম কাজ করেছে “ও সোহাগী” নির্মাণে। এ ছবির সমস্ত কৃতিত্ব যেমন তাদের। আবার এতো ক্ষুদ্র ত্রুটি সংযুক্তির দায়ভারও তারা এড়াতে পারেন না কেউই।
অজানার উদ্দেশ্যে সোহাগীর মিলিয়ে যাবার একটি দৃশ্যে মাথার উপর পরিষ্কার নীল আকাশ সত্ত্বেও ভারি মেঘের গর্জন ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড হিসেবে যোগ করার বিশেষ ব্যাখ্যা হয়তো পরিচালক দ্বয়ের কাছে থাকতে পারে। এটি কোন ইংগিতও হতে পারে। স্বচ্ছ সুন্দর জীবনে হঠাৎ দুর্যোগের আগমনি সংকেতও হতে পারে। তবে, সিনেমাতে নির্মাতাদের সবকিছুই লাইনের পরে লাইন সাজিয়ে ব্যাখ্যা করে বুঝানোর কোন নিয়মতান্ত্রিক দায়বদ্ধতা নেই। নির্মাতা তার মতো করেই গল্পের দৃশ্যায়ন বুনেন। দর্শকও তাদের নিজদের মত করে তা অনুধাবন ও মুল্যায়ন করেন।
ব্যক্তিগত ভাবে আমার চোখে, এ ছবির বিশেষ কিছু দৃশ্য নাড়া দিয়েছে। তার মধ্যে..
মেয়েটির হাতে খুব যত্নে অথচ শক্ত করে আঁকড়ে ধরে রাখা নীল পুটুলী। এ “নীল” বহুভাবে বহু কিছুই বোঝায়। নীল যেমন বেদনার রঙ,তেমনি প্রেমের প্রতীকও নীল। পশ্চিমা জগতে গোলাপি রঙ যেমন কন্যা শিশুকে রিপ্রেজেন্ট করে।তেমনি নীল হলো পুত্র সন্তান বা পুংলিঙ্গ চিহ্নিত করণ রঙ। কে জানে অই পুটুলীতে সে কাকে এতো যত্নে আগলে রেখেছিলো? কাছে থেকেও আদর না পাওয়া রাগী বাবা নাকি এক খন্ড নীল আকাশ শুন্যতা অথবা স্বপ্নের সাইকেল না বানাতে পারার অতৃপ্ত বেদনা?
কে জানে?
পাড় ভাঙা নদীর ধার ঘেঁষে সোহাগীর ছন্দ হারানো নিস্প্রভ হেটে যাওয়ার ভেতর কত অসংখ্য ধর্ষিতার মন ভাঙার নৈর্ব্যক্তিক আর্তনাদ কেঁদে গেছে নিরবে! আহা নারী! কইতে নারি,সইতেও না পারি। বোবা কান্না নিয়ে যেমন বয়ে যায়… ক্ষয়িষ্ণু নদী।
ছবিটি যেহেতু সিম্বোলিক ও মোটিফ দিয়ে সাজানো, তাই এর খুব সুনির্দিষ্ট অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা সম্ভব নয়। নির্মাতাদ্বয় ছবিটির সার্বিক আঙ্গিক উপস্থাপনা স্বেচ্ছায় দর্শকের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন।দর্শক ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে পারেন। যেমনঃ একটি মেয়ে, যাকে সব সময়ই ফ্রেমের বাঁ’দিক থেকে ডান দিকে শুধুই নির্বিকার হাঁটতে দেখা যায়। এ হাঁটা যেন উদ্দেশ্যহীন এক অনন্ত যাত্রা। হাতে খুব শক্ত ও যত্ন করে ধরা “নীল পুটুলী”! প্রকৃত অর্থে হয়তো এ মেয়ে, ও সোহাগী একজন নয়। আবার প্রতিকী অর্থে একজনই। ঘুরে ফিরে সারা বিশ্বের কন্যাশিশুর পরিচয় তো নারীই। এ নারীত্বের বলয় ডিঙিয়ে সে আর যাবেই বা কতদূর? নির্মাতার মুন্সিয়ানা এখানেই পরিষ্কার। চলমান জীবনের ভাঙা গড়ার ছবি আঁকেন তিনি।বিচার করেন না। নির্মাণ শেষে, বিচারের দায়ভার সম্পুর্ন ছেড়ে দেন দর্শকের উপরই।
ছবির শেষের দিকটায়, ড্রোন শটে, আকাশ তলে ব-দ্বীপ আকারের এক টুকরো ভূখণ্ড।মুল স্থলভূমি থেকে ধীরে ধীরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় নির্বাসিত অপরাধীর মতো। অথচ এক সময় সেও ছিল এই অখণ্ড ভূমিরই একাংশ।
জলের উপর একটি নিঃসঙ্গ হাঁসের দিকশুন্য বিভ্রান্তিকর ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য দেখে সত্যিই চোখে জল চলে আসে। প্রকৃতপক্ষে, দিনশেষে প্রতিটি ধর্ষিতাই জীবনের এমন অথৈ ঘোলা জলে নিঃসঙ্গ ভেসে বেড়ানো শ্যাওলা হয়েই বেঁচে থাকে, আত্মগ্লানির অভিশপ্ত কাল স্রোতে।
“ও সোহাগী” র নির্মাতা ডঃ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও সিডনি প্রবাসী চলচ্চিত্র বিষয়ক শিক্ষক এবং নির্মাতা গোলাম মোস্তফা। ছবিটি সম্মিলিত ভাবে প্রযোজনা করেছেন ডঃ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও অস্ট্রেলিয়ার সিডনি প্রবাসী বাংলাদেশী জনাব আবু জাহেদ, জনাব রহমত উল্ল্যাহ এবং নির্মাতা গোলাম মোস্তফা নিজে।
এ ছবির শিল্পীদের অভিনয়ের মান গতানুগতিক। তবে, কঠোর বাস্তবতার কষাঘাতে নিষ্পেষিত এ নষ্ট সমাজের যাতাকলে শত প্রতিকুলতা ডিঙ্গিয়ে “সোহাগী” চরিত্রে শিশু শিল্পীর অভিনয় ছিল খুবই প্রশংসনীয়। আমরা চলচ্চিত্রে সচরাচর প্রাপ্ত বয়ষ্কদের ধর্ষণ দৃশ্য এবং মারদাঙ্গার মত সহিংসতা দেখে অভ্যস্ত। সোহাগী’ এতটুকু বাচ্চা! সে হয়তো অনেকটা না বুঝেই এসব ভয়ানক দৃশ্যে সাবলীল থাকার চেষ্টা করে চরিত্রটি রূপায়ণ করে গেছে। অথবা বলা যায়, নির্মাতাদ্বয় Children Psychology apply করে নিপুণভাবে ওর কাছ থেকে তা আদায় করে নিয়েছেন। এটি একটি বিশেষ কৌশলও বটে। মায়ের ভুমিকা চরিত্রায়ন করেছেন যিনি। বেশ বাস্তবিক ও প্রাণবন্ত লেগেছে পর্দায় তার সংক্ষিপ্ত উপস্থিতি। তবে,সোহাগীর সাথে সবচে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যে কাকু’র। সেটি আরো বেশি হাসি,ঠাট্টা, তামাশা খুনসুটিতে উচ্ছল, পন্ডিতি, ভাবনা ও বোবা কান্নার অভিব্যক্তিতে এবং সোহাগীকে বিধ্বস্ত অবস্থায় আবিষ্কারের পর আর্তনাদ, আহাজারিতে আরো হৃদয়স্পর্শী র্জীবন্ত হতে পারতো।
বাংলাদেশের নির্মিত ছবি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পুরষ্কৃত ও প্রশংসিত হওয়া মানেই আমাদের গর্ব। বিশ্ব মানের মাপকাঠিতে উৎরে আসা স্বীকৃত স্বল্প দৈর্ঘ্য ছবি “ও সোহাগী” দেখার আগে, দর্শকদের প্রতি আমার ছোট্ট সাজেশন। ছবিটি মোবাইলে না দেখে,অন্তত বড় পর্দার টেলিভিশনে দেখবেন। কারন, ছবিটিতে একাধিক এস্টাবলিশমেন্ট শট আছে। যাতে ক্যামেরা স্থির থাকে।জুম আউট ইন বা জাম্প কাটে কোন ক্লোজ আপ শট নেই। সেখানে মোল্লা, পুরোহিত’দের মুখের অভিব্যক্তি সহ অনেক সুক্ষ্ম কিছু বিষয় ছোট পর্দায় চোখে পড়বে না।
১০/১০/২০২০.
এইচ. এ ববি
সংস্কৃতিজন, সমালোচক ও লেখক
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া।