প্রশান্তিকা ডেস্ক: প্রখ্যাত বর্ষীয়ান কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি…রাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮৬ বছর। একাত্তর টিভি সূত্রে জানা গেছে, আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় তাঁর বনানীর বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে ও অসংখ্য নাতি নাতনী, গুনগ্রাহী এবং ভক্ত রেখে গেলেন। তাঁর বড় ছেলে চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, ছোট ছেলে ক্যানবেরা প্রবাসী স্থপতি ফরহাদুর রেজা প্রবাল, দুই মেয়ে রন্ধন বিশেষজ্ঞ কেকা ফেরদৌসি এবং ফারহানা কাকলী। রাবেয়া খাতুনের মৃত্যুতে সাহিত্য, সংস্কৃতি জগতে এক শোকের ছায়া নেমে আসে।
তিনি ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বরে ঢাকার বিক্রমপুরে তার মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় অবস্থিত ষোলঘর গ্রামে৷ তাঁর বাবা মৌলভী মোহাম্মদ মুল্লুক চাঁদ এবং মা হামিদা খাতুন। আরমানিটোলা বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা (বর্তমানে মাধ্যমিক) পাস করেন ১৯৪৮ সালে। তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমী পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার সহ অসংখ্য পদক ও সম্মানে ভূষিত হন। তিনি হানিফের ঘোরা, মোহর আলী, মেঘের পর মেঘ সহ অসংখ্য উপন্যাস লিখেছেন।
রাবেয়া খাতুন রচিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক জনপ্রিয় উপন্যাস ‘মেঘের পর মেঘ’ অবলম্বনে বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র ‘মেঘের পরে মেঘ’ এবং ২০১১ সালে তার আরেকটি জনপ্রিয় উপন্যাস ‘মধুমতি’ অবলম্বনে পরিচালক শাহজাহান চৌধুরী একই শিরোনামে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র ‘মধুমতি’। এছাড়াও অভিনেত্রী মৌসুমী ২০০৩ সালে তার লেখা ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ অবলম্বনে একই শিরোনামে নির্মাণ করেন একটি চলচ্চিত্র।
লেখালেখির পাশাপাশি রাবেয়া খাতুন শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা করেছেন। এ ছাড়া তিনি বাংলা একাডেমির কাউন্সিল মেম্বার।তিনি ছিলেন জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের গঠনতন্ত্র পরিচালনা পরিষদের সদস্য, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরিবোর্ডের বিচারক, শিশু একাডেমির কাউন্সিল মেম্বার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘নতুন কুড়ি’র বিচারক।
১৯৫২ সালের ২৩ জুলাই সম্পাদক ও চিত্রপরিচালক, বাংলাদেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘প্রেসিডেন্ট’-এর পরিচালক এটিএম ফজলুল হকের সঙ্গে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয়।