
প্রশান্তিকা ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুতে আমরা আশংকা করেছিলাম, অস্ট্রেলিয়ায় হাজার হাজার মানুষ মারা যাবে। অবস্থা সেদিকে যায়নি, আমরা সামাল দিতে পেরেছি। সম্প্রতি ভিক্টোরিয়া রাজ্যে করোনা আবার আঘাত হানলেও আমি বিশ্বাস করি সেটাও আমরা সামাল দিতে পারবো। তিনি বলেন, “ভিক্টোরিয়াকে জয়ী হতেই হবে। কেননা, ভিক্টোরিয়া না জিতলে অস্ট্রেলিয়াও জিততে পারবেনা। আমরা প্রথম দফায় সামলিয়ে উঠেছি, এবারও উঠবো।”
ভিক্টোরিয়ার প্রাদুর্ভাবের কারণে দুই দিন আগে রেকর্ড সংখ্যক ৫০৫ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় ১৩৩০১ জন শনাক্ত হয়েছেন এবং ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় সারা দেশে ৪২৩ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং এই মুহূর্তে ৪ হাজারের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ এ ভূগছেন। নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৪৯ জনে দাঁড়িয়ে দুই রাজ্য সমান অবস্থানে রয়েছে। ভিক্টোরিয়ার রাজধানী মেলবোর্নে লকডাউন করা হয়েছে। সেখানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভিক্টোরিয়া এবং নিউ সাউথ ওয়েলস সীমানা পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।

গতকাল প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেল নাইনের কারেন্ট আ্যফেয়ার্সের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়া সহ অন্যান্য রাজ্যে করোনা আঘাত হানলেও আমাদের এখন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
করোনার কারণে অস্ট্রেলিয়ায় প্রণোদনা বা অর্থনৈতিক সহায়তা-জবকিপার এবং জবসিকারের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে জবকিপার পেমেন্ট আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত দেয়া হবে। এরপরও বাড়ানো হবে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার প্রত্যাশা অস্ট্রেলিয়া এই সময়ের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। আমাদের স্বাস্থ্য খাতকে বেশি গুরত্ব দিতে হবে। যদিও এটা করতে আমাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের অক্সফোর্ডে সম্প্রতি ভ্যাকসিন আবিস্কার সহ অস্ট্রেলিয়া এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ভ্যাকসিন আবিস্কার প্রচেস্টা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিনের সফলতা আসার আগ পর্যন্ত আমাদের সামাজিক দুরত্ব বজায় এবং মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে যেতে হবে। এর সঙ্গে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যও চালিয়ে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন আসার আগ পর্যন্ত সেভাবে বিদেশ ভ্রমণ করা উচিৎ হবেনা। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ বছরের শেষের দিকে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
ট্রেজারার জশ ফ্রাইডেনবার্গ বলেন, করোনার কারণে অস্ট্রেলিয়ায় বেকারত্ব ১১ শতাংশের উপরে রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে প্রতি ১০ জনের একজন চাকুরী হারাবেন। দেশের অর্থনীতি উদ্বৃত্ত থেকে এখন ঘাটতিতে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরে এই প্রথম অর্থনৈতিক ধ্বস এতো বেড়ে গেছে।