করোনা মহামারীতে প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। আমার এ লেখা বিশ্বে করোনায় জীবন দানকারী সকলের স্মৃতির উদ্দেশে উৎসর্গীত।
আমাদের প্রাত্যহিক জীবন চলছে স্বাভাবিক গতানুগতিক ধারায়। করোনায়ও এমনি করে গেরিলা কায়দায় তার মিশন চুপিসারে চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। তাতে থেমে নেই বিনোদন ভ্রমণ ও প্রমোদ বিলাস। এ সব দেখে বুঝাই যাচ্ছে না আমরা মহামারী প্রলয়ের থাবায় আছি। স্বাস্থ্যবিধি পালনেও নেই কোন তেমন গুরুত্ব। যে যার মত করে চলছি।
আমার বয়স্ক বড় ভাই-ভাবী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আল্লাহর অশেষ দয়ায় সেরে ওঠেছেন। ভাইয়ের ডায়াবেটিস, কিডনিজনিত জটিলতা ছিল। তখন বুঝেছি দুর্ভোগের কষ্ট কাকে বলে? দুশ্চিন্তায় কত রাত নির্ঘুমে কাটাতে হয়েছে আমাদের। সব সময় একটা অশুভ আশংকা আমাদের তাড়া করত। মোবাইলে রিং বাজলেই বুকটা কেঁপে ওঠত। এই বুঝি দুঃসংবাদ পাচ্ছি। তাছাড়া আমাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। আবার অনেকেই সুস্থও হয়েছেন।
করোনায় মারা যাচ্ছে, জ্ঞান-গুণী ব্যক্তিত্ব, অমিত সম্ভাবনায় তরুণ- তরুণী, সম্মুখসারীর করোনা যোদ্ধা অভিজ্ঞ ডাক্তারাও। আর সাধারণ মানুষও মারা যাচ্ছেন। মূলত কেউই রেহাই পাচ্ছে না করোনার বিষ নিঃশ্বাস থেকে। তাই মনটা ভীষণ ভারাক্রান্ত। আনমনা হয়ে যাই প্রায়ই। কারণ, প্রতিদিনকার মৃত্যুর খবর শুনতে শুনতে ক্লান্ত! এখন আমার সমস্ত অস্থিত্ব জুড়ে চেতন অবচেতন মনে কেবলি করোনায় শহিদদের কথা ভেবে কষ্ট পাচ্ছি ! এমন নিদারুণ অস্থিরতার মধ্যে ভাবছি, এ ক্যামন চলে যাওয়া? এই অলোকসামান্য পৃথিবীতে যৌবনের রস-মাধুর্য আর আলো ঝলমল জীবনে দোল-দোলনায় দোল খাওয়ার কথা ছিল যাদের। জ্ঞানের আলোয়-আলোয় অনন্ত সম্ভাবনাময় জীবনকে কর্মোদ্যমে প্রজ্জ্বলিত করার কথা ছিল যাদের। স্রষ্টার সৃষ্টিকে ভালোবাসায়, সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করার কথা ছিল যাঁদের। তাঁদের কী না এমনি করে চলে যেতে হলো নিয়তির অলিখিত নির্দেশে ! এমনই শোকসন্তপ্ত জবুথবু মুহূর্তে প্রথিতযশা খ্যাতিমান লেখক হুমায়ুন আজাদের লেখার কথা মনে পড়ে গেল। তিনি বলেছেন, “পৃথিবীটা এমনি। সব মানুষের এক অসমাপ্ত কাহিনী। কোন মানুষই তার জীবনের সব ঘটনা, সব কাজ, সব দায়িত্ব শেষ করে যেতে পারে না, অনেকখানি বাকী থেকে যায়। ঠিক খেলার মাঠের দর্শকের মতো। দর্শকরা যেমন অনেকেই খেলা শেষ হওয়ার আগেই খেলার মাঠ ছেড়ে চলে যায়। মানুষকেও জীবনের অনেকটা বাকী থাকতেই ডাক আসলে চলে যেতে হয়। খেলার মাঠের দর্শকরা যায় নিজের প্রয়োজনে আর মানুষ যায় প্রকৃতির অমোঘ টানে।”
এ মুহূর্তে রহমতউল্লাহর সেই বাণীটি মৃত্যু সম্পর্কে আমরা আরো একটা স্বচ্ছ ধারনা পাব। তা হচ্ছে, “জীবনের চূড়ান্ত অবলুপ্তিই হচ্ছে মৃত্যু! মৃত্যু মানে জীবন থেকে ফোরসিবলি রিটায়ারমেন্ট! মৃত্যু মানে অনন্তকালের অনন্ত শুন্যতায় মিলিয়ে যাওয়া!” ভেতরটা যেন এক অজানা আশংকায় অতিকায়ভাবে ধুকধুক করে ওঠছে। সত্যিই তো।
মৃত্যু! মৃত্যু এক অপ্রতিরোধ্য কঠিন বাস্তবতা!! মৃত্যু মানে হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন-কল্পনার রোমান্টিক পৃথিবী! মৃত্যু মানে রেখে যাওয়া কিছু বেদনাবোধ! মৃত্যু মানে কিছু আক্ষেপ,কিছু অপূর্ণতা, অপ্রাপ্তি! মৃত্যু মানে অভিজ্ঞতাহীন অন্ধকার এক অনিঃশেষ নতুন জগতের সূচনা।
এই একটা বিষয়ে পৃথিবীর তাবৎ মানুষ একমত যে, জীবনের সবচেয়ে নিশ্চিত ঘটনা হচ্ছে মৃত্যু! কিন্তু সময়টা অনিশ্চিত! এটাই চিরায়ত,শাশ্বত, সত্য। তবে মৃত্যুর তালিকা কোন নিয়ম মেনে চলে না। বয়সের মাপকাঠিতে যাচাই হয় না। যখন যার ডাক আসে সিরিয়াল ব্রেক করে চলে যেতে হয়।
তাই তো এ পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ নেই স্বজনের মৃত্যুর শোকে কাতর হোন না। জল্লাদ-খুনি এমন কী ইস্পাত-কঠিন হৃদয়ও স্বজনের মৃত্যুতে ব্যথিত হোন। কিংবা লৌহ মানবও বিমর্ষ ও ভীতস্ত্রস্ত থাকেন। কবি মাইকেলের “মেঘনাদবধ কাব্য” এমনি সন্তানের মৃত্যু বেদনায় ব্যথিত এক পিতার করুণ আর্তনাদের মর্মচেরা কাহিনীর উদাহরণ আছে। রাবনের বীর সন্তান বীরবাহু যুদ্ধে নিহত হয়। একজন ভগ্নদূত এসে রাবনকে এ খবর দেয়। পুত্রশোকে রাবন কাঁদছেন। তাঁর চোখ থেকে অবিরল ধারায় ঝরছে বেদনাশ্রু। অগাধ ধৈর্যশীল,পরাক্রান্ত রাজা রাবণের পাশে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করছে তার মন্ত্রী সারণ। রাবণ পুত্রশাকে কাতর? তাঁর চোখে বেদনাশ্রু? এটা রাবণ সহজে মেনে নিতে পারেন নি। তাই রাবণকে বললেন – মহারাজ, আপনি মহান, এই বিশাল রাজ্যের অধিপতি, ধারক। পুত্রশোকে অশ্রুবিসর্জন কী আপনার সাজে? বজ্রঘাতে যদি পর্বতের শৃঙ্গ উড়েও যায়, তাতে কী পৃথিবী অস্থির হয়? পর্বতের শৃঙ্গরূপ আপনার বীরপুত্র নিহত। কিন্তু তাতে আপনার কি বিচলিত হওয়া সাজে? শুনে রাবণ বললেন, “সবই বুঝি। সবই অর্থহীন জানি, কিন্তু জেনেশুনেও মন যে কাঁদে, সে জন্যেই তো আমরা মানুষ। হয় তো আমার গলায় বেদনার সুর ঐ কারণেই। আমি মানুষ বলেই।”
কেন এ গল্পের অবতারণা করলাম, কারণ, স্বজনমৃত্যু শোকে কাতরপ্রায় ব্যক্তিকে সেই শোক তপ্ত মুহূর্তে কখনো সান্তনায় তাদের বেদনাদগ্ধ হৃদয়কে আশ্বস্ত করা যায় না। কেননা কিছু কিছু মৃত্যু মানুষের জীবনে আচমকা এমন কিছু নির্মম, রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি করে। যা তছনছ করে দেয় তাদের বর্তমান, ভূত-ভবিষ্যত । তাছাড়া, মানুষ যত শক্তিমানই হোক, স্বজনদের মৃত্যুতে নার্ভাস শক বা স্নায়বিক আক্রমণ তাকে দুর্বল করাটা স্বাভাবিক। তারপরেও আমাদেরকে অবধারিত বিধির এই বিধান মেনে নিতেই হয়। কারণ,আল্লাহ পাক বলেছেন, “প্রত্যেক জীবকেই একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।” সুতরাং মৃত্যুকে ঠেকানোর ক্ষমতা কারোরই নেই। আর মৃত্যু মূলত অবশ্যম্ভাবী একটা বিষয় এবং এটা জীবনে একবারেই হয়। তাই বলছি, আজ হয় তো আপনার আপনজন মারা গেছেন, আপনিও একদিন মারা যাবেন। আমরা সবাই মারা যাব। দু’দিন আগে কিংবা পরে। জীবনের পাশাপাশি মৃত্যু এক অনিবার্য মহাসত্য! তাই তো এ পৃথিবীতে অনন্য মানুষ যাঁরা তাঁরা কখনো মৃত্যুকে ভয় পায় না। মৃত্যুকে তারা জীবনের পরিসমাপ্তি মনে করে না। বরং জৈবিক মৃত্যুকে তারা নতুন জীবনের সূচনা মনে করে। মানুষ মূলত মহাজাগতিক মুসাফির। তাই এই জৈবিক ভ্রমণ শেষ করে সে শুরু করে আরেক ভ্রমণ,সেটা হচ্ছে পরকাল। আর মৃত্যুর মাধ্যমেই সূচিত হয় পরকালের অন্তহীন ভ্রমণের শুভযাত্রা।
আসলে আমাদের পার্থিব দেহটা বায়ু ও মাটি থেকেই এসেছে এবং মৃত্যুর পর সেখানেই ফিরে যায়। হয়তো আমাদের মন এবং আত্মার অংশটাও কোন একটা রহস্যজনক স্থানে চলে যায়। কোথায় যায় সেই উৎসটা কেউ আবিষ্কার করতে পারে নি। মৃত্যুর মতো এই বিষয়টাও স্রষ্টা ব্যতীত মানুষের অজানা। তাই যখন কোন প্রিয়জনের মৃত্যু হবে তখন এই বলে নিজেকে আশ্বস্ত করা উচিত যে, সে তার উৎসেই ফিরে গেছে। সুতরাং বৃথা শোক করে অযথা নিজেকে কষ্ট দেয়া কেন? সুতরাং আর দেরি না করে এই সত্যটা যত সহজভাবে গ্রহণ করবেন ততোই আপনি বেঁচে থাকার নতুন অর্থ খুঁজে পাবেন।
আপনি এটাও জানেন, যতই দুঃখ করুন না কেন, মৃত্যু ব্যক্তিকে কিছুতেই ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। বরং আপনার দুঃখ-শোকের তীব্রতার কারণে আপনি শীঘ্রই অসুস্থ হয়ে পড়বেন। এতে আপনাকে যারা ভালোবাসে তাদের জীবনকে আরো ভারাক্রান্ত করবে। কঠিন বাস্তবতা এই যে, এক সময় দেখবেন আপনাকে সময় দেওয়ার মতো সময় তাদের থাকবেনা। কারণ, এ পৃথিবীটা হচ্ছে কর্মক্ষেত্র। মানুষকে জীবনও জীবিকার তাগিদে কাজ করতে হয়। তাই পিতার লাশ ফেলে রেখে সন্তানকে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হয়। ভিশার মেয়াদ শেষ বিধায় মুমূর্ষু পিতাকে রেখে সন্তানকে চলে যেতে হয় কর্মস্থলে। তাছাড়া শোকের মধ্যেও ক্ষুধা মানুষকে রেহাই দেয় না। ক্ষুধা একজন শাসকের চেয়েও মহাপরাক্রমশালী। তাই তো পুত্রের লাশ সামনে রেখে বৃদ্ধ পিতাকে খাবার গ্রহণ করতে বাধ্য করে। তাই বিনয়ের সাথে বলছি, এবার একটু শান্ত হোন, ধৈর্য ধরে শুনুন। আমাদের দেহ নশ্বর কিন্তু আত্মা অবিনশ্বর। তাই আপনার উচিত মৃত্যু ব্যক্তির আত্মার চিরশান্তি ও প্রশান্তি কামনায় নিয়মিত দোয়া, প্রার্থনা এবং সৎকর্ম করা।
তাছাড়া, মানুষের সৃষ্টিশীল কাজের স্পৃহা তখনি জাগ্রত হয় যখন তার মধ্যে বড় কোন বেদনার জন্ম ঘটে। তাই বলছি, আপনার বেদনাকে, শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করুন এবং তা সৎকর্মে, সৃষ্টিশীল কাজে ব্যয় করুন। কাজ মানে এবাদত। যারা সৎকর্মে নিবেদিত তারা শোক-তাপমুক্ত, সজীব ও প্রাণবন্ত থাকেন। কেননা কর্মে নিবিষ্ট মন থাকে বৃষ্টিস্নাত ও পুত-পবিত্র। আসলে কাজের ভেতর দুশ্চিন্তার মাকড়সার জটিল জালের অসুস্থ আবর্ত তৈরি হতে পারে না। কারণ, কাজ করার সময় আনন্দ ও উদ্ভাবনার মন এতটাই আকন্ঠ ডুবে থাকে যে অন্যকিছু ভাবনা মাথায় ঢুকার সুযোগই পায় না। ব্যস্ততার এমন বিনোদনে আপনি খুঁজে পাবেন আপনার প্রিয়জনের অস্তিত্ব। এতে তার আত্মাও শান্তি পাবে আর তার আত্মা শান্তি পেলে আপনিও প্রশান্তি পাবেন।
মানুষ মারা যায় কিন্তু তার স্মৃতি মরে না। একে ধরে রাখা যায়। তাই তাঁর স্মৃতিকে স্মরণীয় করার অভিপ্রায়ে তাঁর আদর্শ, তাঁর কথা, তাঁর পছন্দের কাজ করতে পারেন। কিংবা তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে যে কোন মানব-কল্যণমূলক কাজ করে তাঁর স্মৃতিকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখতে পারেন। এতে আপনার কাজের মধ্যেই আপনার প্রিয়জন বেঁচে থাকবেন। ফলে আপনি তাতে খুঁজে পাবেন মানসিক শান্তি-স্বস্তি ও প্রশান্তি । তারপরেও কোন এক স্মৃতিভাবাতুর মুহূর্তে যদি দেখেন, আপনার আপনজনের বিয়োগব্যথা আপনার হৃদয়কে দুমড়ে-মুচড়ে দিচ্ছে। তখন ভেতরের যত জমাটবদ্ধ দুঃখগুলো আটকে ছিল তা বাঁধভাঙ্গা স্রোতের মতো বেরিয়ে আসতে দিন। আর জীবনের যত কান্না জমে আছে তা অবলীলায় প্রকাশ পেতে দিন। কাঁদুন! ইচ্ছেমতো কাঁদুন! প্রয়োজনে চিৎকার করে কাঁদুন। কান্নার প্রকাশ যত তীব্র হবে আপনার মন ততো দ্রুত হালকা হয়ে ওঠবে। কান্না শেষে আপনার বাকী যন্ত্রণাটুকু প্রকাশ করার জন্য একটা নীরব কক্ষ বেছে নিন। ওযু করে হাঁটু গেড়ে বসুন। আপনার যত কষ্টের কথা, যত যন্ত্রণার কথা অকপটে পরম করুনাময়ের কাছে খুলে বলুন। কেননা, প্রতি মুহূর্তে আমরা তাঁরই দয়ায়, তাঁরই আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে বেঁচে আছি। তাঁকে ব্যতীত সুখ ভোগ করা বা দুঃখ অতিক্রম কখনই সম্ভব নয়। তাহলে কেন আমরা দুঃখ কষ্টের বোঝা একা বয়ে বেড়াচ্ছি? কেন আমরা ভুলে যাই সৃষ্টিকর্তা তো একজন আছেন। যিনি এ জগত সংসার পরিচালনা করছেন। আসলে, আমরা দুঃখ-কষ্টের বোঝা একাই বহন করার চেষ্টা করি। আর তাঁর কাছে খুলে বলি না বলেই আমাদের যন্ত্রণা এত বেশি। তাই অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে গভীর আস্তা ও বিশ্বাস নিয়ে প্রার্থনায় মনোনিবেশ করুন। এতে আপনার অন্তর্নিহিত শক্তি জাগ্রত হবে। আর বাস্তবকে মেনে নেওয়ার মতো এক অলৌকিক মনের জোর ফিরে পাবেন আরো ফিরে পাবেন আত্মবিশ্বাসও।
আজ সারা বিশ্বে কতশত অমিত সম্ভাবনাময় জীবনকে কেড়ে নিচ্ছে করোনায়। কেড়ে নিচ্ছে লাখো-লাখো সাধারণ মানুষের জীবন। এতে কত পরিবার অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছে। কত পরিবার নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। প্রতিদিন ঘনিষ্ঠ কারো না কারো মৃত্যুর খবর পাচ্ছি। ভাবছি, স্বজনমৃত্যু শোকে সব ভেঙ্গে-পড়া আত্মবিশ্বাস খোয়ানো মানুষগুলোর কথা। তারা কতই না দুঃসহ যন্ত্রণায় মর্মান্তিক দিন কাটাচ্ছে। যাঁরা স্বজন বিচ্ছেদের মৃত্যুবেদনাবিদ্ধ হয়েও বেঁচে থাকার প্রয়োজনে বেঁচে আছেন। বেঁচে আছেন দুঃসহ স্মৃতিকে বুকে লালন করে। তাঁদের প্রতি আমি আমার অন্তস্তল থেকে আবেগ মথিত সহমর্মিতা প্রকাশ করছি।
সবশেষে, যাঁরা করোনায় মৃত্যু বরণ করে শহিদের মর্যাদা পেয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককেই আমার বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি! আমি তাঁদের বিদেহী আত্মার বেহেস্ত নসীব প্রার্থনা করছি। আর আমার এই লেখা বিশ্বে করোনায় শহীদ হয়েছেন যাঁরা তাঁদেরকে উৎসর্গ করলাম।
পরিশেষে আল্লাহ পাক যেন শোকসন্তপ্ত পরিবারের শোক সহ্য করার শক্তি দিন এ কামনা করছি। আমিন।
পিয়ারা বেগম
কবি, কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক।
নারায়ণগঞ্জ, বাংলাদেশ।