
প্রশান্তিকা ডেস্ক: ভয়াল করোনা এবং বার্ধক্য জনিত অন্যান্য রোগের কাছে পরাজিত হয়ে চলে গেলেন বরেণ্য সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী। আজ শনিবার সকালে ঢাকার বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তাঁর ছেলে সাগর লোহানী গনমাধ্যমকে বলেন, গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মায়ের কবরে তাকে দাফন করা হবে। মৃত্যুকালে তিনি এক ছেলে ও দুই মেয়েকে রেখে গেলেন।
তাঁর মেয়ে ঊর্মি লোহানী বলেন, “বাবার শরীরে কোভিড-১৯ পজিটিভ এসেছে। এছাড়া ফুসফুস ও কিডনির জটিলতা ছাড়াও হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের সমস্যাতেও ভূগছিলেন।
শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রথম আলো সূত্রে জানা গেছে, তাঁর পরিবার গতকাল কোভিড টেস্টের পজেটিভ ফলাফল হাতে পেয়েছিলেন এবং এ পরিস্থিতিতে প্রথমে কামাল লোহানীকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেখানে কোনো সিট পাওয়া যায়নি।
আজ তাঁর লাশ সিরাজগঞ্জ নিয়ে যাওয়ার আগে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠি চত্বরে আনা হয়। এখানে তাঁকে সীমিত আকারে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
ভাষা সংগ্রাম থেকে মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তীতে গণসংগ্রামের অন্যতম সংগ্রামী ছিলেন কামাল লোহানী।স্বৈরাচার বিরোধী আন্দােলন,ঘাতক-দালাল বিরোধী সংগ্রামেও সরব ছিলেন তিনি।
দীর্ঘ সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক জীবনে তিনি শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক, স্বাধীন বাংলা বেতারের বার্তা বিভাগের প্রধান, উদীচীর সভাপতি, ছায়নটের সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এবং দৈনিক সংবাদ সহ প্রখ্যাত কয়েকটি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতারে তিনিই প্রথম বিজয়ের সংবাদ পাঠ করেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, “আমরা বিজয় অর্জন করেছি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমাদের মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছে।” তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।