কিশোয়ার চৌধুরী, বাংলাদেশী বাবা এবং ওপার বাংলার বাঙালী মায়ের অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশী মেয়ে। যার জন্ম অস্ট্রেলিয়ায় কিন্তু কথা, কাজে সব জায়গায় সে পরিপূর্ণ এক বাঙালি মেয়ে। মেলবোর্ন থাকে সে আমিও আছি সেখানেই। অস্ট্রেলিয়ান টিভি চ্যানেলের সবচেয়ে জনপ্রিয় শো মাস্টারশেফ এর একজন ফাইনালিস্ট। আজ সে টপ থ্রি হয়েই বাসায় ফিরে এসেছে। কিন্তু আমার কাছে কিশোয়ারই চ্যাম্পিয়ন।
গতকাল ছিল চূড়ান্ত পর্বের প্রথম ধাপ। তার এক পর্বের সেরা ডিশের একটি ছিল- আলু ভর্তা, পান্তা ভাত (স্মোকী রাইস), মাছ ভাঁজা… যা দশে দশ পেয়ে তিন বিচারকের কাছ থেকে ৩০ পেয়েছে। মিষ্টি পান, চটপটি ফুসকা, খিচুরি, মাছের ঝোল সহ সে আর যা যা বাংলাদেশী খাবারকে তুলে এনেছে… তা নিয়ে বেঁচে থাকলে বলবো ক্ষণ!
তবে আজ যা বলতেই চাই, কিশোয়ার চৌধুরী
আমাদের আত্নপরিচয়ের গুরুত্ব নতুন করে অনুধাবন করার অনুপ্রেরণামূলক এক নাম।
খাবার সংস্কৃতি, যা কিছু আমাদের শেকড়, আমাদের নিজস্বতা, স্বকীয়তা, বাংলার, বাংলাদেশের, তা প্রথমবারের মত অস্ট্রেলিয়ার বুকে কেউ এত গৌরবের সাথে অনন্য এক উচ্চতায় তুলে আনলেন।
প্রবাসী বাংলাদেশী, অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশীদের কাছে তো বটেই কিশোয়ারের নাম বাংলাদেশ সহ পুরো বিশ্বে বাংলাদেশীদের কাছে যে নতুন পরিচয় বহন করছে তা দেখে গত কদিন ধরেই কিশোয়ারের শহরে থাকা বাংলাদেশী হিসেবে অনেক বেশী রোমাঞ্চিত হয়ে আছি আমি নিজেও লাখো বাংলাদেশীদের একজন হয়ে।
কিশোয়ার, এক সাহসের নাম, ভালোবাসার নাম এবং আমাদের কাছে মাস্টারশেফ, অস্ট্রেলিয়া ২০২১ টপ থ্রী এক ফাইনালিস্ট হয়েই সে চ্যাম্পিয়ন!!
আজ আনুষ্ঠানিক ফাইনালে সে দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছে এটার তেমন কোন গুরুত্ব নেই আর… সে যে নতুন ইতিহাস রচনা করেছে তা লিখতে আমাদের অনেক লম্বা সময় লাগবে এবং এটা একটা কেবল স্বর্ণালী অধ্যায় হয়েই থেকে যাবে!
কিশোয়ার যে পথ দেখিয়ে গেছে আমি নিশ্চিত এই পথে কাল, পরশু অন্য অনেকেই হেঁটে যাবে বহুদূর। আহ কিশোয়ার, ইউ জাস্ট মেইড আস সো সো প্রাউড, লাভ ইউ!!
নাদেরা সুলতানা নদী
সহযোগী সম্পাদক, প্রশান্তিকা।
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া।