ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল মুখরিত পিঠা উৎসবে

  
    

প্রশান্তিকা ডেস্কক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল মাতৃভাষা, বাংলা সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্যধারণচর্চার পাশাপাশি আবহমান বাংলার খাদ্য তালিকারঅপরিহার্য অনুষঙ্গ পিঠাপুলিকে নতুন প্রজন্মের সাথে পরিচয় করিয়েদিতে চায়দেশ ছেড়ে আসা পিঠার স্বাদ বঞ্চিত বাঙালির রসনা তৃপ্ত করতে এবং বাংলা স্কুলের সার্বিক উন্নয়নে তহবিল সংগ্রহ করতে স্থানীয় সময় রবিবার ১৯শে জুন ২০২২ সিডনির গ্রেগ পারসিভালকমিউনিটি হল, ইংগেলবার্নে বসেছিল এবারের পিঠা উৎসবের আসর।  বিগত বছর গুলিতে পিঠা উৎসবের ব্যাপক সাড়া পাওয়ার প্রেক্ষিতে ২০১৯ থেকে এই উৎসব স্কুল প্রাঙ্গনের বাইরে আয়োজিত হচ্ছে । গেল দুবছর করোনা মহামারীর জন্য পিঠা উৎসব আয়োজন সম্ভব হয়নি। 

সকাল দশটায় বাংলা স্কুল সাধারন সম্পাদক কাজী আশফাক রহমান  সবাইকে স্বাগত জানানএর পরপরই পিঠা উৎসবের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাংলা সংগীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী সেলিনা আজাদ। 

অত্যন্ত পরিপাটি এবং চমৎকার আয়োজনে রকমারি পিঠার সমাহারে এবারের উৎসব সকাল থেকেই ব্যাপক উপস্থিতির ইংগিত দেয়বেলা বাড়ার সাথে সাথে সিডনির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যোগ দেয়া ভোজনরসিকসংস্কৃতি প্রেমিক মানুষের কল কাকলিতে উৎসব স্থল মুখরিত হয়ে ওঠে। 

পিঠা উৎসবের পুরো সময় জুড়ে ছাত্রছাত্রী, স্কুলের নিজস্ব শিল্পী এবং সিডনির প্রখ্যাত শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমঞ্চস্থ হয়শুরুতেই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের একটি আকর্ষণীয়পরিবেশনা উপস্থিত সবাইকে মোহমুগ্ধ করেএককবৃন্দ আবৃত্তি, সমবেত সংগীত, একক সংগীত, একক নৃত্যপাঠ্য বই থেকে বাংলাদেখে পড়াসব শাখাতেই ছাত্রছাত্রীরা তাদের পারদর্শিতার ছাপরাখতে সক্ষম হয়বৃন্দ আবৃত্তিতে অংশ নেয় রাইসা, ইয়ারা, ইয়াশফীন, নুসাইবা, কাইজান, সোহারদিতি, আদিল, তাইশা, সাফা, রেহনুমা, অলিভিয়া, মারজান, অর্ণা, রাইয়ান, আজনিহা, জাফিরা,নাশভা, অস্কার, নুসায়বা, নাজিফা, আদিয়ান, আমিনা, অনিরুদ্ধ, মাহরুস, রাকিনআনিকা।  দৈত্ব আবৃত্তি করে মারজানঅর্ণা এবং রাকিনআনিকা। 

একক আবৃত্তিতে অংশ নেয় ইয়াশফিন, রাইনা, নুসাইবা, রুখসার, রাইসা, রাজীন, আনিকা,আলিশা ও দৃপ্তবাংলা বই দেখে গল্প পড়েশোনায় ইয়ারারুশনান।  একক সংগীত পরিবেশন করে এলভিরা, রেহনুমাসাফা।  একক নৃত্যে অংশ নেয় মেহুলি ও বাংলা পাঠশালার ছাত্রী তারা । 

পরবর্তীতে স্কুলের নিজস্ব শিল্পী এবং আমন্ত্রিত সিডনীর বরেণ্য  শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা দর্শক শ্রোতাদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেবেহালায় রবীন্দ্র সংগীতের সুর সৃষ্টি করেন বাংলাস্কুলের শিক্ষক আবীর হারুণী। সংগীতের মূর্ছনায় সবাইকে মুগ্ধ করেন ফারিয়া, নাজিম, তৃপ্তি খান, সাজ্জাদ আহমেদ, অমিয়া মতিন, ঐন্দ্রিলা আহমেদ, আনিসুর রহমান ও  রোকসানা বেগম এবং মিঠু ও দিনা ইভানা। 

দোতারায় আবহমান বাংলার মেঠো সুর তুলে আনেন তারিক আহমেদআবৃত্তিতে অংশ নেন মৌমিতা চৌধুরীশাহিন শাহনেওয়াজশুদ্ধ সংগীতের শীর্ষ নাম প্রতীতির পরিচ্ছন্নমনোমুগ্ধকর পরিবেশনা অনুষ্ঠানে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেননৃত্যেঅংশ নেয় ঐশীপ্রতীতি। কৌতুক অভিনেতা ওয়াসিফ আহমেদ শুভ’র হাস্যকৌতুক উৎসবের বৈচিত্র্যময় মেজাজের পূর্ণ প্রতিফলনঘটায়সব শেষে আশির দশকের বাংলা বাণিজ্যেক চলচ্চিত্র ছায়াঅবলম্বনে একটি হাসির নাটক উপস্থিত দর্শকদের শেষ বেলায় নির্মলআনন্দ দিতে সক্ষম হয়। 

নাট্যাভিনেতারা হলেন মসিউল আজম খান স্বপন, মহসিন খান, তারিক আহমেদ, ওয়াসিফ আহমেদ শুভ, মাসুদ পারভেজ, ফারহানাবিথিআহমেদ সাগরক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল অধ্যক্ষ রুমানাখান মোনা বাংলা স্কুলের কার্যক্রম তুলে ধরে সবার সন্তানদের বাংলা স্কুলে নিয়ে আসতে অনুরোধ করেন। 

বরাবরের মতো এবারও অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল সেরা বাঙালি সাজের জন্য পুরস্কারপুরুষ, মহিলা, ছেলেমেয়ে এইচারটি শাখায় বাঙালি সাজ পোষাকের জন্য এই পুরস্কার দেয়া হয়

অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন এবারের পিঠা উৎসব আহবায়ক নাজমুল আহসান খান, সঞ্চালনায় ছিলেন বিশাখা পাল, অনিতা মন্ডল, শায়লা ইয়াসমিন নুসরাত, মৌমিতা চৌধুরী, ফারহানা বীথি ও আজীম সাগরশব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন দেশবরেণ্য সংগীতজ্ঞ সিরাজুস সালেকিন এর নেতৃত্বে প্রতীতির শব্দ প্রকৌশলী বৃন্দশিল্পনির্দেশনাপরিকল্পনায় ছিলেন ফায়সাল খালিদ শুভ, কারিগরিনিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় ছিলেন রাফায়েল রোজারিও এবং সহায়তায়ছিলেন আবীর হারুণীব্রতীএবারের পিঠা উৎসবে প্রচারের দায়িত্বপালন করেন ইয়াকুব আলীহিসাব সংরক্ষণে ছিলেন নুরুল ইসলামশাহিন

আপ্যায়নে ছিলেন শাহীন, মহসিন, ওয়াহিদ, কিবরিয়া,  এহসান, মাসুদ, শেখ শোয়েব, মৃন্ময়, রঞ্জন, নুসরাত, তাবাসসুম, সংগীত, ইয়াকুব, তানিয়া, সাবিহা, আজিজ, সায়মা, তারিক, টপি, নূরীণ, সারিনা, তাহিয়া, সৃজা, রোদোশী, রাত্রি, আনিকা, লুৎফা, আইরিন, অনু, নুসরাত, ফারহানা, মৌলি, মৌরি, নাসিম, আলিশা, হোসেন, ফেরদৌসমেগডালিনা, বর্ণীদিশা। বিকাল ৫টায় সবাইকে ধন্যবাদকৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামীতেওসবার সহযোগিতা কামনা করে পিঠা উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করেনসভাপতি মসিউল আজম খান স্বপনপ্রসঙ্গত উল্লেখ্য ক্যাম্বেলটাউনবাংলা স্কুল প্রতি রবিবার সকাল দশটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত সববাংলা ভাষাভাষীর জন্য উন্মুক্ত থাকে

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি । 

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments