প্রশান্তিকা ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারান্টকে খুনের অভিযোগে কোন রকম প্যারল ছাড়াই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল সোমবার চারদিন ব্যাপী রায় ঘোষণার প্রথম দিনে হামলাকারীর এই সাজা সাব্যস্ত হয়। গত বছর ট্যারান্টের হামলায় দুটি মসজিদে ৫১ জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হয়। আদালতে তিনি হামলার সম্পূর্ণ দায় স্বীকার করেছেন।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারী অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ট্যারান্টকে কোনরকম প্যারল ছাড়াই যাবজ্জীবন কারাবাস করতে হবে।

গতবছর ১৫ মার্চ শুক্রবার বন্দুকধারী ট্যারান্ট হামলার ঘটনা সরাসরি অনলাইনে সম্প্রচার করেছিলেন। প্রথমে তিনি ক্রাইস্টচার্চে আল নুর মসজিদে ৪২ জন এবং এরপর পাঁচ কিলোমিটার দূরের লিনউড মসজিদে গিয়ে হামলা চালিয়ে মসজিদে আগত মুসল্লীদের ৭ জন হত্যা করেন। অন্য দু’জন হাসপাতালে মারা যান। ওই হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বেশ ক’জন খেলোয়াড়। মুশফিক, তামিম ইকবালরা সেদিন জুমা’র নামাজ আদায় করতে হোটেল থেকে বের হয়েছিলেন। তাঁরা মসজিদে ঢোকার আগেই ট্যারান্ট হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছিলো। বাংলাদেশ দল সেই সময় নিউজিল্যান্ডের সাথে ক্রিকেট খেলার জন্য শহরটিতে অবস্থান করছিলেন।

স্কাই নিউজ জানায়, ট্যারান্ট আরও মানুষ মারতে এবং মসজিদে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিতে চেয়েছিলো। গতকাল আদালতে নিহতদের স্বজনরা উপস্থিত হয়ে তাদের স্বজন হারানোর বেদনা বর্ননা করেন। এসময় ট্যারান্ট তাদের দিকে বারবার তাকিয়ে থাকে। হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া লিনউড মসজিদের ইমাম আলাবি লতিফ জিকরুল্লাহ আদালতে বলেন, ‘ সেদিনের হামলার ভয়াবহতা জীবনেও ভুলতে পারব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি হামলাকারীকে দেখতে চাইনা, ওকে দেখলেই আমার ৫১ জন নিরীহ মানুষের বেদনার্ত মুখ মনে পড়ে।’
হামলাকারী ২৯ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ট্যারান্ট ডানপন্থী প্রতিক্রিয়াশীল। বন্দুকের লাইসেন্স পাওয়ার জন্যই তিনি অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে নিউজিল্যান্ডে বসবাস শুরু করেন। পুলিশের তদন্তে বের হয়ে আসে তিনি বেআইনিভাবে কৌশলে গান লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়েছিলেন। গতবছর জানুয়ারী মাসে তিনি ক্রাইস্টচার্চের মসজিদের কাছে বাসা ভাড়া নেন এবং এই নৃশংস হামলার পরিকল্পনা করেন। মুসলিম এবং নন ইউরোপিয়নদের খুন করাই ছিলো তার হামলার উদ্দেশ্য। উল্লেখ্য, নিউজিল্যান্ডে ডেথ সেন্টেন্সের বিধান নেই। প্যারল ছাড়া সারাজীবন কারাবাসই সর্বোচ্চ শাস্তি।