প্রশান্তিকা রিপোর্ট: বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন আজ দুপুরে সিডনি এসে পৌঁছেছেন। আগামীকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় হার্স্টভিলের সিভিক থিয়েটার অডিটোরিয়ামে তিনি ‘গায়ত্রী সন্ধ্যায় যাপিত জীবনের গল্প’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। আজ দুপুরে তিনি স্বামী আনোয়ার হোসেন খানের সঙ্গে মেলবোর্ন থেকে সিডনি এয়ারপোর্টে পৌঁছেন। এয়ারপোর্টে একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান আল নোমান শামীম, ড. শাখাওয়াৎ নয়ন এবং অনীলা পারভীন প্রমুখ। সিডনি এসেই সেলিনা হোসেন বলেন, খুব ভালো লাগছে। এটি তাঁর তৃতীয় সিডনি সফর । তিনি প্রত্যাশা করেন, আগামীকাল সন্ধ্যায় সিডনির সাহিত্য ও সংস্কৃতিপ্রেমীদের সঙ্গে দেখা হবে ।

সেলিনা হোসেন এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ
জন্ম ১৪ জুন ১৯৪৭। রাজশাহী শহর। তাঁর লেখার জগৎ বাংলাদেশের মানুষ, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য। বাঙালির অহংকার ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তাঁর লেখায় নতুন মাত্রা অর্জন করে। জীবনের গভীর উপলব্ধির প্রকাশকে তিনি শুধু কথাসাহিত্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেন না, শাণিত ও শক্তিশালী গদ্যের নির্মাণে প্রবন্ধের আকারেও উপস্থাপন করেন। নির্ভীক তাঁর কন্ঠ-কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ।
রাজশাহীতে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেনীতে পড়াকালীন বিভাগীয় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নশিপ স্বর্ণপদক লাভ করেন। অতঃপর ১৯৬৯ সালে প্রবন্ধের জন্য পান ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক স্বর্ণপদক। ১৯৮০ সালে কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৮১ সালে ‘মগ্নচৈতন্যে শিস’ উপন্যাসের জন্য আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮২ সালে অগ্রনী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে ‘ পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ উপন্যাসের জন্য কমর মুশতরী পুরস্কার, পরবর্তীতে উক্ত উপন্যাস অবলম্বনে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। ১৯৯৪ সালে অনন্যা ও অলক্ত পুরস্কার, ১৯৯৪-৯৫ সালে তিনি তাঁর ত্রয়ী উপন্যাস ‘গায়ত্রী সন্ধ্যা’ রচনার জন্য ফোর্ড ফাউন্ডেশন ফেলোশিপ এবং একই উপন্যাসের জন্য তিনি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ প্লানিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট প্রবর্তিত ‘রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার’ লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে জেবুন্নেসা ও মাহবুবুল্লাহ ইনস্টিটিউট প্রদত্ত সাহিত্য পুরস্কার ও স্বর্ণপদক এবং ২০০৬ সালে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার সাহিত্যে অবদানের জন্য দিল্লির ‘রামকৃষ্ণ জয়দয়াল হারমোনি পুরস্কার’ এবং ২০০৯ সালে সমগ্র জীবনের সাহিত্যসাধনার স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মর্যাদা ‘একুশে পদক’ লাভ করেন।
এছাড়াও ২০১০ সালে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা থেকে ডক্টর অফ লিটারেচার (অনারারি) ডিগ্রি এবং সাহিত্য একাদেমি, দিল্লি কর্তৃক সার্ক দেশের লেখকদের জন্য প্রবর্তিত ‘ প্রেমচাঁদ ফেলোশিপ’ লাভ করেন।
ইতোমধ্যে, বাংলা কথাসাহিত্যের এই রাজকন্যার লেখা গল্প এবং উপন্যাস, ইংরেজি, মারাঠি, কন্নড়, রুশ, মালে, ফরাসি, জাপানি, উর্দু, মালয়েলাম, কোরিয়ান এবং ফিনিস ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
আগামীকাল সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আগ্রহীরা পোস্টারে দেয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।