
এস এম তারিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ থেকে: জাতীয় অধ্যাপক বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডঃ তালুকদার মনিরুজ্জামান গতকাল ২৮ ডিসেম্বর শনিবার ভোরে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহে..রাজেউন)। শনিবার দিবাগত রাত তিনটায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন অধ্যাপক মনিরুজ্জামান। ব্রেন স্ট্রোক করলে ৯ ডিসেম্বর তাঁকে অ্যাপোলো হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে আইসিইউতে রেখে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। তিনি ১৯৩৮ সালের ১ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলার তারাকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
ড. মনিরুজ্জামান ছিলেন তারাকান্দি জুনিয়র হাইস্কুলের স্কলার বয়। তাঁর আরেক ভাইও তাঁর মতই মেধাবী। দুই ভাই রাজশাহী বোর্ডে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছিলেন। পরবর্তীতে ড. মনিরুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও প্রথম হয়েছিলেন। আমিও তারাকান্দি স্কুলে পড়তাম। একদিন হঠাৎ আমাদের ক্লাসে হাজির হলেন ড. মনিরুজ্জামান। স্যারেরা তাঁকে খুব সমীহ করলেন। সেসময় তিনি ও তাঁর ভাই সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানতে পারলাম। তাঁর বাবা আব্দুল মজিদ তালুকদার স্কুলশিক্ষক ছিলেন। ড. মনিরুজ্জামান তারাকান্দি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ে সিরাজগঞ্জ থেকে মেট্টিক পাশ করেন। ড. মনিরুজ্জামান ও তাঁর ভাই দু’জনেই জীবনে সব পরীক্ষায় বরাবর ভালো ফলাফল করেছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তিনি প্রথম হতেন। ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়ে অনার্সে প্রথম শ্রেণী লাভ করেন। তাঁর মাকে স্বর্ণগর্ভা বা গোল্ডেন মাদার উপাধী দেয়া হয়েছিলো।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের স্বনামধন্য অধ্যাপক। এর আগে তিনি
১৯৬৩ সালে বৃত্তি নিয়ে কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। তারপর ১৯৬৬ সালে দেশে ফিরে এসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। জাতি আজ মেধাবী এক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীকে হারালো। তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে আরও অনেক কিছু করতে পারতেন। গতকাল রোববার বাদ আসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর জানাজা শেষে গাজীপুরের পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। আমরা তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারের সাথে সহমর্মিতা জানাই এবং তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।