ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমীপে
১৩ নভেম্বর, ২০২০
বরাবর,
উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
ঢাকা, বাংলাদেশ।
বিষয়ঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রসঙ্গে
জনাব,
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনেক মেধাবীর সূতিকাগার। সত্যেন বোস যেমন এখন পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ অহংকার। তেমনি আমাদের সময়ে হুমায়ূন আহমেদও আরেক অহংকারের নাম।
“সে কোন দরদী আমার? কাঁদায় আবার হাসায়, দুঃখ সুখে” মাইলসের এই গানটি যখনই শুনেছি, হুমায়ূন আহমেদের কথা মনে পড়েছে। আমাদের জেনারেশনের প্রায় সবাই যারা অন্তত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছি, তারা হুমায়ূন আহমেদের লেখা বই পড়তে পড়তে বড় হয়েছি। তাঁর কাছে আমাদের ঋণ অনেক। বাংলাদেশে এমন পাঠক কিংবা নাটকের দর্শক কি পাওয়া যাবে? যিনি হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ে কিংবা তাঁর লেখা নাটক দেখে কাঁদেননি অথবা হাসেন নি? তিনি আমাদের দরদী লেখক।
কথাসাহিত্যে বঙ্কিম চন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিভূতিভূষণ, মানিক এবং তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠকের ভাবনার জগতকে প্রসারিত এবং আলোকিত করেছেন। অন্যদিকে শরৎ বাবু যারপরনাই কাঁদিয়েছেন। কিন্তু একমাত্র হুমায়ুন আহমেদ একই সাথে আনন্দ-বেদনায় পাঠক হৃদয় জয় করেছেন। বাংলা সাহিত্যে আর কোনো লেখক তা পারেন নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিৎ হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উদযাপন করা। রসায়ন বিভাগের উচিৎ ছিল এই মহান লেখককে স্মরণ করা। হুমায়ূন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ছাত্র এবং শিক্ষক ছিলেন। সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করলেও কিন্তু কেন জানি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে স্মরণ করে না। কোথায় যেন কুন্ঠাবোধ! কোথায় যেন সংকীর্ণতা!
আজকে ১৩ নভেম্বর, এই মহান লেখকের জন্মদিন। যথাযোগ্য ভাব-গাম্ভীর্য এবং মর্যাদার সাথে প্রতিবছর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উদযাপন এবং প্রয়াণ দিবস পালন করার জন্য বিশেষভাবে আবেদন জানাচ্ছি।
বিনীত,
শাখাওয়াৎ নয়ন
কথাসাহিত্যিক।