তবু দেখা হোক । পাঠ প্রতিক্রিয়া । অধ্যাপক মো: আমির হোসেন

  
    

উপন্যাস শব্দের অর্থ বিশেষ ভাবে উপস্থাপন। মেঘনা উপজেলার গর্বিত সন্তান কথাসাহিত্যিক পিয়ারা বেগম তাঁর “তবু দেখা হোক” উপন্যাসে তা সার্থকভাবে তুলে ধরেছেন। বাঙালি পরিবারের গৃহাভ্যন্তর দিয়ে উপন্যাসটির শুরু।

রকমারি ছাড়াও বাংলা একাডেমী বইমেলায় রাত্রি প্রকাশনীতে পাওয়া যাচ্ছে ‘তবু দেখা হোক’।

মিতু ও শিহাবের চার চক্ষু পর্বটা চমৎকার। “একটা কিছু যে নিয়ে এসেছি তা বুঝেছি” মিতুর এই অনুভব বিশ্বের সব প্রেমিকা তথা নারীর অনুভব। উপন্যাস জুড়ে প্রেম, পারিবারিক বিরোধ, সামাজিক বিষয় চিত্রময় হয়েছে। দুয়েকটা তথ্যগত অসঙ্গতি থাকলেও কাহিনিটি চমৎকার। কাহিনিতে ভালোবাসার বুনন এবং হৃদয় ভাঙার যন্ত্রণা রয়েছে। সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মনোবিশ্লেষণ রয়েছে। “জীবনে কোন প্রেমিক-প্রেমিকাই তাদের কথা শেষ করতে পারেনি”- চমৎকার বিশ্লেষণে কাহিনি এগিয়েছে।

উপন্যাস চরিত্র নির্ভর। নায়ক হতে হতেও শিহাব নায়ক হতে পারেনি। পলায়নপর মনোবৃত্তি চরিত্রটিকে ধ্বংস করেছে। কলেজের শিক্ষক মিতুও সত্যিকার মানসিক শক্তি অর্জন করতে পারেনি। চিরন্তন বাঙালি নারীর মতোই বিছানায় কেঁদেছে। মিতুদের জীবনে প্রেমের মৃত্যু চিরন্তন। এই দিকটি প্রশংসার দাবীদার। “নিজের একান্ত গোপন কথা গোপন রাখার অর্থই হচ্ছে নিজেকে নিরাপদ রাখা”- এমন কিছু মূল্যবান বক্তব্য উপন্যাসটির প্রাণ।

৩০টি পর্বে বিভক্ত ১২৬ পৃষ্ঠার উপন্যাসের কাহিনি খুব দ্রুত এগিয়েছে। প্রচ্ছদ চমৎকার। নামকরণের ভিত্তিটুকু নায়িকা মিতুর কল্পনায়-ই রয়ে গেছে। মানুষের জীবন এক সময় স্বপ্ন দেখে না, অতীতের স্মৃতিচারণ করে। মিতুও শেষান্তে তাই করেছে। আমি “তবু দেখা হোক” এর পাঠকপ্রিয়তা প্রত্যাশা করছি।

অধ্যাপক মো: আমির হোসেন
কবি, গীতিকার, গল্পকার, ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক।
অধ্যক্ষ,
ঘিওর সরকারি কলেজ, মানিকগঞ্জ।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments