আজ পহেলা বৈশাখ। আমাদের নববর্ষ। ধরনী ভালো নেই এই সময়ে। করোনা নামের অজানা এক ভাইরাসের প্রকোপে আজ ধরাশায়ী পৃথিবীর সকল দেশ এবং মানুষেরা। তারমধ্যেই এলো এই বৈশাখ।
প্রতি বছর এই সময়ে কেবল সিডনিতেই আয়োজিত হয় অসংখ্য বৈশাখী মেলা। দেশ ও বিদেশের তারকা এবং প্রবাসীদের কলকাকলীতে মূখর হয়ে ওঠে জনপদ। এ সবের কোনকিছুই হচ্ছেনা এ বছর। হচ্ছেনা এবার গ্রামীণমেলা, হালখাতার উৎসব; হচ্ছেনা চারুকলা বটমূলে বা সিডনি অলিম্পিক পার্কের মঙ্গল শোভাযাত্রা কিংবা অস্ট্রেলিয়ার বাঙালী অধ্যুসিত লাকেম্বায় দিনভর বাঙলা আয়োজন। না কিছুই হচ্ছেনা এবার। মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা সবকিছুর দরজা বন্ধ হয়ে গেছে আজ।
আমরা করছি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় একটি যুদ্ধ। একটি ক্ষুদ্র মাইক্রোসকিপ ভাইরাসের সাথে সহজে কুলিয়ে উঠতে পারছিনা আমরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া সব জায়গায় প্রবাসী বাঙালিরাও এই যুদ্ধের সৈনিক। এতো কিছুর মধ্যেও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বৈশাখের শুভেচ্ছা দিতে ভোলেননি। তাঁর স্বাক্ষরিত সেই শুভেচ্ছা চিঠি প্রশান্তিকার ইমেলেও এসেছে। পুরো শুভেচ্ছা বার্তাটির মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় লাইনটি হচ্ছে, “ we all depend on the values of generosity, peace and respect that I know the Bengali community upholds. Such values also give me great confidence that our nation will get through this”। তিনি বলছেন, এই মহামারীর সময়েও বাঙালী কমিউনিটির এই মূল্যবোধ তাঁকে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দেয়। আহা ! দেশবাসীকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিও বলেছেন, এবার হচ্ছেনা কোন উৎসব। কিন্তু মনের উৎসব থামাতে পারে কে। তাই তিনি আহবান করেছেন, সেই মনের উৎসব ঘরে বসেই পালন করুন।
তবুও স্বাগতম নতুন বছর। স্বাগতম ১৪২৭। আমরা এবছরই পেয়ে যাবো মহামারী কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক। অবশ্যই। কেননা আমাদের গবেষকেরা বসে নেই। প্রশান্তিকার সহযোগী সম্পাদক নাদিরা সুলতানা নদী বলেছেন, ‘মঙ্গলবার্তা নিয়ে এসো হে ১৪২৭। বাংলাদেশ সহ এ পৃথিবী হোক এবার ২০(বিষ) মুক্ত, করোনা মুক্ত। শুভ হোক সকলের নববর্ষ।’
প্রিয় কবির ভাষায় আমিও বলি, ‘অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’ প্রকৃতি ও প্রাণীকুলের ওপর মানুষ যতো অত্যাচার করেছে, এই মহামারী থেকে মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করুক।
প্রশান্তিকার সকল পাঠক, লেখক ও শুভানুধ্যায়ী সকলেই আমাদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। শুভ নববর্ষ।