প্রশান্তিকা রিপোর্ট : বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়া’র সাধারণ সম্পাদক প্রদ্যুৎ সিংহ চুন্নু মারা গেছেন। আজ শনিবার বিকেল চারটার একটু আগে চিকিৎসকেরা তাঁর মৃত্যু ঘোষণা করেন। সিডনির রেন্ডউইকে প্রিন্স অব ওয়েলস হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকেরা আজ বেলা ১২টা ৫৪ মিনিটে তাকে ক্লিনিক্যাল ডেথ হিসেবে ঘোষণা করেন। গত বুধবার পিএস চু্ন্নু তাঁর বাসায় স্ট্রোক করলে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেদিন থেকেই তিনি হাসপাতালের আইসিইতে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। চুন্নুকে দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ হাসপাতালে গিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে সিডনি বাঙালি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আগামী ৩১ জানুয়ারীতে তাঁর বয়স হতো ৫৯ বছর।

পিএস চুন্নুর অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ার তারিখ ও সময় খুব শিগগির জানা যাবে। কমিউনিটি নেতারা অযথা হাসপাতালে ভীড় জমানো থেকে বিরত থাকতে সকলকে অনুরোধ জানিয়েছেন। এই মুহূর্তে হাসাপাতালে সকল সম্প্রদায়ের বন্ধু, আত্মীয় স্বজন ও তাঁর রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা রয়েছেন।
সিডনির বাংলাদেশী কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব গামা আব্দুল কাদির তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বলেন, “ চুন্নুকে দীর্ঘদিন ধরে ছোটভাইয়ের মতো দেখে আসছি। তাঁর মৃত্যুতে আমি ভাই হারানোর বেদনা অনুভব করছি।” গামা কাদির গতকাল তাঁর অসুস্থ স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে চুন্নুকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়া’র সভাপতি ড. সিরাজুল হক (বাংলাদেশ সফররত) প্রশান্তিকাকে এক শোক বার্তায় বলেন, “ জীবনের অধিকাংশ সময় তাঁর সাথে কাটালেও শেষ বিদায়ের সময় কাছে থাকতে না পেরে খুব কষ্ট লাগছে।” তিনি বলেন, “ চুন্নু ছিলেন নিঃস্বার্থ এক সমাজসেবক এবং রাজনীতিবীদ। তিনি কখনই নিজের জন্য কিছু করতেন না। সারাজীবন অন্যের উপকারের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি ২০০৮ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়া’র সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং মৃত্যু অবধি তাঁর দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক জানাই।”
পিএস চুন্নু ১৯৯০ সালের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি খুলনার ফুলতলা উপজেলায়। তাঁর স্কুল ও কলেজ কেটেছে খুলনাতে। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের আবাসিক ছাত্র। অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর জীবন সঙ্গী ছিলেন বিলকিস বেগম। আগামী ১৪ জানুয়ারিতে তাদের একসাথে বাংলাদেশে যাবার কথা ছিলো। পিএস চুন্নুর কোন সন্তান ছিলো না।
অস্ট্রেলিয়া জীবনে পি এস চুন্নু রাজনীতি ছাড়াও এক সময় একটি বাংলা পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। কমিউনিটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিডনি সফরে আসলে পিএস চুন্নু তাঁর নাগরিক সম্বর্ধনায় বক্তব্য রেখেছিলেন।