প্রশান্তিকা রিপোর্ট: গানটি ছিলো-
“আমি তো লাজে মরি, কি যে করি গলায় দড়ি দিয়া
বিপদে পইড়াছি বড় বাউলা গান শিখিয়া।”
চলমান করোনা সংকট ও নানাবিধ কারণে ফজলু বয়াতীর গাওয়া গানটি প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। সংসারে দুই প্রতিবন্ধী সহ ৭ জনের সংসার চলছিলো হাটে, মাঠে বা গঞ্জে গান গেয়ে। করোনার থাবায় সে পথও বন্ধ। বিবেকের তাড়না থেকেই আমরা প্রশান্তিকা থেকে যোগাযোগ করি বয়াতির সাথে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেভাবে উঠে এসেছে তারচেয়েও ভয়াবহ কষ্ট এবং দারিদ্রে চলছে তাঁর সংসার।
আমরা এই বয়াতি এবং তাঁর পরিবারের পাশে কিভাবে দাঁড়াতে পারি? সেই আলোচনায় প্রথমেই উঠে এলো আপাতত প্রশান্তিকা টীম তাঁর পাশে দাঁড়াতে চায়। সেই লক্ষ্যে শুধুমাত্র প্রশান্তিকা সদস্যদের সহায়তায় তাঁকে পাঠানো হয় ৩৬,৬০০ (ছত্রিশ হাজার ছয়শ’) টাকা। সামান্য এই অর্থ পেয়ে ফজলু বয়াতি আনন্দে কেঁদে ফেললেন। তিনি প্রশান্তিকার প্রত্যেক সদস্যকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। বৃহৎ পরিসরে আমরা ভবিষ্যতে তাঁর পাশে দাঁড়াতে চাই। যেনো দারিদ্রের কষাঘাতে তাঁর পরিবার না খেয়ে রাত না কাটায়।
প্রশান্তিকা আরও জানতে পারে ফজলু বয়াতি পুরোপুরি অন্ধ নন। তবে তিনি চোখে খুব কম দেখেন। ছেলে মেয়ে বা স্ত্রীর সাহায্য ছাড়া চলাচল করতে পারেন না। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসার অভাবে তাঁর বেশ ক’টি দাঁত পরে গেছে। কিন্তু তাঁর গানের কন্ঠ অসাধারণ। তিনি দোতারা বাজিয়ে মূলত বাউল বা বয়াতি গান করে থাকেন। তাঁর সঙ্গে মেয়ে, ছেলে এবং স্ত্রীও সঙ্গত করেন। ছোট মেয়ের কন্ঠও কিন্নরী।
তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার তেকআনী গ্রামে।
অভাব ও দারিদ্র নিয়ে তিনি যে গানটি বেঁধেছেন, আমরা চাই খুব অল্প দিনের মধ্যেই তিনি আরেকটি গান বাঁধবেন, যেটি হবে স্বস্তির গান। এই পৃথিবীতে তাঁর এবং ছোট্ট ওই মেয়েটিসহ পরিবারটির বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।