প্রশান্তিকা রিপোর্ট: আর ক’মাস পরেই সম্মানজনক ল ডিগ্রি নিয়ে সিডনি ইউনিভার্সিটি থেকে বের হবার কথা ছিলো শাহাদের। ফাইনাল পরীক্ষাও শেষ হয়েছিলো তাঁর। এইচএসসিতে ৯৯ শতাংশ নাম্বার নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন আইন বিভাগে। নতুন বছরের মার্চে কোন ল ফার্মে কাজ করবেন- সেটাও প্রস্তত ছিলো। পরীক্ষা শেষ, ছুটির অবসরে ঘুরতে যাওয়াই কি কাল হলো ছেলেটার ! নইলে গতকাল রোববার সিডনি থেকে দক্ষিণ উপকুল অঞ্চলীয় একটি লেকে লাশ হয়ে ভেসে উঠবে কেনো শাহাদ? মা বাবা এবং একমাত্র ছোট ভাই এক নিমিষেই হারিয়ে ফেললো সোনার ছেলেটিকে। আর আমরা নিত্য খেটে খাওয়া কমিউনিটি সদস্যরা হারালাম- প্রবাসে যে ছেলেটা উজ্জ্বল করতো আমাদের মুখ, বাংলাদেশের মুখ, তাকে।
আগামীকাল বুধবার বাদ জোহর শাহাদের নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। শাহাদের বাবা মুহাম্মাদ নোমানী জানান, “আসসালামু আলাইকুম। আমার বড় ছেলে শাহাদ নোমানীর নামাযেজানাজা আগামীকাল বাদ জোহর বেলা ১টার সময়ে লাকেম্বার বড় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। তারপর তাকে রকউড গোরস্থানে দাফন করা হবে।” তিনি আরও বলেন, উক্ত জানাযায় মহিলারাও মসজিদের পৃথক কক্ষে অংশ নিতে পারবেন।

জানা গেছে, গত রোববার নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ শোলহ্যাভেনের স্যাংচুয়ারি পয়েন্টের একটি লেক থেকে শাহাদ নোমানীর (২৪) মরদেহ উদ্ধার করে। শাহাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, শাহাদ গত শুক্রবার বন্ধুদের নিয়ে সেখানে বেড়াতে গিয়েছিলো। গত শনিবার বিকেলে হাঁটতে বের হয়ে আর ফিরেনি। পরে পুলিশকে জানানো হলে একদিন পরে সেই লেকে শাহাদকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শাহাদের বাবা মোহাম্মদ নোমানী এবং মা সহ পরিবারের সকলে ঘটনাস্থলে ছিলেন।
শাহাদের মা আবেগাপ্লুত ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, “ইয়া আল্লাহ আমার আদরের মানিককে নিয়ে গেছেন। আপনার দেয়া জান মাল আপনি সময় শেষে নিয়ে গেছেন। আমাকে একটু জানালে কি এমন ক্ষতি হতো। আমার ভরা বুকটা খালি হয়ে গেলো। তোমরা সবাই আমার সোনার মানিকটার জন্য আল্লাহ পাকের দরবারে দোয়া করো।” তাঁর বাবাও পৃথক একটি স্ট্যাটাসে অকাল প্রয়াত ছেলের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
সিডনির ইস্টার্ন সাবার্বে শাহাদের জন্ম। তবে অনেক বছর ধরেই তারা বাংলাদেশী অধ্যুসিত লাকেম্বা- ওয়ালী পার্কে স্থায়ী বসবাস করে আসছেন। শাহাদের একমাত্র ছোট ভাইও নামকরা একটি ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করছে। শাহাদের মৃত্যুতে কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।