প্রশান্তিকা ডেস্ক: বিদ্যানন্দ বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য এবং গ্রহনযোগ্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। দেশের সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা সগায়তা, এক টাকার আহার, দূর্ভিক্ষ বা যে কোন দূর্যোগে আক্রান্ত মানুষকে সহায়তায় এগিয়ে আসে এই বিদ্যানন্দ। করোনা মহামারীর এই সংকটে সরকারী সাহায্যের পরে যে সংগঠনটি সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত এবং দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তার নামই বিদ্যানন্দ। ‘বিদ্যানন্দ’ নামটি হিন্দু এবং এর প্রধান কর্ণধারও হিন্দু- এই দুটি সমালোচনা বা প্রপাগন্ডার মুখে প্রধান পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কিশোর কুমার দাশ।

আজ মঙ্গলবার সকালে সংস্থাটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
ঘোষণাটিতে বলা হয়, “বিদ্যানন্দ” নামটি দিয়েছেন এক মুসলিম ব্র্যান্ড এক্সপার্ট। “আনন্দের মাধ্যমে বিদ্যা অর্জন” স্লোগানে তিনি এই নাম দিয়েছিলেন। অথচ অনেকেই হিন্দু ব্যক্তির নাম থেকে বিদ্যানন্দ নামের উদ্ভব ভেবে ভুল করেন। এজন্য আমরা নামটাই পরিবর্তন করতে চেয়েছি, কিন্তু স্বেচ্ছাসেবকরা রাজী হয় না। বিদ্যানন্দের প্রবাসী উদ্যোক্তা সশরীরে খুব অল্পই সময় দিতে পারেন। ৯০% মুসলিম স্বেচ্ছাসেবকরাই চালিয়ে যান বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবুও উদ্যোক্তার ধর্ম পরিচয়ে অনেকেই অপপ্রচার চালায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে।
সে সমস্যাও আশা করি সমাধান হয়ে যাবে। বিদ্যানন্দ প্রধান গত মাসেই পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। বিষয়টি আমরা প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম কোভিড-১৯ ক্যাম্পেইনের পরে।
ত্যাগের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা। আর্থিক, সামাজিক কিংবা ব্যক্তিগত ত্যাগে স্বেচ্ছাসেবকরা রচনা করে অনুপ্রেরণার গল্পগুলো। নিশ্চিত থাকেন, তাঁদের সে যাত্রা অব্যাহত থাকবে আগামীতেও।
[ক্ষমা চাচ্ছি এই হতাশার বার্তার জন্য। গত মাসের এই সিদ্ধান্তটি আমরা প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম কোভিড-১৯ ক্যাম্পেইনের পর। কিন্তু অনেকগুলো পেজ থেকেই প্রচুর ন্যাগেটিভ লেখা শেয়ার হচ্ছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্যাম্পেইনটি। তাই শেয়ার করতে বাধ্য হয়েছি।]”
বিদ্যানন্দের এই ঘোষণায় অগণিত শুভানুধ্যায়ী ক্ষোভ, হতাশা ও দুঃখ প্রকাশ করেন। এর প্রেক্ষিতে পেজ থেকে আবারও বলা হয়, ‘পদ মৃত্যু পর্যন্ত আঁকড়ে ধরে রাখার নীতিতে বিদ্যানন্দের কর্মীরা বিশ্বাসী নয়। এর আগেও আমাদের বিভিন্ন পদে রদবদল হয়েছে, এতে কাজে তফাৎ হয় না। আর বিদ্যানন্দের উদ্যোক্তা চলে যাচ্ছেন না, তিনি আরেকটু ছোট দায়িত্বে থাকছেন। নতুন কারো নেতৃত্বে ভিন্ন রকমের আইডিয়া আসবে, এটাই আমাদের বিশ্বাস। নেতৃত্ব নির্বাচনেও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠবে, এই আমাদের কামনা।’
এই ঘোষণার পরে দেশে ও বিদেশে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এতো ভালো একটি সংগঠন করোনার এই ক্রান্তিকালে যেখানে নিরবিচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছিলো, সেখানে এর মন্থরতা সৃষ্টি হবে। শুভানুধ্যায়ীরা বারবার বলে আসছেন, ভালো কাজে প্রতিক্রিয়াশীলরা সব সময় সমালোচনা করবে। তাই বলে তাদের কথা শোনার দরকার কি?