কাজী আশফাক রহমান: মাতৃভাষার দাবি প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গ কারী অকুতোভয় ভাষা সংগ্রামীদের ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুল স্মরণ করল গভীর শ্রদ্ধায় আর ভালবাসায়। গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি রবিবার স্কুল প্রাঙ্গনে এই মহতী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রতিবারের মত এবারও প্রভাতফেরীর মধ্য দিয়ে বাংলা স্কুল একুশ আয়োজনের সূচনা ঘটে। সকাল দশটায় শুরু হওয়া এই প্রভাতফেরী স্কুলের খেলার মাঠ থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিন করে শহীদ মিনারের বেদী মূলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এর পর এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা মাতৃভাষার গুরুত্ব এবং একুশের আন্তর্জাতিকতার উপর আলোকপাত করেন। এই পর্বে উপস্থিত ছিলেন ওয়ারিয়ার ফেডারেল সংসদ সদস্য এ্যান স্টেনলি, স্টেট সংসদ সদস্য অনুলাক চেন্টিভং, ক্যাম্বেলটাউন সিটি কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র ডার্সি লাউন এবং কাউন্সিলার মাসুদ চৌধুরী। ডেপুটি মেয়র ডার্সি লাউন, মেয়র জর্জ ব্রিটসেভিকের লিখিত শুভেচ্ছা বক্তব্য পাঠ করে শোনান। এই পর্বটি পরিচালনা করেন স্কুলের সভাপতি আব্দুল জলিল।
এই পর্যায়ে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি প্রসারে অসামান্য অবদানের ক্যাম্বেলটাউন বাংলা স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নাজমুল আহসান খানকে “সম্মাননা ২০১৯” এ ভূষিত করা হয়। জনাব খান বর্তমানে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাঁর পক্ষে পুত্র মনজুরুল আহসান খান সোহেল এই সম্মাননা গ্রহন করেন।
আলোচনা ও সম্মাননা প্রদান শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এর প্রথম পর্বে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরদের এক মনোজ্ঞ পরিবেশনা উপস্থিত সকলকে বিমোহিত করে। তিনটি দলগত সংগীত এবং দুটি একক সংগীতের প্রতিটিতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়। একক সংগীতে অংশ নেয় এলভিরা ও নাশওয়া। বৃন্দ এবং একক আবৃত্তির প্রতিটি দর্শক শ্রোতাদের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়। বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করে তাহিয়া, সুমায়রা, আলিশা, অর্ণব, এলভিরা, এথিনা ও রেইনর। আবৃত্তির একক পরিবেশনা নিয়ে আসে তাহিয়া, আরিজ, তাওহিদ, রুশনান, আলিশা, সুমায়রা, নাশিতা, নাজিয়া ও দৃপ্ত। এই পর্বটি পরিচালনা করেন স্কুলের অধ্যক্ষ রোকেয়া আহমেদ এবং শিক্ষক রুমানা সিদ্দিকী।
শেষ পর্বে স্কুলের নিজস্ব শিল্পী এবং সিডনির স্বনামধন্য শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোঞ্জ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হয়। সংগীত পরিবেশন করেন লনি, পিও, তামিমা এবং মিথুন। আবৃত্তিতে অংশ নেন শাহীন শাহনাওয়াজ, শীর্ষেন্দু নন্দী এবং রুমানা সিদ্দিকী। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে তবলায় সংগত করেন বিজয় সাহা। শব্দ নিয়ন্ত্রনে ছিলেন মাসুদ মিথুন এবং মসিউল আযম খান স্বপন। অমর একুশে এবং এর আন্তর্জাতিকতাকে উপজীব্য করে তৈরী মঞ্চের মূল পরিকল্পনায় ছিলেন মাসুদ মিথুন। সহযোগিতা করেন বিজয়, স্বপন এবং ইয়াকুব। প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন ইয়াকুব আলী। আপ্যায়নে ছিলেন মোনা, ফেরদৌস, আইরিন, নীলা, সংগীত, তামজিদ, তাসমিয়া, রুপা, লীনা, আফরীন এবং দিশা।
অনুষ্ঠানে প্রশান্তিকা প্রকাশনী তাদের বইয়ের সম্ভার নিয়ে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বই পিপাসু প্রশান্তিকার স্টল থেকে বই সংগ্রহ করেন।
সবশেষে স্কুল সাধারণ সম্পাদক আশফাক রহমান উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্কুলের আগামী আয়োজন গুলিতেও সবার সহযোগিতা কামনা করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।