তোমাকে ছুঁতে গিয়ে
কুঁকড়ে গ্যাছে আঙুল!
তোমাকে মাথার মুকুটে বসাতে গিয়ে
ভেঙেছে স্কন্ধের হাড়!
পায়ের আঙুলগুলো কত অগণিতবার
থেতলে গ্যাছে, তার ইয়ত্তা নেই!
তবুও, তোমার সবুজ দেখলে চোখ জুড়ায়!
হঠাৎ ঘাসের মধ্যে লাল রঙা কাঠবাদাম পাতা
আমাকে আমার মধুমতী মাসীর কথা মনে করিয়ে দেয়!
যে মধুমতী মাসীকে, প্লেন থেকে খসে পড়া বোমা
এক মুহূর্তে ছিন্নভিন্ন করেছিলো বক্কর মিয়ার মাঠে!
পাশেই শক্ত করে হাত ধরে ছুটছিলো
আমার গর্ভধারিণী মমতাময়ী মা!
পঞ্চাশ বছর পরেও
এমন স্মৃতি কথা বলতে বলতে
মায়ের চোখে ব্রক্ষ্মপুত্র ঢেউ তোলে!
আমি মধুমতী মাসীর ছবি থেকে
মাসীর চোখদুটো তুলে নেই,
টানটান হওয়া নাক তুলে নেই,
ডান কপালের কোণার তিল তুলে নেই।
টোল ফেলা হাসি দিয়ে, আমার মধুমতী মাসী
ছবির মধ্যে থেকে আমায় স্নেহভরা চোখে দেখেন!
সত্যি, তোমাকে ছুঁতে গিয়ে
কত মধুমতীরা ছবি হয়ে গ্যাছে
তার কোনও পরিসংখ্যান কারোর জানা নেই!
তোমাকে ছুঁতে গিয়ে,
নিজের রোমকূপে গাঁথা
জন্ম-জন্মান্তরের ইতিহাস ভুলতে পারি না!
স্বদেশ, তুমি আমার শরীরে খোদাই করা
আজন্ম পরিচয়, একমাত্র ঠিকানা।
২৬.০৩.২০২১, ঢাকা।
সুরভী রায়