মোয়াজ্জেম আজিম
দ্বিতীয় পর্বের শেষে:
মুন্নি কয়, আপনি কোন আক্কেলে আফারে ফোন দিলেন। বাসায় বইসা। আফা কি লবণ খাইয়া বড় হয় নাই? আমি জানি না। আপনে যা যা করছেন সব কয়ে দিমু।
– কী কয়! মুন্নি তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে?
– হ, তাতো হইছেই। আপনে বাসা থেক্কে কোন আক্কেলে আফারে ফোন করলেন?
– আরে চিন্তা কইরো না। একটা ধুনফুন কিছু ঠিকই বুঝায়ে দিমু। ডোন্ট ওরি মাই সুইটি। লেটস গো ইন আদার রুম। বলেই মুন্নিকে ধাক্কা দিয়ে খবিশ তাকে বেডরুমে ঢুকিয়ে ফেলে।
এখন আমি সবই বুঝি ওরা বেডরুমে কী করে। আমি ঠিক করেছি মাকে বলে দেবো।
৩
আজ বাসার অবস্থা ভয়ঙ্কর রকম গুমোট। খুনখারাপি একটা কিছু হয়ে যেতে পারে। মার চোখ মণিহীন। সামনে কিছু দেখছে বলেও মনে হয় না। দৃষ্টিহীন চোখ বারবার খোলা তলোয়ারের ঝিলিকে বিস্ফোরিত হচ্ছে আর জানান দিচ্ছে, শুয়োরের বাচ্চা রেডি হ। মুন্নিকে মনে হচ্ছে বাজার থেকে সদ্য কেনা মুরগী। জবাই হওয়ার জন্যে বটির দিকে তাকিয়ে বসে আছে। খবিশ কসাইখানার ছাগলের মতো নির্বাক, নিঃশব্দে কাঁঠালপাতার বদলে চুয়িংগাম চিবোচ্ছে। পালানোর ধান্ধায় চোখ ঘুরাচ্ছে লাটিমের মতো। বাসার দরজা তো একটাই, কিন্তু দেয়ালের দিকে তাকিয়ে ও কি আরো কোনো গোপন দরজা আবিষ্কারের চেষ্টা করছে, যে-দরজা দিয়ে সে নিজে পালাবে কিন্তু মা কিছুতেই টের পাবে না?
পলাপলি গোলকধাঁধা আর ঘুর্ণিপাকের মাঝে হঠাৎ দরজায় ধুপধাপ শব্দে আমরা সবাই একসাথে কেঁপে উঠলাম। ইয়েস ঘুর্ণিঝড়টা শেষ পর্যন্ত দরজা চিনে নক করতে সক্ষম হয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ের বাতাস এখনও আমাদের গায়ে লাগেনি, তাতেই দরজা কে খুলবে তা নিয়ে নীরব বোঝাপড়ায় ব্যস্ত মা আর খবিশ। মুন্নির যে এই মুহূর্তে দরজা খোলার কোনো ইচ্ছা নাই তা তার হাবভাব দেখেই বোঝা যাচ্ছে। অবশ্য মার কড়া নির্দেশ, মুন্নি যেন তাকে না জিজ্ঞেস করে কোনোকিছু করে। সুতরাং দরজা খোলার আগে অবশ্যই মাকে জিজ্ঞেস করতে হবে। মুন্নিও সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে বলে ভাব দেখায়। মুন্নি যখন একা তখন সম্পূর্ণ একজন ভিন্ন মানুষ, আবার যখন খবিশের সাথে তখন অন্য, আবার যখন পাড়ার ছেলেদের সাথে টাংকি মারে তখন ভীষণরকম ভিন্ন। আমি অন্তত পাঁচটা মুন্নিকে চিনি। একদিন সময় করে বলবো নে, কী তার রূপের বাহার, কী তার গুণের চমক।
এরই মধ্যে আরো একবার ধুপধুপ থাপ্পড় পড়লো দরজায়। শেষ পর্যন্ত মা গিয়ে দরজা খুললো। মা দরজা খুলেই যেন নিজের মৃত বাবাকে দেখেছে এমন আতকে উঠে সালাম দিল। আসুন আঙ্কেল, আসুন। কেমন আছেন আপনি। চাচী ভালো আছে? মা কিছুতেই লোকটাকে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছিল না। লোকটাকে সোফায় বসিয়ে ডাকলো খবিশকে, এমনভাবে যেন উনাদের মধ্যে প্রেম একেবারে উথলিয়ে পড়ছে। খবিশও চমৎকার হাসি হাসি মুখ করে এসে ড্রয়িংরুমে বসলো। মা বেশ মোলায়েম সুরে বললো, মুন্নি চুলা ধরা। চা-র পানি গরম দে। আর শোন, দুইটা চ্লুাই ধরা। ফ্রাই প্যানটা গরম দে, আমি আসছি।
অলংকরণ: আসমা সুলতানা মিতা
মুন্নি কী করছে আমি তা এখন আর দেখতে পারছি না। মা আমাকে বেডরুমে শুইয়ে দরজা টেনে দিলো। দিয়ে বললো, ছেলেটার শরীরটা তত ভালো না। মুরুব্বীকে কোনোরকম কথা বলার চান্স না দিয়ে মা চলে গেলো রান্নাঘরে। খবিশ কী নিয়ে কথা বলছে তা শোনার জন্যে আমি কান পেতে আছি। অনেকক্ষণ কেউ কিছুই বলছে না। রান্নাঘরের আগুনের শো শো, মানুষের আতঙ্কিত নিঃশ্বাস, পানির বলকানো, বুকের ধুকপুকানি মিলে একটা নীরব সাংঘাতিক রকমের ভয়ার্ত বাতাস ঘোরপাক খাচ্ছে দুই রুমের এই কুরুক্ষেত্রে।
মানুষটি কে? সে কি রাষ্ট্রের কর্তাফর্তা। ওর এত ক্ষমতা কেন? মুহূর্তে বাঘিনী মাকে ভিজা বিড়াল বানিয়ে ফেললো! হঠাৎ একটা উত্তপ্ত পরিস্থিতি ম্যাজিকের মতো শান্ত করে ফেললো, কোনোরকম বাক্যব্যয় ছাড়া! এহেন পরিস্থিতিতে খবিশ যে খুশি হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নাই। মুন্নিও হয়তো। মার হয়েছে সব যন্ত্রণা। বেচারা মা আমার একদিক সামলায় তো আরেকদিক হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ে।
আমি যখন এইসব চিন্তায় মশগুল তখন কখন যেন ওরা কথা বলা শুরু করেছে। আমি প্রথম দিককার কথা কিছুটা মিস করেছি অমনোযোগের কারণে। এখন কান পেতে শুনছি ওরা কী বলে। লোকটাই কথা বলছে। খবিশ শুধু হা হু জ্বি-চাচা জ্বি-চাচা করছে। লোকটা কথা বলছিল নামায নিয়ে, সাইদির মাহফিল নিয়ে, পাড়ার মসজিদ নিয়ে, নামাযের ফজিলত নিয়ে, বেহেশতের নেয়ামত নিয়ে, হুরের সৌন্দর্য নিয়ে, সুরার স্বাদ নিয়ে, মুসলমানের ভ্রাতৃত্ব নিয়ে এবং শেষ পর্যন্ত আমাকে নিয়ে। তিনি বললেন, বুঝেন তো বাড়িওয়ালা হওয়ার যে কতরকম যন্ত্রণা। আপনার বিবিকে একটু ডাকেন উনার সামনেই কথাটা বলি। খবিশ সুমিষ্ট কণ্ঠে ডাকে। রক্সি, চাচা তোমার সাথে একটু কথা বলবে এদিকে আসো। মা আসলো কিনা বোঝা গেল না। মুরুব্বী শুরু করে। আপনাদের খুব প্রশংসা করে আমার দারোয়ান ছেলেটা। বলে যে দুজনই খুব ভদ্র। বিল-ভাড়া নিয়া কোনোদিন ঝামেলা হয় নাই। কিন্তু ইদানীং আপনার ছেলেকে দেখার জন্যে নাকি পাড়ায় ভিড় লেগেই থাকে। মহল্লার কয়জন মুরুব্বীও একই কথা বললো। এলাকায় চোর-বাটপার নানারকম লোকের আনাগোনা। ভাবী . . .
আরে কয় কী, মা বলে চাচা, আর মুরুব্বী বলে ভাবী! আমি আপনাকে কোনো সর্ট নোটিশ দিচ্ছি না। তবে আপনাদের নিরাপত্তা ও ভালোর জন্যেই আপনাদের ঠিকানা চেঞ্জ করা দরকার। ছেলেটার কী হয়েছে আমি ভালো জানি না, তবে শুনছি ছেলের উপর নাকি শয়তানের আছর আছে। যে শিশুবয়সেই সবরকম কথা বলে এবং বোঝে। আসলে শয়তান-টয়তান কিছু না। নবী করিম সল্লেলাহু আলাইয়েসালাম কী বলেছেন? তিনি বলেছেন ১৪ হিজরীর পর দুনিয়াতে সব আজব কাজকারবার শুরু হবে। ছেলে মেয়ে হয়ে যাবে, আর মেয়ে ছেলে। ক্ষমতা চলে যাবে মেয়েলোকের হাতে। নবজাতক জন্মগ্রহণ করবে সাবালক অবস্থায় চুল-দাড়ি নিয়ে। মেয়েলোক আর সন্তান গর্ভে ধারণ করবে না। সন্তান হবে কাচের পাতিলে। দেখেন তিনি যা যা বলেছেন তা অক্ষরে অক্ষরে ফলতেছে। তেনার মুখের বাণী কি কখনও মিথ্যা হইতে পারে? যার জন্যে দুনিয়া সৃষ্টি তিনি তো সৃষ্টির রহস্য সবি জানে। আমরা শুধু শুধু এই গুলানরে রোগবালাই বইলা ডাক্তাররে পয়সা খাওয়াই। মানুষ এখন কোরান-হাদিসের কথা বাদ দিয়া ডাক্তার-মোক্তারের কথা শোনে। কলির কাল, কী করবেন? তয় ভাবী, যা বললাম তা একটু বিবেচনা কইরেন। আপনাদের ভালোর জন্যেই বলা। আল্লা ভরসা।
মার মুখ থেকে কোনো কথা শোনা যায় নাই। খবিশতো কিছু বলার ক্ষমতাই রাখে না। তারপর দীর্ঘ নীরবতা। শুধু চপচপ করে চিবানো আর কেৎ করে গিলে ফেলা। তারপর ফুরুত ফুরুত করে গরম চায়ে চুমুক দেয়ার শব্দ।
হঠাৎ মার মুখ থেকে কথা বাইর হওয়া শুরু হইলো। মা বলে, ভাইজান . . .
আরে কয় কি? একটু আগে শুনলাম চাচা, এখন শুনি ভাইজান। মা আসলে লোকটাকে তাল দিচ্ছে। খুশি করার জন্যে আরো যে কত কিছু দিতে হবে তা কে জানে।
: আপনি তো আমাদের মুরুব্বি। আমার আপন বড় ভায়ের মতো। আপনি যদি একটু সহযোগিতা না করেন তাইলেতো মহল্লার লোকজন চান্স নেবে। ভাইজান, আপনি একটু ধমক দিয়ে দিয়েন। সব পানির মতো ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।
: মুশকিলে ফেললেন ভাবী। পরিস্থিতি ভালো না।
মার এই ভাইজান জাতীয় মখমলের মতো মোলায়েম সম্ভোধন হুইস্কীর মতো কাজ করেছে। লোকটার কণ্ঠ থেকে মুহূর্তে ঝরে পড়ছে আলগা পিরিতির পাতলা রস। হে হে, আপনি তো জানেন আমি আপনাদেরকে আমার নিকট-আত্মীয় বলেই পরিচয় দিই। তো ইদানীং পরিস্থিতি ভালো না। এই জন্যেই বলতেছিলাম, যা-ই হোক, দেখা যাক কী করা যায়। সময় করে একবার আমার অফিসে আইসেন। জানেন তো, নীচতলার গেরেজটা এখন আমি অফিস হিসাবে ইউজ করি। সামনে আবার ইলেকশন আইতাছে। একটা অফিস না হলে তো হয় না। তো এশার নামাযের পরে একবার আইসেন, দেখি কী করা যায়।
শালা বদের হাড্ডি, মাকে অফিসে যায়তে কেন বলে তা আর আমার বোঝার বাকি নাই! বুঝছি শালাকে একটু ডলা দিতে হবে। এখন যদি নিজেই হেঁটে সামনে গিয়ে দাঁড়াই তো কাপড় নষ্ট করতে বেশী সময় নেবে না। হার্ট অ্যাটাকে মারাও যেতে পারে। এরই মধ্যে মা এসে হাজির। এসো বাবা, তোমাকে একটু দেখতে চেয়েছে বজ্জাত শুয়োরটা।
: মা, ওকে দেবো নাকি একটা ভয়?
: না বাবা, ওকে ভয় দিসনা তাতে আবার কোন ফেকড়া বাধে কে জানে। মানে মানে বিদায় হলে বাঁচি।
: কিন্তু মা, ও তো তোমাকে খারাপ ইঙ্গিত করেছে।
: বাবা খারাপ ইঙ্গিত কেন। গায়ে হাত দিলেও কিছু করার নাই। ওর বাড়িতে থাকি না।
: দাঁড়াও তাহলে দেখাচ্ছি মজা।
: না বাবা কিচ্ছু করিস না। এখন যদি বাড়ি ছাড়তে বলে তাহলে রাস্তায় দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনো গতি থাকবে না। ওরা বড়লোক তাদের সাথে আমরা পারবো না।
: ওকে মা, আর লেকচার দিয়ো না। এই আমি চুপ।
মা আমাকে দুই মাসের শিশুর মতোই কোলে করে নিয়ে দানবের সামনে দাঁড়ালো। আমি দেখলাম দৈত্যের মতো একজন বাড়িওয়ালাকে। ও নির্ঘাত কোনো দানবের সন্তান। চেহারা-সুরত তো তাই বলে। শুনেছি দৈত্যদানব দেখতে কুৎসিত হয়। ঘোঁৎ ঘোঁৎ করে কথা বলে, শ্বাস ফেলে, ফোঁস ফোঁস করে। দাঁতে সবসময় রক্ত লেগে থাকে। মার মুখে শোনা দানবের কিচ্ছার সেই দৈত্যও যে মানুষের রক্ত ছাড়া কিছুই পান করে না, হাড়গোড় খায় মুড়ির মতো মচমচিয়ে, মাংস খায় জ্যাম-জেলির মতো চেটে চেটে। লোকটার চোখেমুখে শুধুই ক্ষুধার চিহ্ন, শুধুই গিলে ফেলার বাসনা বাষ্প হয়ে বের হয় শরীরের প্রতিটি রোমকূপ দিয়ে, ভিজিয়ে দেয় গায়ের আরবী আসকান। লোকটা যেন সারাক্ষণই ঘামের সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে।
আমিও বড় হলে বাড়িওয়ালা হবো। বাড়িওয়ালা হতে হলে কী করতে হয় কে জানে! মনে হয় খুব কঠিন ইন্টারভিউ দিয়ে বাড়িওয়ালা হতে হয়। কিন্তু লোকটাকে দেখে কিন্তু খুব বুদ্ধিমান মনে হচ্ছে না। মুখে ঝাড়ুর পুটকির মতো খোঁচা খোঁচা দাড়ি, মাথায় টুপি, কপালে কে যেন টুন দিয়েছে তার পুরোনো দাগ। ঠোঁট জোড়া কালচে লাল, মনে হয় দাঁত দিয়ে রক্ত পড়ে। না, আমি এমন পাষণ্ড টাইপের মানুষ হইতে পারি না। আমি যে কী হবো তা নিয়ে খুব বেশী চিন্তা করি নাই, করতে পারি না। খবিশের মতো হবো, বাড়িওয়ালার মতো হবো, রক্তচোষা ডাক্তার হবো, নাকি মার বসের মতো দিলদরাজ ইডিয়েট হবো, নাকি কুত্তার মতো হামাগুড়ি দেয়া কালো র্যাব বা পুলিশ হবো? কী হবো আসলে আমি? বড় বড় মানুষগুলো ইতরামি ছাড়া আর কিছু পারে বলে তো মনে হয় না। অন্তত আমার অভিজ্ঞতা তাই বলে। আজব ব্যাপার, দুনিয়াতে আসলাম প্রায় ৩ মাস হতে চললো, দেখলাম বেশ কিছু পুরুষ যারা আমারই জাত ভাই। আই মিন পুরুষ শ্রেণীর। আমি বড় হলে যে তাদের একজন হবো তাতে কোনো সন্দেহ নাই। তার মানে আমি মানুষ হয়ে জন্মেছি ইতর হওয়ার জন্যে। আমার পরিণতি হয় সমাজের এক কোনায় পড়ে পচেগলে মরবো, না হয় বড় মাপের একজন ইতর হয়ে সমাজের সেবা করবো। আর তাই যে যত বড় ইতর সে তত বড় মাপের সফল মানুষ। কী চমৎকার সিসটেম! কী বড় বড় ইনস্টিটিউড, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ইউনিভার্সিটি, এই প্রতিষ্ঠান, সেই প্রতিষ্ঠান সবাই কী নিষ্ঠার সাথে ইতর বানানোর কসরত করে যাচ্ছে। বাবা-মা হাজার হাজার টাকা খরচ করছে ছেলেমেয়েকে কিভাবে বড় মাপের ইতর বানানো যায় সেজন্যে। আর করবে না কেন, সবাইকেই তো দৌড়ে ফাস্ট হতে হবে। ল্যাং মারতে না জানলে এই পঙ্গপালের মধ্যে ফাস্ট কেন লাস্টও হতে পারবে না। অকালে প্রাণ হারাবে। যাক, এতক্ষণে আমার মাথা পরিষ্কার হয়েছে। আমাকে বড় মাপের একজন ইতর হইতে হবে। তাহলে আমি টেক্কা দিতে পারবো দেহজীবী খবিশের সাথে, দানব বাড়িওয়ালার সাথে, ভেম্পায়ার ডাক্তারের সাথে, কুত্তা পুলিশের সাথে। তখন আর আমার কোনো সমস্যাই থাকবে না। মাকেও অনেক টাকা-পয়সা দিতে পারবো। বাড়ি বানিয়ে দিতে পারবো। মার আর কোনো দুঃখ থাকবে না। মা আমার বড় দুঃখী। বিনা কারণেই অনেকের সাথে শুতে হয় তাদের খুশি রাখার জন্যে। তখন মার অনেক কষ্ট হয়। যাক সে কথা। এখন মনে হয় দানবটা যাবে। সে উঠে দাঁড়াতেই খবিশ এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলো। আমরা সবাই যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম। কিছুক্ষণ পিনপতন নীরবতা। সবাই দানবের সম্ভাব্য আক্রমণের হাত থেকে বেঁচে যাওয়ার শুকরিয়া আদায়ে ব্যস্ত। যদিও আমি ব্যস্ত আমার চিন্তা নিয়ে। কিভাবে একজন বড় মাপের ইডিয়েট হওয়া যায়। এর জন্যে চাই উপযুক্ত শিক্ষা। বিদেশে পড়াশুনা করতে পারলে মনে হয় সবচেয়ে ভালো হবে। দেখা যাক কী আছে কপালে।
চলবে।