প্রশান্তিকা ডেস্ক: একের পরে এক বাঙালি খাবার রান্না করে প্রতিযোগিতায় সামনের দিকে ধাবিত হচ্ছেন মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশী বংশদ্ভুত প্রতিযোগী কিশোয়ার। গতকাল এক এলিমিনেশান পর্বে গোট বা খাসির রেজালা রান্না এবং পরোটা বানিয়ে বিচারকদের মুগ্ধ করেন কিশোয়ার। অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো মাস্টারশেফে গতকাল ৫ জন প্রতিযোগীর মধ্যে নকআউট বা এলিমিনেশান পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। রান্না খারাপ হলে কিশোয়ারও বাদ যেতে পারতেন। অবশেষে কিশোয়ার তাঁর স্বভাবজাত সুস্বাদু রান্না করেই পরবর্তী পর্বে উত্তীর্ন হন। বিচারকেরা তাঁর রান্নার ভূয়শী প্রশংসা করে বলেন এভাবে রান্না করলে কিশোয়ারের ফাইনাল পর্যন্ত যেতে কোন বাঁধা নেই।
গোট রেজালা কি ? বিচারকের প্রশ্নের জবাবে কিশোয়ার বলেন, এটি একটি ক্লাসিক বাঙ্গালী ডিস, যা খুব ঝাল হয়না। গতকালের প্রতিযোগিতার সময় উদ্বিগ্ন কিশোয়ার বলেন, “ আমি আমার সন্তান এবং স্বামীর কাছ থেকে অনেক দূরে রয়েছি, দূরে রয়েছি মা বাবার কাছ থেকেও। আমি আমার হেরিটেজ বাঙালি এবং পরিবারের সবাইকেই যেনো এখানে ক্যারি করছি। এই প্রেসার টেস্টে আমাকে উঠে আসতে হবে। আই কান্ট লেট দেম ডাউন।” হয়তো বাংলায় কোন রিয়েলিটি প্রতিযোগিতা হলে কিশোয়ার বলেই ফেলতেন- তাদের সকলের দোয়া রয়েছে তাঁর সঙ্গে। গতকালের প্রতিযোগিতায় কিশোয়ার বলেন, ‘ আমি এখনও বাদ যেতে চাইনা। কারণ আমি আরও বাঙালি খাবার বিশেষ করে বাংলাদেশের মিস্টি খাওয়াতে চাই।’
সময় স্বল্পতার কারণে তাঁর গোট মাংস সিদ্ধ হবে কিনা এটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন কিশোয়ার। তারপর তিনি প্রেসার কুকারের সাহায্য নেন। সেসময়ে কিশোয়ার বলেন, “গোট যদি কুক না হয় আমি কম্পিটিশনে আর নেই। আমার আশা প্রেসার কুকার বিহেভ করলে হতাশ হবোনা। আর বিট্রে করলে আই আম আউট।” অবশ্য তাঁর নির্ধারিত রান্নার সময়ের মাত্র ৪/৫ মিনিট আগে মাংস সিদ্ধ হয়। এরপর তিনি চুলায় মসলাসহ আরও একটু রান্না করে নেন।

টেস্টিংয়ের সময় বিচারকেরা বলেন, খাসির স্বাদ খুব রিচ হয়েছে। জিন্জার বা আদার ফ্লেভার চমৎকার। পারফেক্টলি কুকড। ইটস্ এ ম্যাজিক। বিচারক ও সেলিব্রেটি শেফ জক জনফ্রিলো বলেন, কিশোয়ার অবশ্যই ফাইনালের পথে এগুচ্ছেন।
উল্লেখ্য, গতকাল পর্যন্ত প্রতিযোগিতায় মোট ১০ জন প্রতিযোগী ছিলেন। তারা একেকজন একেকদিক থেকে সেরা। দশজনের মধ্যে কিশোয়ার সহ পাঁচজন এলিমিনেশান রাউন্ডে পড়েছিলেন। তাদের মধ্য থেকে কিশোয়ার সহ বাকী তিনজন পরবর্তী রাউন্ডে উত্তীর্ন হন। নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য থেকে যাওয়া আইনে স্নাতক টম কাল প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়েন।
মেলবোর্ন প্রবাসী কিশোয়ার চৌধুরী চ্যানেল টেন’র রিয়েলিটি শো মাস্টারশেফ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন পর্যায়ে বাংলাদেশী খাদ্যের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার দর্শকদের পরিচিতি করাচ্ছেন। গত পর্বে তিনি রান্না করেছিলেন খিচুরির সাথে বেগুন ভাজা। তার আগের পর্বগুলোতে মুরগীর রোস্ট, মাছের ঝোল, কালাভুনা, সমুচা, আলুর দম, তেঁতুলের চাটনি এমনকি বাংলাদেশের প্রখ্যাত স্ট্রিটফুড চটপটি ও ফুসকাও বানিয়েছিলেন। তাঁর হাতের সব বাঙালি খাবার বিচারকদের ভালো লেগেছে এবং ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে।