প্রশান্তিকা ডেস্ক: অভিনয় শিল্পী আফরান নিশো, মেহজাবিন, ব্যারিস্টার সুমন সহ চ্যানেল আইয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। একাত্তর অনলাইন জানায়, নাটক এবং টেলিভিশনের একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পর্কে ‘নেতিবাচক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর’ ধারণা এবং অবজ্ঞাসূচক শব্দ ব্যবহারের অভিযোগে মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছে।

একাত্তর জানায়, আজ বুধবার ১১ আগষ্ট ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর ছিদ্দিকীর আদালতে বশির আল হোসাইন নামের একজন প্রতিবন্ধী অধিকারকর্মী মামলা দুটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে পিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছে। মামলা নাম্বার ৪৮১ ও ৪৮২। আদালত পরবর্তী শুনানির তারিখ দিয়েছে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর তারিখে।
প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয় ‘ঘটনা সত্য’ নামের একটি নাটক নিয়ে, যা চ্যানেল আইয়ের ঈদুল আজহার আয়োজনে ২৩ জুলাই প্রচার করা হয়েছিল। এ বিষয়ে মামলায় আসামি করা হয় চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, নাটকের চিত্রনাট্যকার মঈনুল সানু, পরিচালক রুবেল হাসান, অভিনেতা আফরান নিশো, অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরীকে।
আর দ্বিতীয় মামলাটি করা হয়েছে চ্যানেল আইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠান ‘টু দ্য পয়েন্ট’ এর ১১ জুলাইয়ের পর্ব নিয়ে, যেখানে একজন আলোচকের কথায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে ‘নেতিবাচক ধারণা’র প্রকাশ ঘটেছে বলে অভিযোগ এসেছে। জানা যায় উক্ত আলোচনায় বাংলাদেশ ফুটবলের ব্যর্থতাকে উল্লেখ করতে গিয়ে সুমন ফুটবলকে প্রতিবন্ধী করে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
এ মামলায় আসামি করা হয়েছে-ফরিদুর রেজা সাগর, শাইখ সিরাজ, অনুষ্ঠান পরিকল্পনাকারী জাহিদ নেওয়াজ খান, প্রযাজক রাজু আলিম, উপস্থাপক সোমা ইমলাম এবং আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকা ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে।

বাদীপক্ষের অন্যতম আইনজীবী জীবনানন্দ জয়ন্ত একাত্তরকে বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের সম্পর্কে এমনিতেই সমাজে বিভিন্ন নেতিবাচক ধারণা প্রচলিত আছে। যখন মিডিয়ার দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যখন একইরকম নেতিবাচক কথা বলেন, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেন এবং প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে অবৈজ্ঞানিক নেতিবাচক ধারণা প্রচার করেন তখন সমাজে প্রতিবন্ধী মানুষদের অবস্থা আরও সঙ্কটাপন্ন হয়ে ওঠে। জানা যায় মামলা দুটির বাদী বশির আল হোসাইন, সাক্ষী এবং একজন আইনজীবী মোহাম্মদ রেজাউল করিম সিদ্দিকী সবাই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।
উল্লেখ্য, ‘ঘটনা সত্য’ নাটকটি প্রচারিত হওয়ার পরে দেশব্যাপি এবং দেশের বাইরে বাঙালিদের মধ্যে সমালোচনার ঝর উঠে। অবশেষে কতৃপক্ষ ইউটিউব থেকেও নাটকটি নামিয়ে নেয়। নাটকের পরিচালক এবং অভিনয় শিল্পীরাও দু:খ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়।