মোহাম্মাদ নাসিম আর নেই

  
    
মোহাম্মসদ নাসিম

প্রশান্তিকা ডেস্ক: সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি……রাজিউন)। আজ শনিবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে তাঁর মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয়। টানা দুই সপ্তাহ হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চলে গেলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একজন বিশ্বস্ত সহযোদ্ধাকে হারালাম”। কাল সকাল ১০টায় জানাজা শেষে বনানী গোরস্তানে তাঁকে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে। রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, স্পিকার, বিএনপি মহাসচিব, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা তাঁর মৃত্যুতে শোক জ্ঞাপন করেছেন। তাঁর শরীরে করোনাভাইরাস নেগেটিভ আসার পরেও সর্ব সাধারণকে জানাজায় অংশ না নিতে অনুরোধ করেছেন তাঁর ছেলে সাবেক এমপি তানভীর শাকিল জয়।

তাঁর মৃত্যুতে উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামীলীগ কর্মী ও নেতারা শোকে মুহ্যমান। প্রশান্তিকার সঙ্গে আলাপকালে সিরাজগঞ্জের বেশ ক’জন আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা বলেন, “তাঁর মৃত্যুতে আমরা অভিভাবক হারালাম। মোহাম্মাদ নাসিমের অবদানে উত্তর বঙ্গে প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। তাঁর কাজের মাধ্যমে আমরা তাকে স্মরণ করবো।”

ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান চৌধুরী বলেন, বেলা ১১টা ১০ মিনিটে নাসিমের মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর আগে তিনি আইসিইউতে ছিলেন। তাঁর মস্তিস্কে অপারেশন হয়েছিলো। তারপর থেকেই তাঁর জ্ঞান ফিরে আসেনি। একটু সুস্থ হলেই তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো।

মোহাম্মদ নাসিমের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারের অভ্যন্তরে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম। তিনি সংসদে পঞ্চমবারের মতো সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন। কাজীপুরবাসী তাঁকে নয়নমনি উপাধী দিয়েছিলেন। তিনি কখনই সেখানকার নির্বাচনে হেরে যাননি।

জানা গেছে, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে উচ্চ রক্তচাপ ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মোহাম্মদ নাসিমকে রাজধানীর শ্যামলীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রথম অবস্থায় তাঁর শরীরে করোনা পজিটিভ হলেও পরপর তিনবার পরীক্ষায় নেগেটিভ এসেছে।
মোহাম্মদ নাসিম আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রও তিনি। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ নাসিম। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি স্বরাষ্ট্র এবং ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ এবং গৃহায়ন ও গনপুর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
মোহাম্মাদ নাসিম জাতীয় চার নেতার অন্যতম ক্যাপ্টেন মোহাম্মাদ মুনসুর আলীর সুযোগ্য সন্তান। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর আসন থেকে সব সময়ের নির্বাচিত সাংসদ। এছাড়াও তিনি সিরাজগঞ্জ সদর থেকেও নির্বাচিত হয়েছেন। উত্তরবঙ্গের আলোকিত রাজনীতি পরিবারের তিনি উত্তরসূরি।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments