প্রশান্তিকা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০ জানুয়ারী যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর বারোটায় আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেন জো বাইডেন। শপথের পরপরই তাঁর স্ত্রী ফার্স্ট লেডি মিসেস বাইডেন তাকে সম্বর্ধনা জানান। তারপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘ আজ গনতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত হলো। আমি আমার পূর্ববর্তী সকল দলের সকল প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানাই। আমি সকল আমেরিকানের প্রেসিডেন্ট আজ থেকে।’

তবে তাঁর শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে মার্কিন ইতিহাসের কোনো প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের প্রেক্ষাপট ছিলো অনেকটাই ভিন্ন। সাধারণ জনতার পরিবর্তে উপস্থিত ছিলেন হাজার হাজার পুলিশ, সেনা এবং সিকিউরিটি কর্মকর্তারা।
এনবিসি নিউজের খবরে বলা হয়, কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের ওয়েস্ট ফ্রন্টে আয়োজিত নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাঁকজমকপূর্ণ অভিষেক অনুষ্ঠান হয়। উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্টরা। তবে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম আগেই ঘোষণা দিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। ছিলেন কংগ্রেসের নেতা ও খ্যাতনামা শিল্পীরা। আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত গান লেডি গাগা। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আফ্রিকান- ভারতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন কমলা হ্যারিস। ছিলো কুচকাওয়াজ। জানানো হয় নিহত বীরসেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা।

কিন্তু আয়োজনগুলো হয়েছে এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে, যখন দুই হুমকিতে রীতিমতো লকডাউনে রয়েছে ওয়াশিংটন ডিসি। এর একটি করোনা মহামারির সংক্রমণ, অন্যটি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের সম্ভাব্য সহিংস আচরণ। করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে মারা গেছেন চার লাখের বেশি মানুষ। আর সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের রক্তক্ষয়ী হামলা-সহিংসতায় নিহত হয়েছেন পাঁচজন, আহত কয়েক শ। হয়তো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান স্ক্রিনে দেখবেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ। যদিও করোনার সংক্রমণ ও ট্রাম্প সমর্থকদের সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কায় অভিষেক অনুষ্ঠানের স্থান ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মলে লোকজনের উপস্থিতিটা ছিলো সবচেয়ে কম। তার মানে অধিকাংশ মানুষ অনুষ্ঠান দেখেছেন নিজ বাড়িতে বসে টেলিভিশনের পর্দায়।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের চেয়ে বাইডেনের অনুষ্ঠানটি হয়েছে অনেক তারকাসমৃদ্ধ। উপস্থিত ছিলেন টবি কিথ, লি গ্রিনউড, লেডি গাগা, জেনিফার লোপেজ, ব্রুস স্প্রিং স্টিন ও সুপারস্টার গার্থ ব্রুকস প্রমুখ। মার্কিন নোবেল বিজয়ী কবির কবিতা পাঠ করেন আমান্ডা গোরমান।
অন্যান্য প্রেসিডেন্টের অভিষেকের মতো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানেও দর্শক-শ্রোতার সারিতে ছিলেন কংগ্রেস ও সুপ্রিম কোর্টের অধিকাংশ সদস্য। ছিলেন সাবেক কয়েকজন প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি। যেমন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বিল ক্লিনটন এবং সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, লরা বুশ ও হিলারি ক্লিনটন। তবে সবচেয়ে বয়সী সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার (৯৬) ও সাবেক ফার্স্ট লেডি রোজালিন কার্টার উপস্থিত ছিলেন না। তাঁরা নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে তাঁদের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন।