সেই তুমি
চলতে চলতে একসময় অচেনা হয় দু’পাশ
গাছ গুনতে গুনতে বদলায় গ্রাম
টুকিটাকি ভূগোলেও জাগে পরিবর্তনের অভিলাষ
বদলায় না কেবল আনমনে লেখা নাম।
হাজার ক্ষত মাড়িয়ে যেখানে এসে দাঁড়াই
বাতাসে এক অদ্ভুত তৃপ্তি হামাগুড়ি দেয়
নদীকে বইতে দেয় মাটি নালিশ ছাড়াই
পাখিরা তাদের সঙ্গীদের বুকে ডেকে নেয়…
এখানে গাছ গুলোর মন বড়ই নরম
কাঠ সাজিয়ে হয় না টেবিল চেয়ার
ফুলেদের গন্ধ ছড়ানোয় থাকে তোমার ধরন
এখানে সবাই খবর রাখে সবার।
চলে এসো একদিন সঙ্গোপনে
চলতি নিয়মে ছুটি পাও যদি
আমি রোজ দেখি ভোর স্বপ্নে
জান্নাতি তুমি দুর্বল হচ্ছো আমার প্রতি।
কামনা
চলো আজ একসাথে পথ চলি
চোখে চোখে ভালোলাগাদের রাখি,
মিটিয়ে নিই নিজেদের সব ধার বাকি
চলো আজ আকাশের দিকে সংকল্প বলি।
চলো আজ একসাথে ঘুমাই রাতে
গল্প করি রাত জুড়ে সিলিংয়ের পানে
চলো আজ দেখব, লোভ কোথায় থামায়
তোমারও তো একই কামনা মনে মনে।
আবছায়ার মাঝে
তোমার বোন এসেছিল আজ,
খবর পেলাম তুমি ভালো নেই।
আমাকে তোমার সহ্য হয়না, বলেছ বহুবার
অথচ আমাকে ছাড়া মুচড়ে যাচ্ছো রোজ।
তুমি কী দেখোনি লক্ষ মাইল উপর থেকে
পাঁচটি সমুদ্রও কেমন সুতো হয়ে যায়,
সেখানে আমিতো নামহীন একজন।
তাই বলছি, সংযত ভাবে নেমে এসো কাছে
সংকুচিত করো বিস্ফোরিত দৃষ্টি
দেখবে আমিইতো আছি চারিদিকের আবছায়ার মাঝে।
জীবন্ত
শেকড়টা এখনও জীবিত
আরও আলগা কর মাটি
শিশির আটকে রেখে পচিয়ে দাও ভেতর,
মুঠো মুঠো বিষ ছড়িয়ে দাও গোড়ায়
পারলে কেটে দাও, যত ভাগে পারো
তবু আগুন এঁকো সেখানে
শেকড়টা এখনও জীবিত
ছোঁয়া খোঁজে।
বসন্তের ক্ষত
ঋতুতে এবার ফাগুন জমেনি ফুলে
বাজারে নামেনি পাখিদের অভিমান
খুব সহজভাবেই গেলি সব বলে
অথচ কথাগুলো আপনের গন্ধ রেখেছিল কম।
বুকের পাঁজর খতিয়ে দেখেছি তোর
খোয়া গেছে হৃদয়ের গাঢ় লাল রং
খুঁজতে খুঁজতে সন্ধ্যা হল ভোর
ফিরে দেখি আমার মনেও জং।
কার কথা ভেবে স্নানে যাস?
পথে কুঁড়িয়ে বেড়াস ছেঁড়া জুতো
বনে পায়ের শব্দও পাস
আঁচল টানিস আমার উপস্থিতির ছুতো।
সেদিন দেখেছিলাম কামাতুর শরীরের ক্ষত
রক্ত আবেগ চাপায় সেই সব অঙ্গে
সে বসন্তে আমরাও হারিয়েছি ইচ্ছেমত
তোর আজকের প্রিয় সেখানে বৃষ্টি আনে নিজ রঙ্গে।
আমার তো শুধু হেসে কথা বলা
মুঠো ভরা থাকে বিষে
আমার অচল মনে জোর দিয়ে চলা
বেঁচে আছে দেহ তোকে কাগজেকলমে পিষে।
কলঙ্কের হার পরাতে পারিনা তোকে
তোর জীবন রঙিন সন্ধ্যা আঙিনায়
তবু তোর ছাদে যেতে ভয় চোখে
বেখেয়ালি চাঁদ হারায় যদি শুকতারায়।
রুবেল মণ্ডল
মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ।