আরিফুর রহমান: একটা গানের লাইন আছে না, ‘মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যে’। হ্যা মানুষতো মানুষের জন্যই হওয়া উচিত। আদিকাল থেকে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। মানুষের বিপদের সময় এমন কি সুখেরও সময়। এই ব্যপারে বাঙালী জাতি চিরকালই এগিয়ে।
করোনার করাল গ্রাসে দুনিয়া আজ নিত্য বিপদের মধ্যে যাচ্ছে। সেখানেও বাঙালীরা পিছিয়ে নেই। যার যা কিছু সম্বল তাই নিয়েই একজন আরেকজনের সাহায্যে এগিয়ে আসছে। দেশেও যেমন বিদেশেও তেমন। এই জন্যেই পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে গেলেই বাঙালী চেনা হয়ে যায়। পদ্মা, যমুনা বা ব্রহ্মপুত্রের পাড় থেকে সুদূর প্রশান্ত মহাসাগরের পাড়ে এসে বসতি গড়েছে বাঙালীরা। তারাও পাশে দাঁড়িয়েছে সতীর্থ বাংলাদেশিদের। এখানে অধিকাংশের চাকুরী নেই। সবাই ভীষণ ভাবে অসুবিধার মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে ছাত্ররা। আজ প্রায় ১০ দিন হলো লাকেম্বায় প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতা কর্মী, সংগঠক এবং ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত চেষ্টায় খাবারের ব্যবস্থা করছেন। মূলত: ছাত্রদের উদ্দেশে করা হলেও অন্যান্য শ্রেণীর প্রবাসীরাও প্রয়োজনে আসছেন। বেশ ক’দিনের কার্যক্রম উপস্থিত থেকে দেখতে পেরেছি। ছাত্ররা আসছেন আর দু’বেলার খাবার নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের চোখে মুখে একটু লজ্জা থাকলেও আয়োজকদের আন্তরিকতায় দু:সময়ের এই সহায়তায় তারা যে খুব খুশি তা পরিস্কার বুঝা গেলো।

আজ রোববার বাংলা সালের চৈত্র সংক্রান্তি। রাত পোহালেই পহেলা বৈশাখ। বাংলার নববর্ষ। করোনার প্রকোপে আমরা যেনো ভুলে না যাই নববর্ষের দিনটি। সেটা মাথায় রেখে পহেলা বৈশাখে সোমবার আয়োজন করা হয়েছে বৈশাখের বিশেষ আয়োজন পান্তা ইলিশ।

বৈশাখের আয়োজনটি রন্ধনের দায়িত্ব নিয়েছেন সিডনি বাংলাদেশীর বিখ্যাত শেফ গৌতম সাহা।
বরাবরের মতো এবারও যেনো ছাত্রদের বৈশাখের আনন্দ যেনো মলিন হয়ে না যায় তাই এই ব্যবস্থা, জানালেন উদ্যাক্তাদের একজন আল নোমান শামীম। তিনি আরও বললেন, এটা আমাদের দায়িত্ব। আমাদের ছেলে মেয়েরা দূর দেশে এসে খেতে পারবেনা এটা তো আমরা হতে দিতে পারিনা। তাই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি এবং সবসময় তাদের পাশে থাকব।” খাবার নিতে আসা ছাত্ররা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছেন। রয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার সহ হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা।

উল্লেখ্য, করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই আয়োজনটির সঙ্গে রয়েছেন আল নোমান শামীম, সালমিন সুলতানা, চমন রহমান, নাহিয়ান আজমল, নির্মল্য তালুকদার, জাকির হোসেইন, আবুল হাসনাত মিল্টন, শাহে জামানটিটো, আলী আশরাফ হিমেল, মহিউদ্দিন কাদের, মোহাম্মাদ কবির(রেঁস্তোরা ব্যবসায়ী), শাহ নেওয়াজ আলো, গৌতম সাহা, কাজী আরমান, অপু সারোয়ার প্রমুখ। লাকেম্বার নার্গিস রেস্টুরেন্ট এগিয়ে এসেছে তাদের কিচেন সুবিধা নিয়ে। শুরু থেকেই বাংলাদেশী কমিউনিটির অনেকেই সাহায্য সহযোগিতা করে এই মহতী কাজের সাথে জড়িত রয়েছেন।