প্রশান্তিকা রিপোর্ট: বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ অস্ট্রেলিয়া’র উদ্যোগে ২৪ আগস্ট শনিবার সন্ধ্যায় সিডনির হলিডে ইন হোটেলে জাতীয় শোকদিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন অস্ট্রেলিয়া আওয়ামীলীগ সভাপতি সিরাজুল হক। ‘বিশ্বের বিস্ময়, তুমি আমার অহংকার’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে মঞ্চে উপবিস্ট ছিলেন সাধারন সম্পাদক পিএস চুন্নু, কলামিস্ট অজয় দাশগুপ্ত, শিক্ষাবিদ ও লেখক ড. কাইউম পারভেজ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পিএস চুন্নু।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই ১৯৭৫ সালে নির্মম হত্যাকান্ডে নিহত জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের নিহত সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর বিশেষ দোয়া করে মোনাজাত করা হয়।
এরপর সিডনি বেঙ্গলি ইন্ক সাংস্কৃতিক দলের পক্ষ থেকে বিশেষ পরিবেশনা সঞ্চালনা করেন সেলিমা বেগম। প্রথমেই নির্মলেন্দু গুণের কবিতা ‘আমি মুজিবের কথা বলতে এসেছি’ আবৃত্তি করে শোনায় পৃথিবী। দেশের গান ‘সূর্যোদয়ে তুমি’ গানটি শোনায় মুন। সবশেষে ঐহিক তারিক শোনায় সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা ‘আমার পরিচয়’ ।

প্রধান অতিথি আমিনুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি সেদিন রেডিওতে সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ সেটা হতে দেয়নি। কারণ ওরা জানতো সেদিনই সাড়ে ৭ কোটি বাঙ্গালীকে কোনভাবেই দাবায়ে রাখা যেতোনা। ৭৫’র পর ৯৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ একুশ বছর যেসব সরকার ক্ষমতায় এসেছে তারাও পাকিস্তান সরকারের সেই একই ধারা অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর স্পিরিটকে বাড়তে দেয়নি, এমনকি তাঁর হত্যার বিচার বন্ধ করতে তারা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছে।
আমিনুল ইসলাম উপস্থিত সুধীমন্ডলীদের বিদেশে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের চেয়েও প্রত্যেককে অতীব গুরুত্বপূর্ণ আ্যমবাসেডর বলে অভিহিত করেন।
বিশেষ বক্তব্যে অতিথি বক্তা কবি, কলামিস্ট ও লেখক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, আগস্টের শোক শক্তিতে পরিনত হোক বলে আসলেও প্রকৃত বাংলাদেশে এটি শক্তিতে পরিনত হয় নাই। আমরা জিয়াউর রহমানকে খুনি বললেও খন্দকার মোশতাক বা বিদেশী শক্তি যারা এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের পেঁছনে ছিলো তাদের কিছুই বলিনা, কেনো ? আবার শুধু শোকের আগস্ট মাস এলেই আমরা নূর চৌধুরীসহ বিদেশে পলাতক অন্যান্য আসামীদের ফিরিয়ে আনতে তৎপর হই, কিন্তু সারা বছর নয় কেনো?
ড. কাইউম পারভেজ বলেন, একাত্তরে জন্ম নেয়া প্রজন্মদের উদ্দ্যেশে বলছি শেখ মুজিব বলতেন আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাইনা আমি বাঙ্গালীর মুক্তি চাই, তিনি আজীবন এমন মুক্তিকামী মানুষ ছিলেন।
সভাপতির ভাসনে আইনজীবি সিরাজুল হক একটি ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণে বলেন, “প্রায় ২০ বছর আগে আমি সিডনিতে একটি চাকুরী নিতে গিয়েছিলাম, ম্যানেজার আমাকে বাংলাদেশী মনে করে বলেছিল যে জাতি তার জনককে খুন করে সেই বাংলাদেশীকে আমি চাকুরী দেবনা।” তিনি আরও বলেন, আজকের বাংলাদেশে রাজধানীতে সবার একটি করে প্লট বা ফ্লাট থাকলেও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব কোন কিছুই নেই। এরকম দেশপ্রেমে নিবেদিতা কন্যার হাত দিয়েই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে উঠবে।
আলোচনা পর্বের প্রথমেই বক্তব্য রাখেন অস্ট্রেলিয়া ছাত্রলীগ সভাপতি আমিনুল ইসলাম রুবেল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্বপ্ন, হাফিজ, সিডনি আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্মল কষ্টা, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জয়েন্ট সেক্রেটারী গিয়াস উদ্দিন মোল্লা, মোহাম্মাদ আলী শিকদার, ড. মলয় বিশ্বাস, বঙ্গবন্ধু পরিষদের ড. রতন কুন্ডু প্রমুখ।
গিয়াস উদ্দিন মোল্লা তার বক্তব্যে একবার ইচ্ছা প্রকাশ সত্বেও অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানে না আসায় বিস্ময় প্রকাশ করেন। অবশ্য পিএস চুন্নু জানান, গুরুত্বপূর্ণ সরকারী কাজ থাকায় হাইকমিশনার আসতে পারেননি বলে অবহিত করেন এবং তাঁর পাঠানো বাণী পড়ে শোনান। সেইসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও বাণী পড়ে শোনান।