প্রশান্তিকা ডেস্ক: রাজধানীর কলাবাগানে নিহত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ছাত্রীকে তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া সদরের গোপালপুরে শনিবার সকাল ৭টায় জানাযা শেষে দাফন করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার রাতে তার মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
জানা গেছে, রাজধানীর কলাবাগানের ডলফিন গলি এলাকায় ধানমন্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষনের অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বয়ফ্রেন্ড তানভীর ইফতেখার দিহান ও তিন সহপাঠীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই তরুণী (১৭) ও লেভেলের শিক্ষার্থী ছিলেন। তবে পুলিশ শুধু তানভীর ইফতেখার দিহানকে আসামী করে তাকে গ্রেফতার করেছে। রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকায় ও-লেভেল পড়ুয়া স্কুলছাত্রীকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে আসামি তানভীর ইফতেখার দিহান।
শুক্রবার তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হয়। পরে জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামান।
নিহত শিক্ষার্থীর বোন জামাই শরীফ বলেন, “সে সম্পর্কে আমার চাচাতো শ্যালিকা। এ বছর মাস্টারমাইন্ড স্কুল থেকে ও-লেভেল পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটার দিকে কলাবাগানের ডলফিন গলিতে কোচিং করতে গেলে এ সময় তার এক বান্ধবী মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে একটি বাসায় নিয়ে যায়। এ সময় ওই বাসাতে চারজন মিলে তাকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে প্রচন্ড রক্তপাত শুরু হলে অভিযুক্ত তানভীর ইফতেখার দিহান তাকে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিকাল পাঁচটায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।”
চিকিৎসকরা জানান, তার শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তার পেটের ডান পাশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে কলাবাগান থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, নিহত শিক্ষার্থীর মা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে চাকরি করেন। বাবা ব্যবসায়ী। তিন ভাই বোনের মধ্যে সে ছিল বড়। নিহত শিক্ষার্থীর মা জানান, “ আমার মেয়েকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ও আমাকে যখন ফোন করে জানিয়েছিল তখন আমি অফিসে ছিলাম। আমাকে জানায়, মা আমি ক্লাসের ওয়ার্কসিট আনতে যাচ্ছি। এই বলে গেছে। দুপুর একটার পরে একটি ছেলে মুঠোফোন থেকে ফোন দিয়ে জানায়, আমার মেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে। ওকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। আপনারা আসেন। পরবর্তীতে গিয়ে দেখি মেয়ের নিথর দেহ পড়ে আছে। ওকে হাসপাতালেই আনা হয়েছে মৃত।”
তবে মায়ের অভিযোগ- শুধু একজনকে আসামী করে মামলা করা হলো। তিনি বলেন, “ থানায় মামলা দিতে গেলে দিহানসহ চারজনকে আসামি করার কথা বলা হয়। কিন্তু পুলিশ কেন একজনকে আসামি করল।” আর বাবা বলছেন, ‘আমি বারবার বলেছি মেয়ের জন্ম ২০০৩ সালে। পাসপোর্ট দেখিয়ে বলেছি মেয়ের বয়স ১৭। কেন তাকে ১৯ বানানো হলো?’