প্রশান্তিকা ডেস্ক: বাংলাদেশে বহুল আলোচিত হলি আর্টিজান ক্যাফেতে জঙ্গি হামলার মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে আজ। বিচারক মুজিবুর রহমান তাঁর রায়ে জীবিত গ্রেফতারকৃত ৭ আসামীকে ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন। অভিযুক্ত অন্য এক আসামী মিজানুর রহমান ওরফে বড়ো মিজানকে খালাস দেয়া হয়েছে। আজ ঢাকার সময় দুপুর ১২টার মধ্যে শুরু হওয়া রায় ঘোষণায় বিচারপতি প্রায় ১০ মিনিটেই মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা দেন। আদালত চত্বরে রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবিরা বলেন, সাত জনের ফাঁসি ও একজনের খালাস রায়ে তাঁরা সন্তষ্ট।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি হলো : হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবির নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।

প্রশান্তিকার বাংলাদেশ সংবাদদাতা ঢাকা থেকে জানান, রায় উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত চত্বরে আজ বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আজ সকাল ১০ টার দিকে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে আসামীদের আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে। এরপর তাদের আদালতের পঞ্চম তলায় বিচারকের এজলাসে হাজির করা হয়। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এই মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

গত ১৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারক রায় ঘোষণার জন্য ২৭ নভেম্বর নির্ধারণ করেন। এ পর্যন্ত মোট ১১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। একই বছরের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির মুখ্য মহানগর হাকিম সিএমএম আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে নাম থাকা ২১ আসামির মধ্যে ১৩ জন মারা যাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নিহত ১৩ জনের মধ্যে আট জন বিভিন্ন অভিযানে এবং পাঁচ জন ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
ঘটনাস্থলে নিহত পাঁচ আসামি হলো : রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল। আর বিভিন্ন ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানের সময় নিহত আট আসামি হলো তামিম চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ার জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোটো মিজান।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানের হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। এ সময় তাদের গুলিতে পুলিশের দুই সদস্য নিহত হন। পরে অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। পুলিশ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করেছিলো।