মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার জন্য ব্যবহৃত ‘কেরোসিন’ ও ‘বোরকা’ সরবরাহকারীকে খুঁজছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পাঁচজন অপরাধীর মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হলেও মামলার অন্যতম আসামি শাহাদাত হোসেন শামীমের ভাগনিকে খুঁজছে পিবিআই। রোববার রাতে গ্রেফতার শাহাদাত হোসেন ও নুর উদ্দিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুই ছাত্রীকে (কামরুন নাহার মনি ও জান্নাতুল আফরোজ মনি) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পিবিআই। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, আসামিদের স্বীকারোক্তির আলোকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নুসরাতের আরও দুই সহপাঠীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের প্রায় ১১ ঘণ্টা ধরে দেয়া ৫৭ পৃষ্ঠার জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দেন। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, “হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী উম্মে সুলতানা পপিই নুসরাতকে ডেকে নিয়ে আসেন। কিন্তু নুসরাতের সামনে তাকে কৌশল করে ‘শম্পা’ নামে ডাকেন তারা। এ কারণেই নুসরাত তার জবানবন্দিতে শম্পার কথা বলেছেন। উম্মে সুলতানাই যে ‘শম্পা’ সেটি জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে।”
নুসরাতকে আগুন দেয়ার ঘটনায় অর্থেরও লেনদেন হয়। সোনাগাজী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুকছুদ মাকসুদ ও সেলিম নামে এক শিক্ষক পরিকল্পনাকারি শাহাদাত হোসেন শামীম ও নুর উদ্দিনকে ১৫ হাজার টাকা দেয় এই কাজকে পরিণতি দেয়ার জন্য। অধ্যক্ষের মুক্তি দাবির আন্দোলন ও বোরকা কেনার জন্য কাউন্সিলর মুকছুদ তাদের ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন বলেও শামীম জানিয়েছেন।
ঘটনার পর মামলা হলে সোনাগাজি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন সার্বিক বিষয় দেখাশেনা করবেন বলেও অধ্যক্ষ সিরাজ নিশ্চয়তা দেয় হত্যায় অংশ নেয়া জাবের, শামীম এবং জুবায়েরকে।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, নুর হোসেন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহম্মেদ, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার ও জান্নাতুল আফরোজ।