COVID-19 একটি অনিশ্চিত বিশৃঙ্খল বাস্তবতার নাম -তানজিলা মিম

  
    

গত কয়েক সপ্তাহ ঠিক বুঝে উঠবার আগেই অনেক কিছু মাথার উপর দিয়ে চলে গেল। কি করব কি করব না বুঝবার আগেই বাজার ফাঁকা। পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে কি হবে মানুষের অস্থিরতা আমাকে কিছুটা নাড়া যে দেয়নি তা নয়। তবে কোন এক অজানা কারনে আমার বর্তমান সামাজিক অবস্থাকে খুব একটা আতংকিত করতে পারেনি। কেন যেন মনে হচ্ছিল বার বার কোভিট-১৯ যত না সংক্রামিত,  মানুষের সৃষ্ট অস্থিরতা তার চাইতেও হয়ত বেশি ভয়াবহ।
আমি খুব সামান্য একজন মানুষ । বলা যায় সচেতন মানুষ। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে ধ্যান বা মেডিটেশন চর্চা করছি। এক কালের ডেন্টাল পেশা পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির হেতু পরিবর্তন করে এখন একজন কোয়ালিফাইড কাউন্সেলর সেই সাথে ইন্টারপ্রেটিংও করা হয়। ধর্ম কে ট্রডিশনাল গণ্ডির বাইরে চর্চা করা এই আমি আমার জীবনের অতি ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু বলবার তাগিদ খুব অনুভব করছি। নিজের সম্পর্কে এত কথা বললাম কারন আমার জ্ঞানের সীমা খুবই সীমিত। ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টির  প্রত্যাশায়।

প্রথমেই আমি বলব, আমরা এই মুহূর্তে এমন একটা পরিস্থিতির সম্মুখীন যার মোকাবেলা করতে হবে ধৈর্যের সাথে প্রশান্ত মনে। কারণ  স্রস্টা ধৈর্যশীলদের পছন্দ করেন। আমি জানিনা কোভিড ভাইরাস আসলেই কতটা ভয়াবহ কিংবা এটা আসলে কোন বায়ো উইপেন কিনা। কিংবা এই দুর্যোগ কোন বড় কিছুর আভাস কিনা, আমি জানি না।

মিডিয়াতে অনেক কিছু অনেকভাবে প্রচার প্রচারনা হয়ে থাকে। কোন নিউজটা কিভাবে প্রেজেন্ট করা হলে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে সেটা যারা নিউজ করেন তারা কখনো বুঝে কিংবা না বুঝেই সেটা প্রচার করে থাকেন। টেকনোলজির এই যুগে প্রচার হয়ে অনেক কিছু তবে সেটার অথেন্টিসিটি কতটা সেটা আমরা খুব কম মানুষই বুঝি। আমি বলছি না যে নিউজ দেখবার দরকার নাই। কিংবা সব কিছু ভূঁয়া। তবে যে কোন নিউজ দেখে সেটার অথেন্টিসিটি যাচাই বাঁচাই করা আমাদের কর্তব্য।

আমি ৩ সপ্তাহ আগে অজি একজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন তারা এত টিসু কিনছেন। উত্তর এসেছিল আমরা লকডডাউন হতে যাচ্ছি। আমি বললাম, সেটার জন্য টিস্যু কেন?  উত্তর এলো লকড ডাউন হলে তখন কি করব। যাই হোক তাদের উত্তর আমার বোধগম্য হয়নি সেদিন। এর পর দেখলাম আস্তে আস্তে চাল ডাল তেল সব শেষ। সুযোগ বুঝে বাঙ্গালি ইন্ডিয়ান দোকানের প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে  আকাশচুম্বী। আমি তেমন কিছুই আসলে কিনিনি। অনেকেই হয়ত ১/২/৩ মাস  কিংবা বছরের মজুতও করে ফেলেছেন। আবার অনেকের পক্ষেই ২ সপ্তাহের বেশি মজুত করা  হয়ত কোন অসাধ্য সাধনের মতই দুরূহ কিছু।কাজেই আমাদেরকে আসলে লজিক্যাল চিন্তা করতে হবে। চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে চিলের পেছনে না দৌড়ে, নিজের কমন সেন্সটাকে  ব্যবহার করতে হবে।

আমাদের কিন্তু  শুকরিয়া করা উচিৎ কারণ আমরা এমন একটা দেশে আছি যেখানে আশা করা যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারি ভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে যথাযথ ভাবে। আমাদের অনেক ডাক্তার ভাইয়া এবং আপুরা তাদের সাধ্যমত সংক্রামণ রোধের পরামর্শ দিচ্ছেন। সরকারিভাবে যেসব ঘোষণা আসছে আমরা সেগুলির আপডেট জেনে সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারছি।
তবে একটা জিনিশ আমাদের সবার মাথায় রাখা জরুরি যে এই দুনিয়াতে আমরা এসেছি অল্প কিছুদিনের জন্য। এখানে আমাদেরকে নানান পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে সেটাই স্বাভাবিক। কখনো বিপদাপদ দিয়ে কখনো রোগ ব্যাধি দিয়ে আবার কখনো সন্তানসন্ততি,  ধনসম্পদ দিয়ে স্রস্টা আমাদের পরীক্ষা করেন।

আমি চেষ্টা করি যেকোন জিনিস করবার আগে আমার ধর্মগ্রন্থ কোরানে কি বলা আছে সেটার সাথে কমনসেন্স ব্যবহার করে পারিপার্শ্বিক অবস্থার ভিত্তিতে কাজ করতে। সুরা মুহাম্মদ পারা ২৬  এর ৩১ নাম্বার আয়াতে  বলা  হয়েছে “(হে  বিশ্বাসীগণ!) আমি অবশ্যই পরীক্ষা করব, যতক্ষণ পর্যন্ত পরিষ্কার বোঝা না যায় যে, তোমাদের মধ্যে কে কে জেহাদ করে ও প্রতিকূলতার মুখে ধৈর্যধারণ করে। তোমাদের (বিশ্বাসের ব্যাপারে সকল দ্বাবীর সত্যতা) আমি অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখব। “

আমরা  চাই বা না চাই আমাদের জীবনের যে যুদ্ধ, তাতে অংশ নিতে হয় কম বেশি সবাইকেই।যুগে যুগে কালে কালে নবী রাসুল মহামানবেরা এসেছেন আমাদেরকে এই যুদ্ধে জয়ী হবার পথপ্রদর্শক হয়ে। আমরা যেন সত্যের সরল পথ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে না যাই সে চেষ্টাই তারা করেছেন। বলবেন এই সময়ে এই কথা কেন বলছি। আসলে আমাদের জীবনের এইসব ছোট বড় বিপর্যয়, হাসি কান্না আনন্দ সব মিলিয়েই জীবন যুদ্ধ। স্রস্টা আমাদেরকে শুধু প্রার্থনা করতে বলেননি। বলেছেন কর্মময় প্রার্থনার কথা।প্রতিদিনের রোজনামচার মাঝেই স্রস্টাকে আমরা কতটা মনে করছি তাঁর নির্দেশ কতটা মানছি সেটাই দেখার বিষয়।

একটা গল্পের কথা মনে পড়ে গেল।
এক লোক স্রস্টার সন্তস্টি কিসে সেটা জানবার জন্য লোকালয় ছেড়ে জঙ্গলে চলে গেল। জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে দেখে একজন সাধু / বুজুর্গ নেতিয়ে যাওয়া একটি গাছের সামনে বসে চোখ বন্ধ করে ধ্যান /প্রার্থনা করছেন। লোকটি তখন সাধুকে জিজ্ঞেস করলেন তাঁর এমনটা করবার কারণ। তখন সেই বুজুর্গ  ব্যাখ্যা করে বললেন যে স্রস্টার সন্তস্টি হলে এই মরা গাছে পরান ফিরে আসবে। এই কথা শুনে সেই লোকটি নিজে আরেকটি মরা গাছে নিয়ে ধ্যানে বসে গেলেন।  এভাবে দিন যায় মাস যায় গাছে আর স্টেজ হয়না। একদিন জঙ্গলের রাস্তা থেকে একটা আজব শব্দ আসছিল। বারবার ধ্যান ভঙ্গ হচ্ছিল দেখে বুজুর্গ বললেন তুমি ধ্যনে মগ্ন থাকো নাহলে স্রস্টার সন্তস্টি হবে না। কিন্তু  অন্য লোকটি কিছুতেই আর চুপ থাকতে পারল না। উঠে গিয়ে দেখে এক কাফেলা যাচ্ছিল তাদের একজনের উটের পা কাদায় আটকে গেছে। উট চালক অনেক চেষ্টা করছে উটের পা কাদা থেকে উঠানোর। দেরি হচ্ছে দেখে কাফেলা তাকে রেখেই চলে গেছে। তখন ধ্যান রত লোকটা গিয়ে উটের পা কাদা থেকে উঠাতে সাহায্য করলেন। ওই ব্যক্তি তাকে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে চলে গেল। এরপর যখন লোকটা তাঁর গাছের সামনে এল পুনরায় ধ্যান শুরু করতে তখন দেখলেন তাঁর মরা গাছটি তরতাজা হয়ে উঠেছে। সাথে সাথেই তিনি বুঝলেন আসলে জংগলে বসে শুধু একা প্রার্থনা স্রস্টার সন্তস্টি আসতে পারে না। লোকটা তাঁর নিজ গ্রামে ফিরে গেলেন মানুষের কল্যাণে কাজ করবার জন্য।

ধরে নেই আমরা এখন এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি সেটা আসলে আমাদের একার না সকলের লড়াই। মানুষের মনুষ্যত্বের লড়াই হয়ত এই লড়াই আমাদের পরীক্ষার কোন অংশ।

সুরা আলে ইমরান পারা ৩-৪, আয়াত ১৭২  এ বলা হয়েছে:
“বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়েও যারা আল্লাহ ও রসুলের ডাকে সাড়া দিয়েছে, তাদের মধ্যে যারা সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ- সচেতনতার সাথে চলে তাদের জন্য মহাপ্রস্কার অপেক্ষা করছে।”

আসুন আমরা প্যানিকড না হয়ে নিজের বিচার বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে মমতা ভালোবাসা সমমর্মীতা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করি। আমরা যদি বিশ্বাস করি যে রিযিকের মালিক একমাত্র স্রস্টা তাহলে অহেতুক প্যানিকড হবার কিছু নাই। স্রস্টার উপর বিশ্বাস আর সেই সাথে বিচার বিবেচনা করে কাজ করা ও নিজেদেরকে সাবধানে রাখা ছাড়া আর কোনকিছুই করার নাই। করে কোন লাভও হবে না।

আমরা এভাবে কি ভেবে দেখেছি যে আধুনিক  সভ্যতার ছোঁয়া লাগবার আগে মানুষ প্রকৃতির কাছাকাছি ছিল। প্রাকৃতিক নিয়মে সে যুগেও মানুষ সন্তান ভূমিস্ট করেছে, জীবন জীবিকা সবই চলেছে। আমরা হয়ত কিছু জিনিসে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তবে দরকার হলে আমরা কি প্রাকৃতিক জীবনাচারে ফিরতে পারব না? আমাদের কিছু অভ্যাস কিছু খাবার পরিবর্তন পরিমার্জন করে নিলেই হল। আমি বলছিনা যে এমনটা হবে। আমি শুধু বলতে চাচ্ছি, নাথিং ইজ দা এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড।
যেকোন পরিবেশ পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেবার ক্যপাবিলিটি দিয়েই স্রস্টা আমাদের সৃষ্টি করেছেন।

সুরা আলে ইমরান  পারা ৩-৪, আয়াত ১৮৫  তে   বলা হয়েছে:
“প্রতিটি প্রানকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। মহাবিচার দিবসে তোমাদের সবাইকেই কর্মফল পুরোপুরিই দেয়া হবে। সফল মানুষ হবে সে-ই, যাকে লেলিহান আগুন থেকে দুরে রাখা হবে এবং জান্নাতে দাখিল করা হবে। আর শুধু পার্থিব জীবন তাও এক মরীচিকাপূর্ণ ভোগ-বিভ্রম ছাড়া কিছুই নয়।”

মৃত্যু এলে সেটা কেউ ঠেকাতে পারবে না। তবে আমাদের কারণে যেন অন্যরা সমস্যায় না পড়েন সেটাও ভাবতে হবে আমাদেরকেই। সেটাই আমাদের পরীক্ষা। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করতে পারি। বাকিটা স্রস্টার হাতে। তিনিই ভালো জানেন আমাদের কিসে মঙ্গল কিসে অমঙ্গল।

আসলে আমি এখানে কি করনীয় কি বর্জনীয় নিয়ে আলোচনা করতে আসিনি। যারা এই ব্যাপারে এক্সপার্ট তারা সে ব্যপারে বলছেন/ বলবেন। আমি শুধু বলতে চাই যাই ঘটুক যাই আসুক সামনে স্রস্টার উপর অটল বিশ্বাস আর ধৈর্যের সাথে তাকে মোকাবেলা করতে হবে।

কোভিড ১৯  ভাইরাস সংক্রমণ রোধেঃ 
হেলথ কেয়ার প্রফেশনালরা অনেকবার বলেছেন। সরকারি ভাবে অনেক ঘোষণা হয়েছে। আমাদের বাংলাদেশি অনেক ডাক্তার যারা অস্ট্রেলিয়াতে কর্মরত রয়েছেন তাদের অনেকেই নিজস্ব দ্বায়িত্ববোধের জায়গা থেকে অনেক ইনফরমেটিভ পোস্ট দিচ্ছেন।
সেগুলির উপর ভিত্তি করে কিছু জিনিস  আমি আবারো বলছি শুধু যেগুলি নিয়ে আমার মনে হয়েছে যে আমাদের সবার একটু ভাবার দরকার আছে।

পণ্যের জন্য গ্রেসারি শপে মানুষের ভীড়।

ঘরে বাইরেঃ 
·      পারসোনাল হাইজিন  এমনভাবে  মেইন্টেইন করা যে  শুধু এখন না সব সময় এই প্রাকটিস আমরা করতে পারি বা রাখতে পারি।
·      সর্দি কাশি কিংবা ফ্লু সিম্পটম দেখলেই করোনা আতংকে আতঙ্কিত না হয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যেমনটা হেলথ কেয়ার প্রফেশনালরা বলছেন।
·      অহেতুক বাহাদুরি দেখিয়ে অন্যের সাথে হাত মেলান থেকে বিরত থাকা।
·      আরে দুর… কিছু হবে না এমন মন মানসিকতা বর্জন করে নিজেকে এবং অন্যকে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষায় সচেষ্ট থাকা।
·      স্রস্টার উপর ভরসা রাখা তবে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন বন্ধ করে নয়।

খাদ্য গ্রহণে: 
·      সুশম খাবার  গ্রহণ যতটা সম্ভব।
·      প্রচুর পানি পান করা। সকালে খালি পেটে ২/৩ গ্লাস  পানি শরীরের অনেক সমস্যার সমাধান করে।
·      আর  সম্ভব হলে  প্রতিদিন রসুন এবং কালো জিরা ভর্তা খাদ্য তালিকাতে রাখা যেতে পারে। রসুন ন্যাচারাল ইমিউন বুস্টার আর কালোজিরার কথা বলে শেষ শেষ করা যাবে না। এটি মৃত্যু ছাড়া সর্ব রোগের প্রতিষেধক।

শপিং এর ক্ষেত্রেঃ
·      অহেতুক প্যানিকড না  হয়ে  প্রয়োজনীয়  জিনিশ গুলি কিনে রাখা। যাদের ছোট বাচ্চা আছে তারা হয়ত বাচ্চাদের জিনিশ গুলি কিছুদিনের টা একসাথে কিনে নিতে পারেন।
·      অস্ট্রেলিয়ার রিটেইল শপ গুলি চেষ্টা করছে সবার জন্য যেন সমান না হলে কিছু বরাদ্দ কিভাবে করা যায়।
·      এমনও তো হতে পারে যেমন আকস্মিক ভাবে এই ভাইরাসের আগমন তেমন হঠাৎ গায়েব! স্রস্টার অসাধ্য কিছুই নেই। তাই প্রার্থনা আর ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা (নিজের সাবধানতা বজায় রেখে) ছাড়া আমাদের আর কি করবার আছে।
·      অনেক সময় আমরা দেখছি যে কোথাও কোথাও মারা মারি হচ্ছে। একটু লজিক দিয়ে যদি ভেবে দেখি তাহলে দেখা যাবে এগুলি আসলে ফর নাথিং। আর অনেক ভিডিও যেগুলি আসলে অনেক আগের কিন্তু এখন মানুষের অবিবেচিত শেয়ারের কারণে সেগুলি অনেকের জন্য আতংকের কারণ হচ্ছে।
·      তাই বার বার বলছি মাথা ঠাণ্ডা রেখে পরিস্থিতি মুকাবেলা করতে হবে আমাদের।

পারস্পরিক মমত্ববোধঃ
·      আমার  খারাপ হয়েছে দেখে অন্যদের ও যেন খারাপ হয় এমন মন মানসিকতা আমাদেরকে আসলে কোথাও নিতে পারবে না।
·      অন্যরা হয়ত বেশি কিনেছে আমি হয়ত একটা পাইনি। এমন পরিস্থিতিতেও যদি আমরা বলতে পারি শোকরালহামদুলিল্লাহ তাহলেই আমরা নিজেদেরকে আশরাফুল মাখলুকাত বলতে পারি। জানি কঠিন তবু চেষ্টাতো করতেই পারি।
·      ধর্ম বর্ণ জাতি গোত্র নির্বিশেষে  মানুষের কল্যাণ কামনাই আমাদের কাম্য।  কারণ সবাই আমরা এক স্রস্টারই সৃষ্টি।
·      হেলথ কেয়ার প্রফেশনাল / রিটেইল অ্যাসিস্ট্যান্ট/ গভর্নমেন্ট অফিশিয়ালস এরা প্রত্যেকেই তাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছেন। আমরা শুধু আমাদের নিজেদের নিয়ে ভাবছি কিন্তু তারা আমাদের সবাইকে নিয়ে ভাবছেন। তাই তাদের প্রতি সহানুভবতা পোষণ করা এমনকি মনে মনেও খারাপ না ভাবা। মনে মনে ভাবা আমাদের কথা গুলি কিন্তু মানুষের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন/ অবনতির জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। কাজেই মনেমনেও আমরা সবার জন্য ভালো চিন্তা করব।

হোম কোয়ারেন্টাইন থাকাকালীনঃ
·      আল্লাহ না করুন যদি এমন পরিস্থিতি আসে কখনো যে ঘর থেকে বের হওয়া বারন। তবে অহেতুক দুশ্চিন্তা না করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাগুলি সভাবাবিক ভাবে পালন করা
·      এক্ষেত্রে আমরা বাড়িতে বসে কোরানের বাংলা অর্থসহ বুঝবার চেষ্টা করতে পারি।
·      পরিবারের সবাই একসাথে কোয়ারেন্টাইন এ থাকলে টেকনলজি বর্জন করে পরিবারের  জন্য সময় বের করতে পারি।
·      যার যার ধর্ম বিশ্বাস অনুসারে স্রস্টার কাছে প্রার্থনা করতে পারি।

মনকে প্রশান্ত করতে মেডিটেশন / রিয়ালাইজেশনঃ
চারদিকে  এত অস্থিরতার  মাঝে  নিজের মনকে স্থির রাখা অনেকের জন্যই কঠিন।
সুরা কলম পারা ২৯  আয়াত  ১০- ১৫  তে  বলা হয়েছে
হে নবী! তুমি কখনো এমন কাউকে অনুসরণ কোরো না; (এক) যে কথায় কথায় শপথ করে, (দুই) যে সন্মানহীন, (তিন) যে পেছনে নিন্দা করে, (চার) যে একের কথা অন্যের কাছে লাগায়, (পাঁচ) যে ভালো কাজে বাধা দেয়, (ছয়) যে অত্যাচারী, (সাত) যে পাপাচারী, (আট) যে বদমেজাজি , (নয়) যে অজ্ঞাতকুলশীল। ধনেজনে শক্তিমান বলেই ওকে অনুসরণ কোরো  না। ওর কাছে আমার সত্যবানী শোনালে বলে, ‘এ-তো সেকেলে কল্পকাহিনী।’

কাজেই আমাদের মেজাজটা কন্ট্রলে রাখতে হবে, অত্যাচারী কিংবা পাপাচারী হতে আমরা চাই না। বেশি প্যানিকড হয়ে গেলে  রিলাক্সেশন প্রাকটিস করতে পারেন।
এমন সময় আমরা
·      প্রতিদিন  সকালে প্রাণায়াম চর্চা করতে পারি।
প্রাণায়াম কিভাবে করবেন
·      মেডিটেশন চর্চা করতে পারি।
·      আর মনে মনে সবসময় পজেটিভ চিন্তা রাখা  পজেটিভ ভাবনা ভাবা সে ইনশাল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।
চলুন  যার যার ধর্ম বিশ্বাসের যায়গা থেকে  প্রাথনা করি আমাদেরকে যেন স্রস্টা   সকল বালা মসিবত থেকে মুক্ত করে দেন। আমাদের সবার মোরালিটি কে জাগ্রত করে দেন। পরীক্ষা যেহেতু তিনিই দিয়েছেন পাশ করাবার দবায়ভারও তাঁর। কাজেই আমরা আমাদের সাধ্যমত যেটুকু সম্ভব  যে যার অবস্থান থেকে সেটুকুই করি। বাকিটা ছেড়ে দেই স্রস্টার হাতে।  পৃথিবীর যে প্রান্তেই আমাদের বসবাস হোক না কেন আমরা সবাই সবার জন্য প্রার্থনা করব। স্রস্টা যেন আমাদেরকে সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার তৌফিক দান করেন। ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সকলের কল্যাণ করেন।

তানজিলা মিম
কাউন্সিলর, মালটি লিঙ্গুয়াল ক্যাফে
কনভেনর, কোয়ান্টাম মেডিটেশন সোসাইটি মেলবোর্ন এফিলিয়েশন
অফ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, মেলবোর্ন অস্ট্রেলিয়া।
ইমেল: proshantika@gmail.com

 

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments